ফেরিঘাট ও খোঁয়াড়ের দরপত্র নিয়ে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব বাধল তৃণমূলে। জামুড়িয়ার চুরুলিয়ায় দলেরই পঞ্চায়েত প্রধানকে আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে হুমকি এবং পঞ্চায়েতের সচিব ও দরপত্র জমা দিতে আসা কয়েক জনকে মারধরের অভিযোগ উঠল তৃণমূলের একটি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে। পক্ষপাতের পাল্টা অভিযোগ উঠেছে পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে।
ঘটনার সূত্রপাত বুধবার দুপুরে। পঞ্চায়েত সূত্রে জানা গিয়েছে, সে দিন অজয়ের ফেরিঘাট ও খোঁয়াড়ের জন্য দরপত্র জমা দেওয়ার কাজ চলছিল। পঞ্চায়েত প্রধান পিন্টু মিশ্র অভিযোগ করেন, সেই সময়ে কামালউদ্দিন ও আব্দুল মান্নান নামে স্থানীয় দুই তৃণমূল কর্মী আচমকা পঞ্চায়েত অফিসে ঢুকে পড়ে। তারা চড়াও হয় দরপত্র জমা দিতে আসা নন্দ রুইদাস ও শেখ সালাই নামে দু’জনের উপরে। তাঁরাও এলাকায় তৃণমূলের কর্মী হিসেবেই পরিচিত। মারধরের প্রতিবাদ করতে গেলে পিন্টুবাবুর মাথায় আগ্নেয়াস্ত্র ধরে ভয় দেখানো হয় বলে অভিযোগ। মারধর করা হয় পঞ্চায়েতে সচিব কেকে সিংকেও। তাঁর অভিযোগ, ‘‘নিয়ম মেনেই দরপত্র জমা দেওয়া হচ্ছিল। কিন্তু কামালউদ্দিনেরা হামলা চালায়। বৈধ ভাবে দরপত্র দেওয়ার কথা বললেও ওরা পাত্তা দেয়নি।’’ যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেন কামালউদ্দিন। তাঁর কথায়, ‘‘কেউ যাতে দরপত্র জমা না দিতে পারে, সে জন্য বাধা দিচ্ছিল প্রধানের লোকজন। সে জন্যই বচসা বাধে।’’ কিন্তু মারধরের কোনও ঘটেনি বলেই তাঁর দাবি।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৩ সালে পঞ্চায়েতের প্রধান হন পিন্টুবাবু। কামালউদ্দিনদের অভিযোগ, পঞ্চায়েতের দায়িত্বভার নিয়েই পিন্টুবাবু বিভিন্ন কাজকর্মে পক্ষপাত করছেন। যদিও সে কথা মানতে চাননি পিন্টুবাবু। পঞ্চায়েত সূত্রে খবর, ২০১৩ থেকে ওই ঘাটের জন্য দরপত্র ডাকা হয়নি। ঘাটের বিভিন্ন কাজকর্মের নিয়ন্ত্রণ নিয়েই কোন্দল বাধে পিন্টুবাবু ও কামালউদ্দিনদের মধ্যে। দু’পক্ষই পরস্পরের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে, কোনও নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে ঘাট চালানো হচ্ছে। কামালউদ্দিনেরা মাসখানেক আগে ঘাটের দরপত্র ডাকার জন্য ব্লক প্রশাসনের কাছেও আবেদন জানান।
ঘটনার পরে বুধবার রাতে পিন্টুবাবু তাঁর শ’খানেক অনুগামীকে নিয়ে জামুড়িয়া থানায় গিয়ে দোষীদের গ্রেফতারের দাবিতে বিক্ষোভ দেখান। পুলিশ জানায়, অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি চলছে। মহকুমাশাসক (আসানসোল) অমিতাভ দাস বলেন, ‘‘বিডিও-কে বলেছি পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে। তেমন হলে দরপত্রের কাজ পঞ্চায়েতে না করে ব্লক অফিসে করা হবে।’’ তৃণমূলের আসানসোল জেলা (শিল্পাঞ্চল) সভাপতি ভি শিবদাসন বলেন, ‘‘দল যথাযথ তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy