Advertisement
০৩ মে ২০২৪

চেকে সই ও অঙ্ক পাল্টে প্রতারণার অভিযোগ

সাড়ে ন’শো টাকার চেক ভাঙিয়ে তুলে নেওয়া হয়েছে প্রায় চার লক্ষ টাকা। দুর্গাপুরের একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের এক গ্রাহক এ ভাবে প্রতারিত হয়েছেন বলে পুলিশে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। চেকে গ্রাহকের সই ও টাকার পরিমাণ বদলে ওই প্রতারক দুষ্কর্ম করেছে বলে প্রাথমিক ভাবে পুলিশের ধারণা। আসানসোল-দুর্গাপুর কমিশনারেটের এডিসিপি (পূর্ব) সুনীল যাদব জানান, ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ২৫ অক্টোবর ২০১৪ ০১:০৫
Share: Save:

সাড়ে ন’শো টাকার চেক ভাঙিয়ে তুলে নেওয়া হয়েছে প্রায় চার লক্ষ টাকা। দুর্গাপুরের একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের এক গ্রাহক এ ভাবে প্রতারিত হয়েছেন বলে পুলিশে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। চেকে গ্রাহকের সই ও টাকার পরিমাণ বদলে ওই প্রতারক দুষ্কর্ম করেছে বলে প্রাথমিক ভাবে পুলিশের ধারণা। আসানসোল-দুর্গাপুর কমিশনারেটের এডিসিপি (পূর্ব) সুনীল যাদব জানান, ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।

ভিড়িঙ্গির বাসিন্দা প্রণব রায় জানান, একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের বেনাচিতি শাখায় তাঁর সেভিংস অ্যাকাউন্ট রয়েছে। বুধবার তিনি দুর্গাপুর থানায় অভিযোগ করেন, সে দিন বিকেলে ওই অ্যাকাউন্ট থেকে ৩ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে। তিনি জানান, একটি বেসরকারি ব্যাঙ্কের ক্রেডিট কার্ড শাখার পক্ষ থেকে অগস্টের শুরুতে একটি ফোন পান তিনি। তাঁকে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়, ক্রেডিট কার্ডের সীমা ২০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত এবং দরকারে তিনি নগদ টাকাও তুলতে পারবেন কার্ডটি ব্যবহার করে। তিনি কার্ড নিতে রাজি হওয়ায় ১১ অগস্ট এক জন আসেন। পরিচয় দেন অ্যালেক্স অ্যান্টনি ডি সুজা। ফর্ম পূরণ করার পরে দু’টি সাড়ে ন’শো টাকার অগ্রিম চেক দিতে বলেন সেই ব্যক্তি। প্রণববাবু তা দিয়ে দেন। প্রণববাবু জানান, বুধবার দুপুরে একটি ফোন পান তিনি। মহিলা কণ্ঠ প্রথমে তাঁকে জিজ্ঞাসা করে, তিনি দুর্গাপুরে আছেন কি না। এর পরে তাঁকে বলা হয়, দ্রুত ক্রেডিট কার্ড ডাকযোগে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। এর কিছুক্ষণ পরেই তিনি মোবাইলে এসএমএস পান, তাঁর আমানত থেকে ৩ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে। প্রণববাবু ছুটে যান ব্যাঙ্কে। ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ জানান, ওই ব্যাঙ্কেরই মুম্বইয়ের বোরিভালি এলাকার একটি শাখায় অ্যালেক্স অ্যান্টনি ডি সুজা নামে এক জনের অ্যাকাউন্টে টাকা জমা পড়েছে। তিনি যে দু’টি চেক দিয়েছিলেন, তারই একটি ব্যবহার করে টাকা সরানো হয়েছে। এর পরেই তিনি পুলিশে লিখিত অভিযোগ করেন।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, অভিযোগ পাওয়ার পরেই তারা ওই রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে যোগাযোগ করে। ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ জানান, গ্রাহকের কাছ থেকে লিখিত অভিযোগ পেয়ে ইতিমধ্যে মুম্বইয়ের ওই অ্যাকাউন্টটি তাঁরা ‘ব্লক’ করে দিয়েছেন। ফলে, ওই অ্যাকাউন্ট থেকে লেনদেন বন্ধ হয়ে গিয়েছে। ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ আরও জানান, টাকা সরিয়ে নেওয়ার পরে ওই অ্যাকাউন্ট থেকে এটিএম ব্যবহার করে ২০ হাজার টাকা এবং ব্যাঙ্ক থেকে আরও ৫০ হাজার টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে। প্রণববাবুর বাকি ৩ লক্ষ ১০ হাজার টাকা রয়েছে ওই অ্যাকাউন্টে। কী ভাবে সেই টাকা প্রণববাবুর আমানতে ফিরিয়ে দেওয়া যায় সে ব্যাপারে তাঁরা সচেষ্ট হবেন বলে জানান ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ। পুলিশ জানায়, সাইবার ক্রাইম শাখার কাছে এই ধরনের একাধিক অভিযোগ জমা পড়েছে। সাইবার শাখার সঙ্গে যুক্ত এক পুলিশ আধিকারিক জানান, লেসার গান জাতীয় কিছু ব্যবহার করে চেকের উপরে হাতের লেখা মুছে নতুন করে প্রাপক ও টাকার পরিমাণ লিখে জালিয়াতি করা হচ্ছে। এডিসিপি (পূর্ব) সুনীল যাদব জানান, ব্যাঙ্কের কাছ থেকে মুম্বইয়ের বোরিভালি এলাকায় অভিযুক্তের ঠিকানা এবং প্যান কার্ড নম্বর জোগাড় করা হয়েছে। তা আসল না নকল তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। প্রয়োজন হলে সাইবার অপরাধ শাখার সাহায্য নেওয়া হবে বলে জানান এডিসিপি (পূর্ব)।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

durgapur fraud cheque
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE