Advertisement
E-Paper

তৈরি হয়নি শৌচাগার, টাকা ফেরতের নির্দেশ

কোথাও বছরের পর বছর ধরে টাকা পড়ে থাকলেও মহিলাদের শৌচাগার তৈরিতে আগ্রহ দেখায়নি স্কুল, আবার কোথাও জায়গার অভাবে শৌচাগার নির্মাণের কাজ পড়ে তিমিরে। তবে এ বার ওই টাকা ফিরিয়ে নিতে কোমর বেঁধে নেমেছে সর্বশিক্ষা মিশন। সর্বশিক্ষা অভিযানের বর্ধমান জেলার চেয়ারম্যান তথা জেলাশাসক সৌমিত্র মোহন গত মঙ্গলবার প্রত্যেক মহকুমাশাসককে চিঠি দিয়ে ওই স্কুলগুলির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।

সৌমেন দত্ত

শেষ আপডেট: ০৯ অগস্ট ২০১৪ ০২:৫৪

কোথাও বছরের পর বছর ধরে টাকা পড়ে থাকলেও মহিলাদের শৌচাগার তৈরিতে আগ্রহ দেখায়নি স্কুল, আবার কোথাও জায়গার অভাবে শৌচাগার নির্মাণের কাজ পড়ে তিমিরে। তবে এ বার ওই টাকা ফিরিয়ে নিতে কোমর বেঁধে নেমেছে সর্বশিক্ষা মিশন।

সর্বশিক্ষা অভিযানের বর্ধমান জেলার চেয়ারম্যান তথা জেলাশাসক সৌমিত্র মোহন গত মঙ্গলবার প্রত্যেক মহকুমাশাসককে চিঠি দিয়ে ওই স্কুলগুলির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। সর্বশিক্ষা মিশনের বর্ধমানের জেলা প্রকল্প আধিকারিক ভাস্কর পাল বলেন, “১৫ অগস্টের মধ্যে ওই স্কুলগুলি মহিলাদের জন্য শৌচাগার তৈরির কাজ শুরু না করলে আমরা টাকা ফেরত নিয়ে নেব। তারপর ওই সব স্কুলের প্রধান শিক্ষক বা শিক্ষিকার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য শিক্ষা দফতরকে চিঠি দেব।”

সর্বশিক্ষা মিশন সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলার বহু প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের স্কুলকে মহিলাদের শৌচাগার তৈরির জন্য টাকা দেওয়া হয়। অধিকাংশ স্কুলই ৬২ হাজার টাকা করে বরাদ্দ পায়। তবে কয়েকটি স্কুলে বরাদ্দের পরিমাণ ছিল ৩২ হাজার ৫০০ টাকা। তবে টাকা মেলার পরেও স্কুলগুলি শৌচাগার তৈরির ব্যাপারে কোনও উদ্যোগ করেনি বলে অভিযোগ। সম্প্রতি সর্বশিক্ষা মিশনের ফিল্ড জুনিয়র ইঞ্জিনিয়র আধিকারিকেরা ওই স্কুলগুলি পরিদর্শনে যান। তাঁদের রিপোর্ট অনুযায়ী, পুরসভা এলাকায় জায়গার অভাবে বেশ কিছু স্কুল শৌচাগার তৈরি করতে পারেনি। আবার অভ্যন্তরীণ গোলমালেও বেশ কিছু স্কুল মহিলাদের শৌচাগার তৈরির কাজ করেনি। অনেকে আবার স্রেফ সদিচ্ছার অভাবে কাজে হাত দেয়নি বলেও জানা গিয়েছে।

ভাস্করবাবু বলেন, “জায়গার অভাব নেই, অথচ শৌচাগার তৈরির কাজ শুরু করেনি এ রকম ১১৫টি স্কুলকে আমরা চিহ্নিত করেছি। যার মধ্যে আসানসোল ও কুলটি পুরসভাতেই ৫০-এর কাছাকাছি স্কুল রয়েছে।” এছাড়া আসানসোল মহকুমায় ১৮টি, দুর্গাপুর মহকুমায় ১১টি, কালনা মহকুমায় ৬টি, কাটোয়া মহকুমায় ৭টি, ও বর্ধমান উত্তরে ২৪টি স্কুলেও শৌচাগার তৈরি হয়নি বলে সর্বশিক্ষা অভিযান সূত্রে জানা গিয়েছে। মহকুমাশাসকদের হাতে ওই তালিকা তুলে দিয়ে জেলাশাসক জানিয়েছেন, দীর্ঘদিন ধরে টাকাগুলি স্কুলে পড়ে রয়েছে। কী কারণে শৌচাগার তৈরি করা হয়নি তা দেখা দরকার। আর স্কুলগুলি শৌচাগার তৈরি করতে অপারগ হলে টাকা ফেরত নিতে হবে বলেও জানান তিনি। ওই তালিকা অনুযায়ী, কাটোয়ার কেশিয়া এফ পি স্কুল শৌচাগার তৈরির জন্য ২০০৮-০৯ অর্থ বর্ষে টাকা পেয়েছিল, রানিগঞ্জের জুনিয়ার বেসিক স্কুল আবার ২০০৯-১০ সালে বরাদ্দ টাকা পায়। সর্বশিক্ষা মিশনের এক কর্তার দাবি, “বেশিরভাগ স্কুলেই একটি করে শৌচাগার থাকায় প্রধান শিক্ষক বা স্কুল শিক্ষা কমিটি শৌচাগার তৈরির ব্যাপারে আগ্রহী হয়নি। বরং ওই টাকা সেভিংস অ্যাকাউন্টে রেখে মাসের পর মাস সুদ নিয়েছেন, যা বেআইনি।”

কিন্তু কী বলছেন ওই স্কুলগুলির শিক্ষকেরা? নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শিক্ষকদের একাংশ জানিয়েছেন, শৌচাগার তৈরির কাজ কে করবে তা নিয়ে শিক্ষক ও স্কুল শিক্ষা কমিটির মধ্যে সমস্যা রয়েছে। আবার ওই টাকায় শৌচাগার তৈরি করা যাবে না বলেও অনেক স্কুল কাজ করার ব্যাপারে আগ্রহ দেখায়নি।

তবে টাকা ফেরত যাওয়ার ‘হুমকি’তে স্কুলগুলি নড়েচড়ে বসবে বলেই মনে করছে প্রশাসনের কর্তারা।

১৫ অগস্টের মধ্যে স্কুলগুলি মহিলাদের জন্য শৌচাগার তৈরির
কাজ শুরু না করলে টাকা ফেরত নেওয়া হবে।
— ভাস্কর পাল, সর্বশিক্ষা মিশনের জেলা প্রকল্প আধিকারিক

ladies toilet return of money katwa
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy