কোথাও স্বপ্নাদেশ পেয়ে, আবার কোথাও বাসিন্দাদের উৎসাহে খনি ও শিল্পাঞ্চলে শুরু হওয়া কার্তিক পুজো এ বারও হচ্ছে জাঁকজমকের সঙ্গে।
পাণ্ডবেশ্বরের বাজারিয়া গ্রামে পালবাড়ির পুজো শুরু হয়েছিল ১১৭ বছর আগে। পাল পরিবারের সদস্য শিশির পাল জানান, তাঁদের পূর্বপুরুষ সৃষ্টিধর পাল এই পুজো শুরু করেছিলেন। এখন পারিবারিক শরিকরা ছোট বাড়ি ও বড় বাড়িতে বিভক্ত। তাঁরা এক বছর অন্তর পালা করে পুজো করেন। এ বার পুজোর দায়িত্ব পড়েছে ছোট বাড়ির। রয়েছে পঙ্তিভোজের ব্যবস্থা। জামুড়িয়ার চিচুড়িয়া গ্রামের বন্দ্যোপাধ্যায় বাড়ির পুজো এ বার দেড়শো বছরে পড়ল। পরিবারের সদস্যরা জানান, গঙ্গাধর বন্দ্যোপাধ্যায় এই পুজো শুরু করেন। জামুড়িয়ার নন্ডিগ্রামে বন্দ্যোপাধ্যায়ের পুজোর বয়স প্রায় দু’শো বছর। এই বাড়ির প্রবীন সদস্য আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আমাদের পূর্বপুরুষ শ্যামচাঁদবাবু কাটোয়ার দাঁইহাট থেকে নন্ডিগ্রামে বিয়ে করে শ্বশুরবাড়ির গ্রামে থেকে যান। তার পর তিনি দাঁইহাট থেকে পারিবারিক কার্তিক পুজো নন্ডিগ্রামে নিয়ে আসেন। সেই থেকে পুজো চলছে।” অন্ডাল গ্রামে নায়েক বাড়ির পুজোর বয়স দুশো বছর অতিক্রান্ত। পারিবারিক পুজো হলেও এই পুজোয় স্থানীয় বাসিন্দাদের উপস্থিতি থাকে চোখে পড়ার মত। নায়েক বাড়ির সদস্য লালবাহাদুর নায়েক জানান, তাঁদের পূর্বপুরুষ কার্তিক চন্দ্র এই পুজো শুরু করেছিলেন। পাণ্ডবেশ্বরের নবগ্রামে মুখোপাধ্যায় বাড়ির পুজো তুলনায় নবীন। প্রয়াত উদয় মুখোপাধ্যায় প্রায় ৬০ বছর আগে শুরু করেছিলেন। বন্দ্যোপাধ্যায় পরিবারের সদস্য আনন্দগোপাল মুখোপাধ্যায় জানান, পুত্রসন্তানের আশাতেই উদয়বাবু এই পুজো শুরু করেছিলেন। এলাকাবাসী এই পুজোতে পুষ্পাঞ্জলি দিতে আসেন। বক্তারনগরের মণ্ডল বাড়ি ও বল্লভপুরের পাল বাড়ির পুজো শতবর্ষ প্রাচীন। মণ্ডলবাড়ির সদস্য ভগবানবাবু জানান, প্রায় ১২০ বছর আগে এই পুজো শুরু হয়েছিল। পাল বাড়ির সদস্য অরুনবাবু জানান, এক বছর দুর্গাপুজোর পর তাঁদের বাড়ির সামনে কার্তিকের মূর্তি রাখা ছিল। সেই থেকেই তাঁদের বাড়িতে কার্তিক পুজো শুরু হয়।
পারিবারিক পুজো সংখ্যায় বেশি হলেও শিল্পাঞ্চলে কয়েকটি সর্বজনীন কার্তিক পুজোও হয়। তার মধ্যে অন্যতম হল রানিগঞ্জের কুমারবাজারের ফ্রেন্ডস ইউনাইটেড ক্লাবের পুজো। এই পুজোর বয়স ৭ বছর। ক্লাব সদস্য শীতল রায় জানান, এলাকাবাসীর চাহিদায় শুরু হওয়া এই পুজো জনপ্রিয় উৎসবের চেহারা নিয়েছে।