Advertisement
০৫ মে ২০২৪

পড়ুয়াদের সাহায্যে বুক-ব্যাঙ্ক তৈরি করল পঞ্চায়েত সমিতি

পড়াশোনার আগ্রহ থাকা সত্ত্বেও ইচ্ছা পূরণে বাধ সাধে পরিবারের আর্থিক সঙ্গতি। নেই পাঠ্য-বই কেনার সামর্থ্যও। চেয়েচিন্তে যোগাড় করতে হয় নতুন ক্লাসের বই। এমনই অবস্থা পূর্বস্থলীর বেশ কয়েকটি গ্রামের পড়ুয়াদের। তাঁদের সাহায্য করতেই এগিয়ে এল পূর্বস্থলীর ১ পঞ্চায়েত সমিতি। গত পনেরোই অগস্ট এই পঞ্চায়েত সমিতির উদ্যোগে খোলা হয়েছে একটি বুক-ব্যাঙ্ক।

বই দিচ্ছেন মন্ত্রী। নিজস্ব চিত্র।

বই দিচ্ছেন মন্ত্রী। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
পূর্বস্থলী শেষ আপডেট: ২০ অগস্ট ২০১৪ ০২:২২
Share: Save:

পড়াশোনার আগ্রহ থাকা সত্ত্বেও ইচ্ছা পূরণে বাধ সাধে পরিবারের আর্থিক সঙ্গতি। নেই পাঠ্য-বই কেনার সামর্থ্যও। চেয়েচিন্তে যোগাড় করতে হয় নতুন ক্লাসের বই। এমনই অবস্থা পূর্বস্থলীর বেশ কয়েকটি গ্রামের পড়ুয়াদের। তাঁদের সাহায্য করতেই এগিয়ে এল পূর্বস্থলীর ১ পঞ্চায়েত সমিতি। গত পনেরোই অগস্ট এই পঞ্চায়েত সমিতির উদ্যোগে খোলা হয়েছে একটি বুক-ব্যাঙ্ক।

পঞ্চায়েত সমিতি সূত্রে জানা গিয়েছে এলাকায় ১৫০টি সংসদ রয়েছে। সংসদগুলিতে থাকা অধিকাংশ পরিবারই দরিদ্র সীমার নীচে বাস করেন। স্থানীয় স্কুলগুলিতে খোঁজ নিয়ে জানা গেল, এই সমস্ত পরিবার থেকে আসা অধিকাংশ পড়ুয়াই অষ্টম শ্রেণী উত্তীর্ণ হওয়ার পর আর পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারেন না। স্কুল ছাড়ার প্রধান কারণ নবম শ্রেণীর পাঠ্য বই কেনার টাকা যোগাড় করা সম্ভব হয় না তাঁদের পক্ষে। পড়ুয়ারা জানান, বিভিন্ন সরকারি দফতরে বই কেনার জন্য সাহায্যের আবেদনও করা হয়। কিন্তু দফতরগুলির তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়, বই কেনার জন্য আলাদা কোনও সরকারি অনুদান নেই।

সমস্যা মেটাতে চলতি বছরের মার্চ মাস থেকেই উদ্যোগ নেয় পূর্বস্থলী ১ পঞ্চায়েত সমিতি। একটি বৈঠক ডেকে সমিতি ঠিক করে পঞ্চায়েতের নিজস্ব তহবিল থেকে তৈরি করা হবে একটি বুক-ব্যাঙ্ক। প্রথম বছরে ওই বুক-ব্যাঙ্ক থেকে সাহায্য পাবেন এলাকার ৩০০ দুঃস্থ মেধাবী পড়ুয়া। সমিতির তরফে প্রতিটি গ্রাম সংসদ থেকে দু’জন করে দুঃস্থ মেধাবী পড়ুয়ার নাম পাঠাতে বলা হয়েছে পঞ্চায়েতগুলিকে।

পঞ্চায়েত সমিতি সূত্রে জানা গিয়েছে, পড়া শেষ হয়ে গেলে পঞ্চায়েতের মাধ্যমেই বই ফিরিয়ে দিতে হবে পড়ুয়াদের, যাতে পরের শিক্ষাবর্ষে অন্য কোনও পড়ুয়া বইগুলি ব্যবহার করতে পারেন। পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি দিলীপ মল্লিক বলেন, “বুক-ব্যাঙ্কের জন্য পঞ্চায়েত সমিতি একটি ঘর খুলেছে। প্রথম বছর দু’লক্ষ টাকা খরচের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ধাপে ধাপে এতে আরও বেশি অর্থ বরাদ্দ করা হবে।” বুক ব্যাঙ্কে বইয়ের সংখ্যা বাড়ানোর পাশাপাশি প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার উপযোগী বইও রাখা হবে বলে জানান দিলীপবাবু। পঞ্চায়েত সমিতির বুক ব্যাঙ্কের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন রাজ্যের ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প এবং প্রাণী সম্পদ উন্নয়ন দপ্তরের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ। বুক-ব্যাঙ্কের উদ্বোধন করে তিনি বলেন “কোনও পঞ্চায়েত সমিতি এই ধরনের উদ্যোগ প্রথম নিল। এর সুফল পাবেন এলাকার পড়ুয়ারা।” বিধায়ক তহবিল থেকে বুক-ব্যাঙ্ককে সাহায্য করারও আশ্বাস দেন মন্ত্রী। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্বপনবাবুর পরামর্শ, পড়ুয়াদের সাহায্যের জন্য অভিজ্ঞ শিক্ষকদেরা একটি টিম তৈরি করার উদ্যোগ নিতে হবে বুক-ব্যাঙ্ককে। পঞ্চায়েত সমিতি সূত্রে জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যেই মন্ত্রীর পরামর্শ মত একটি শিক্ষকদের কমিটি তৈরি করা হয়েছে। এই কমিটিতে রয়েছেন সদ্য প্রাক্তন প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান দেবাশিস নাগ। প্রতি সপ্তাহে শনিবার এই দলটি পড়ুয়াদের সাহায্য করবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

book bank panchayat samiti purbasthali
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE