Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

চার বছর পার, হাত পড়েনি শেল গ্যাস তোলার কাজে

খোঁড়াখুঁড়ি করতে গিয়ে খোঁজ মিলেছিল বছর চারেক আগে। জানা গিয়েছিল বিপুল সম্ভাবনার কথা। কোনও প্রকল্প হলে এলাকার উন্নয়ন হবে, এই আশায় বুক বেঁধেছিলেন স্থানীয় মানুষজন। কিন্তু দুর্গাপুর শহরের অদূরে সন্ধান মেলা ‘শেল গ্যাস’ বাণিজ্যিক ভাবে উত্তোলনের জন্য কোনও উদ্যোগ হয়নি এখনও। এলাকার সাংসদ বাবুল সুপ্রিয়ের জানান, বিষয়টি বাসিন্দাদের কাছ থেকে তিনি জেনেছেন।

ইছাপুরে সেই এলাকা। ছবি: বিশ্বনাথ মশান।

ইছাপুরে সেই এলাকা। ছবি: বিশ্বনাথ মশান।

সুব্রত সীট
দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ২৫ মার্চ ২০১৫ ০১:০৩
Share: Save:

খোঁড়াখুঁড়ি করতে গিয়ে খোঁজ মিলেছিল বছর চারেক আগে। জানা গিয়েছিল বিপুল সম্ভাবনার কথা। কোনও প্রকল্প হলে এলাকার উন্নয়ন হবে, এই আশায় বুক বেঁধেছিলেন স্থানীয় মানুষজন। কিন্তু দুর্গাপুর শহরের অদূরে সন্ধান মেলা ‘শেল গ্যাস’ বাণিজ্যিক ভাবে উত্তোলনের জন্য কোনও উদ্যোগ হয়নি এখনও। এলাকার সাংসদ বাবুল সুপ্রিয়ের জানান, বিষয়টি বাসিন্দাদের কাছ থেকে তিনি জেনেছেন। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।

প্রাকৃতিক গ্যাসের সন্ধানে ২০০৬ সালে ইছাপুরে খননকাজ শুরু করতে উদ্যোগী হয় ওএনজিসি। একটি বেসরকারি সংস্থাকে তারা এই কাজের দায়িত্ব দেয়। প্রাথমিক ভাবে কোল বেসড মিথেন (সিবিএম) মেলে। পরে খোঁজ মেলে শেল গ্যাসের (বিশেষ ধরনের প্রাকৃতিক গ্যাস যা হাইড্রোকার্বনের সংমিশ্রণ)। ওএনজিসি-র তৎকালীন ডিরেক্টর ডি কে পাণ্ডে এসে খননকাজের সূচনা করে যান। ২০১০-এ খনন কাজে গতিও আসে। ২০১১ সালে সংস্থা ঘোষণা করে, এশিয়ার প্রথম শেল গ্যাসের ভাণ্ডারের খোঁজ পাওয়া গিয়েছে দুর্গাপুরে। কিন্তু তার পরে কেটে গিয়েছে প্রায় চার বছর। প্রকল্পের কোনও অগ্রগতি হয়নি বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর।

ওওনজিসি সূত্রে জানা গিয়েছে, আমেরিকায় শেল গ্যাস ব্যবহার শুরু হওয়ায় জ্বালানি খরচ কমে গিয়েছে অনেকটা। দুর্গাপুরে এই গ্যাস রয়েছে মাটির প্রায় ২০০০ মিটার গভীরে। প্রায় ১২০০ বর্গ কিলোমিটার জুড়ে কঠিন পাথরের স্তরের নীচে রয়েছে এই ভাণ্ডার। ওএনজিসি প্রাকৃতিক গ্যাসের সন্ধান পাওয়ার পরে বাণিজ্যিক ভাবে তা উত্তোলনের জন্য নিলাম ডাকে কেন্দ্রীয় সরকার। আসানসোল-দুর্গাপুরে সিবিএম উত্তোলনের দায়িত্ব পেয়েছে দু’টি বেসরকারি সংস্থা। কিন্তু এখনও পর্যন্ত শেল গ্যাস উত্তোলনের জন্য তেমন কোনও নিলাম ডাকা হয়নি। শুধু দুর্গাপুর নয়, দেশের আরও কয়েকটি জায়গায় শেল গ্যাসের খোঁজ মিললেও কোথাও বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু করা যায়নি।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, শেল গ্যাসের খোঁজ প্রথম যখন পাওয়ার কথা ঘোষণা করে ওএনজিসি, এলাকা জুড়ে খুশির হাওয়া ছড়িয়ে পড়েছিল। বেকারদের কর্মসংস্থানের পাশাপাশি এলাকার আর্থিক পরিস্থিতিও বদলে যাওয়ার স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছিলেন তাঁরা। প্রাথমিক ভাবে শ’খানেক বাসিন্দা ঠিকাকর্মীর কাজও পেয়েছিলেন। কিন্তু কয়েক বছর খোঁড়াখুঁড়ির পরে সব থমকে যায়। এক সময় যন্ত্রপাতিও সরিয়ে ফেলে খননকাজের দায়িত্বে থাকা বেসরকারি সংস্থা। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, অনেক পরে শুরু করেও সিবিএম তোলার দায়িত্বপ্রাপ্ত একটি সংস্থা লাগোয়া এলাকা জুড়ে বহু কুয়ো খুঁড়ে ফেলেছে। পেতেছে পাইপলাইনও। অথচ, বছরের পর বছর কেটে গেলেও শেল গ্যাস নিয়ে কোনও অগ্রগতি হয়নি।

দুর্গাপুরের এই এলাকা আসানসোল লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যে পড়ে। বিজেপি সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় নগরোন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয় জানান, এই বিষয়টি তিনি জেনেছেন। কেন্দ্রীয় শক্তি, কয়লা ও অচিরাচরিত শক্তি মন্ত্রী পীযূষ গোয়েলের কাছে এ নিয়ে দরবারের আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

shell gas durgapur subrata shit
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE