জেমুয়ায় একটি বহুতলের সামনে বিক্ষোভ। —নিজস্ব চিত্র।
নিয়ম না মেনে বহুতল নির্মাণ, পাম্প বসিয়ে ভূগর্ভের জল তুলে নেওয়ায় কুয়োয় জল না মেলা— এমনই নানা অভিযোগে প্রশাসনের দ্বারস্থ হলেন দুর্গাপুরের জেমুয়ার সপ্তর্ষি পার্ক এলাকার বাসিন্দারা। মহকুমাশাসককে চিঠি পাঠিয়ে এই সবের সমাধান চেয়েছেন তাঁরা। দুর্গাপুরের মহকুমাশাসক কস্তুরী সেনগুপ্ত জানান, সংশ্লিষ্ট দফতরের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
দুর্গাপুর শহর লাগোয়া জেমুয়া পঞ্চায়েত এলাকার জেমুয়া মৌজার সপ্তর্ষি পার্ক এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, বহুতল নির্মাণের সময়ে নিয়ম অনুযায়ী মাঝের রাস্তা ছাড়া হচ্ছে না। পার্কিংয়ের উপযুক্ত ব্যবস্থা না থাকায় রাস্তার উপরেই গাড়ি রাখা হচ্ছে। আগুন লাগলে মই লাগানোর জায়গা নেই। সাবমার্সিবল পাম্প বসিয়ে ভূগর্ভের জল তুলে নেওয়ায় কুয়োর জলস্তর নেমে গিয়েছে। উপযুক্ত নিকাশি ব্যবস্থা গড়া হচ্ছে না। অথচ, একের পর এক বহুতল নির্মাণ হয়েই চলেছে। অবিলম্বে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আর্জি জানিয়ে তাঁরা চিঠি দিয়েছেন মহকুমাশাসককে। তাঁর সঙ্গে দেখা করেও সমস্যার কথা জানিয়েছেন বলে প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে।
বাসিন্দারা জানান, ওই এলাকায় গত কয়েক বছর ধরে পরপর বহুতল নির্মাণ হচ্ছে। কয়েকটির নির্মাণকাজ শেষ হয়ে মানুষজন বসবাস শুরু করেছেন। অভিযোগ, ওই সব বহুতলে পানীয় জলের উৎস বলতে সাবমার্সিবল পাম্প। নির্মাণকাজ থেকে শুরু করে পানীয় জল, সব ক্ষেত্রেই ব্যবহার করা হয় ভূগর্ভের জল। ফলে, এলাকার কুয়োগুলির জলস্তর নেমে গিয়েছে। তাঁদের আরও অভিযোগ, এলাকায় রাস্তা ১২ ফুট চওড়া। কিন্তু বহুতলগুলি গড়ে ওঠার পরে প্রয়োজনীয় পার্কিং ব্যবস্থা না থাকায় আবাসনে বসবাসকারী অনেকেই রাস্তার উপরে গাড়ি রাখেন। ফলে, রাস্তা সংকীর্ণ হয়ে পড়ছে। এলাকার বাসিন্দা শঙ্কর দাস, গৌতম পালদের দাবি, “কোনও বহুতলে আগুন লাগলে দমকলের মই লাগানোর জায়গা নেই। সরকারি দফতর থেকে উপযুক্ত পরিদর্শন ছাড়াই বহুতলগুলি নির্মাণের ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে বলে মনে হচ্ছে।”
বাসিন্দারা আরও জানান, এলাকায় বেশ কিছু বহুতল এখন তৈরি হচ্ছে। আরও কয়েকটি ছাড়পত্র পেয়ে গিয়েছে। সেগুলির নির্মাণ দ্রুত শুরু হবে। ফলে, দিন-দিন পরিস্থিতি আরও জটিল হবে। অবিলম্বে ব্যবস্থা না নেওয়া হলে সপ্তর্ষি পার্কের বাসিন্দারা বিপাকে পড়বেন। তাঁরা দাবি করেন, উপযুক্ত নিকাশি ব্যবস্থা গড়ে না তোলায় জল জমে থাকছে। নর্দমায় বাড়ছে মশার উপদ্রব। জয়ন্ত চক্রবর্তী, সন্দীপ দাসরা দাবি করেন, “ছিমছাম পরিবেশে নিজেরা বাড়ি তৈরি করে এক সময় এই পাড়াটি গড়ে তুলেছিলেন এখানকার মানুষজন। অথচ, গত কয়েক বছরে এলাকার চেহারা পুরো বদলে গিয়েছে। এখনই ব্যবস্থা না নেওয়া হলে এলাকা অস্বাস্থ্যকর হয়ে পড়বে।”
কয়েক জন বহুতল নির্মাতার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তাঁরা অবশ্য সাফ জানান, স্থানীয় পঞ্চায়েত ও জেলা পরিষদের প্রয়োজনীয় অনুমতি নিয়ে নিয়ম মেনেই নির্মাণকাজ করছেন তাঁরা। মহকুমাশাসক কস্তুরী সেনগুপ্ত বলেন, “ওই এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ শুনেছি। সংশ্লিষ্ট দফতরের সঙ্গে যোগাযোগ করে পরিস্থিতি দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy