Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

দুই তারে সংযোগে শর্ট সার্কিট, নষ্ট বহু জিনিস

উপর দিয়ে যাওয়া উচ্চ পরিবাহী বিদ্যুতের তার নীচের আর একটি বিদ্যুতের তারের উপরে ঝুলে পড়ার জেরে শর্ট সার্কিটে নষ্ট হল শ’খানেক বাড়ির বৈদ্যুতিন জিনিসপত্র। বিদ্যুত্‌স্পৃষ্ট হলেন এক মহিলা। রবিবার দুপুরে দুর্গাপুরের শঙ্করপুরে এই ঘটনার পরে এলাকা বিদ্যুত্‌হীন।

নষ্ট পাখা। রবিবার বিশ্বনাথ মশানের তোলা ছবি।

নষ্ট পাখা। রবিবার বিশ্বনাথ মশানের তোলা ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ১০ মার্চ ২০১৪ ০৩:২০
Share: Save:

উপর দিয়ে যাওয়া উচ্চ পরিবাহী বিদ্যুতের তার নীচের আর একটি বিদ্যুতের তারের উপরে ঝুলে পড়ার জেরে শর্ট সার্কিটে নষ্ট হল শ’খানেক বাড়ির বৈদ্যুতিন জিনিসপত্র। বিদ্যুত্‌স্পৃষ্ট হলেন এক মহিলা। রবিবার দুপুরে দুর্গাপুরের শঙ্করপুরে এই ঘটনার পরে এলাকা বিদ্যুত্‌হীন। কী ভাবে এমন ঘটল, খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছে রাজ্য বিদ্যুত্‌ বণ্টন কোম্পানি। ওই এলাকায় বিদ্যুত্‌ সরবরাহকারী সংস্থা ডিপিএল জানায়, বিদ্যুত্‌ সরবরাহ স্বাভাবিক হতে বেশ কয়েক ঘণ্টা লাগবে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন দুপুর সাড়ে ১২টা নাগাদ শঙ্করপুর মোড়ে হঠাত্‌ আগুনের ঝলকানি দেখতে পান এলাকার বাসিন্দারা। সঙ্গে জোরালো আওয়াজ ও ধোঁয়া। আশপাশের বাড়িতে একের পর এক পুড়তে থাকে বৈদ্যুতিন সামগ্রী। মাটিতে দাঁড়িয়ে থাকা এক বধূর বাঁ পা পুড়ে যায়। এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। বাসিন্দারা বাইরে বেরিয়ে দেখেন, রাজ্য বিদ্যুত্‌ বণ্টন সংস্থার একটি অত্যন্ত উচ্চ পরিবাহী তার ঝুলে পড়েছে ডিপিএলের কম ক্ষমতার পরিবাহী তারের উপরে। খবর যায় রাজ্য বিদ্যুত্‌ বণ্টন কোম্পানির স্থানীয় কার্যালয় এবং ডিপিএলে। দুই সংস্থা থেকে পরে আধিকারিকরা এসে পরিস্থিতি সরেজমিনে দেখে যান।

বিদ্যুতের মিটার।

স্থানীয় বাসিন্দা গোপাল দাস, নিমাইচন্দ্র দে-রা জানান, বাড়ির মিটার থেকে শুরু করে, আলো, পাখা, রেফ্রিজারেটরসব পুড়ে গিয়েছে। তাঁরা জানান, এলাকায় ট্রান্সফর্মারও পুড়ে গিয়েছে। নষ্ট হয়ে গিয়েছে বিদ্যুতের লাইনে থাকা ইনস্যুলেটর। ঘটনার সময়ে রান্নাঘরে ছিলেন মুকুল গড়াই। তিনি বলেন, “জানলা দিয়ে হঠাত্‌ চড়া আলো দেখতে পাই। সঙ্গে বিকট শব্দ। ধোঁয়া, পোড়া গন্ধ।” তিনি জানান, পাশের ঘরের মেঝেতে দাঁড়িয়ে থাকায় বিদ্যুস্পৃষ্ট হন তাঁর পুত্রবধূ বাসন্তী গড়াই। তাঁর বাঁ পা পুড়ে যায়। তাঁকে একটি নার্সিংহোমে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিত্‌সার পরে ছেড়ে দেওয়া হয়। স্থানীয় জেমুয়া পঞ্চায়েতের উপপ্রধান, পাশের বিবেকানন্দ পার্কের বাসিন্দা দুলাল দাস ঘটনাস্থলে যান। তিনি বলেন, “আচমকা এমন ঘটনায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েন বাসিন্দারা। ধীরে ধীরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।”

রাজ্য বিদ্যুত্‌ বণ্টন কোম্পানি সূত্রে জানা গিয়েছে, শঙ্করপুর মোড়ের উপর দিয়ে একটি এক লক্ষ ৩২ হাজার ভোল্টের উচ্চ পরিবাহী লাইন গিয়েছে। তার নীচ দিয়ে আড়াআড়ি ভাবে গিয়েছে ডিপিএলের গৃহস্থালী বিদ্যুত্‌ সংযোগের জন্য ১১ হাজার ভোল্টের লাইন। দু’টি লাইনের মাঝে পর্যাপ্ত ব্যবধান রয়েছে। এমন উপর-নীচ দিয়ে আড়াআড়ি ভাবে বহু জায়গাতেই বিদ্যুতের লাইন গিয়েছে। কিন্তু এ দিন শঙ্করপুর মোড়ে কোনও ভাবে অঘটন ঘটে যায়। বিদ্যুত্‌ বণ্টন কোম্পানির এক আধিকারিক জানান, উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন বিদ্যুত্‌ পরিবহণের জন্য অত্যন্ত মোটা ও ভারী তার ব্যবহার করতে হয়। দু’দিক থেকে সমান ভাবে লাইন টানটান রাখার ব্যবস্থা থাকে। কোনও ভাবে এক দিকের টান কমবেশি হয়ে যাওয়ায় এই বিপত্তি হয়েছে। কী ভাবে তা হল, খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ডিপিএল সূত্রে জানা গিয়েছে, লাইনের যা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা মেরামতি করে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে বেশ কয়েক ঘণ্টা লাগবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE