Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪

পড়ুয়া পালানোয় স্কুলে শো-কজ তিন

সরকার অনুমোদিত কালনার আবাসিক স্কুল থেকে দোলের রাতে ৪ মূক ও বধির পড়ুয়ার পালানোর ঘটনায় ৩ জনকে শো কজ করল স্কুল কর্তৃপক্ষ। স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে কর্তব্যে গফিলতির আভিযোগে বিকাশ ভারতী প্রতিবন্ধী কল্যাণ কেন্দ্রের হস্টেল সুপার, নৈশ প্রহরী ও রাঁধুনীকে শো কজ করা হয়েছে।

এই জানলা গলেই পড়ুয়ারা পালায় বলে স্কুল কর্তৃপক্ষের দাবি। —নিজস্ব চিত্র।

এই জানলা গলেই পড়ুয়ারা পালায় বলে স্কুল কর্তৃপক্ষের দাবি। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কালনা শেষ আপডেট: ১৩ মার্চ ২০১৫ ০২:২৩
Share: Save:

সরকার অনুমোদিত কালনার আবাসিক স্কুল থেকে দোলের রাতে ৪ মূক ও বধির পড়ুয়ার পালানোর ঘটনায় ৩ জনকে শো কজ করল স্কুল কর্তৃপক্ষ। স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে কর্তব্যে গফিলতির আভিযোগে বিকাশ ভারতী প্রতিবন্ধী কল্যাণ কেন্দ্রের হস্টেল সুপার, নৈশ প্রহরী ও রাঁধুনীকে শো কজ করা হয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৯৯৩ সালে থেকে স্কুলটি চলছে। হস্টেলে মোট ৫০ জন পড়ুয়ার থাকার ব্যবস্থা রয়েছে। দোলের ছুটিতে বেশিরভাগ পড়ুয়াকেই অভিভাবকেরা বাড়ি নিয়ে যান। মাত্র ৮ জন ছাত্রই হস্টেলে ছিল। তাদের হস্টেলের নীচের তলার একটি ঘরে রখা হয়। সেখান থেকেই ৫ মার্চ, বৃহস্পতিবার রাতে ষষ্ঠ শ্রেণির পড়ুয়া শুভজিৎ কিস্কু ও অষ্টু দাস, পঞ্চম শ্রেণির কৃষ্ণ টুডু এবং তৃতীয় শ্রেণির সালাম শেখরা পালিয়ে যায় বলে পুলিশ সূত্রে জনা গিয়েছে। পরে জানা যায়, জানলার গ্রিল সরিয়ে তারা পালিয়েছে। শেষ পর্যন্ত হুগলির পাণ্ডুয়া থানা দু’জন ছাত্রকে উদ্ধার করে। বাকি দু’জনের খোঁজ মেলে হুগলির মহেশপুর গ্রামে। ওই গ্রামেই অষ্টুর বাড়ি। পাণ্ডুয়া থানার তরফে দাবি করা হয়, হস্টেলে পেট ভরে খেতে না পেয়েই তারা পালিয়েছে বলে ওই পড়ুয়ারা আকারে-ইঙ্গিতে অভিযোগ করেছে।

পুরো ঘটনাটি জানাজানি হতেই নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। মহকুমাশাসক কালনা ২ ব্লকের বিডিওকে তদন্তের নির্দেশ দেন। বৃহস্পতিবার স্কুলের প্রধান শিক্ষক অমর ভট্টাচার্য জানান, বিডিও-র নির্দেশ দিয়েছেন কর্তব্যে যাদের গাফিলতি হয়েছে বলে মনে হচ্ছে তাঁদের শো-কজ করতে হবে। এর পরে হোস্টেল সুপার সদানন্দ ভুঁই, নৈশ প্রহরী অশোক চট্টপাধ্যায় ও রাঁধুনি মঙ্গলা সাঁতরাকে স্কুলের তরফে শো-কজের নোটিশ পাঠানো হয়। ওই তিনজন জানান, নোটিশের জবাব ইতিমধ্যেই স্কুল কর্তৃপক্ষকে দেওয়া হয়েছে। পরিচালন সমিতির বৈঠকে ওই জবাবগুলির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে স্কুলের তরফে জানানো হয়েছে। মহকুমাশাসক সব্যসাচী ঘোষ বলেন, “বিডিও-র কাছে পুরো ঘটনাটি নিয়ে রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে। রিপোর্ট হাতে পেলে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”

তবে খেতে না দেওয়ার অভিযোগটি না মানলেও খাবারের গুণগত মান সবসময় প্রত্যাশামাফিক হয় না বলে স্বীকার করা হয়েছে স্কুলের তরফে। প্রধান শিক্ষক অমর ভট্টাচার্যের কথায়, “একজন রাঁধুনির পক্ষে ৫০ জনের রান্না করাটা কঠিন। তাঁর একজন সাহায্যকারী নিয়োগের জন্য প্রশাসনের কাছে আগেই দরবার করা হয়েছে।” সামগ্রিকভাবে ছাত্র পরিষেবার উন্নতি ঘটাতে বেশ কয়েকটি পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে জানান অমরবাবু। রান্না করা খাবারের মান চেখে দেখবার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে দু’জনকে। রাতের নিরাপত্তা জোরদার করতে একটি ঘণ্টাও কেনা হয়েছে। সন্ধ্যা থেকে ভোর ৫ টা পর্যন্ত প্রতি ঘন্টায় তা বাজানো হবে বলে জানা গিয়েছে।

তবে তদন্তে নেমে স্কুল কর্তৃপক্ষ জানতে পেরেছেন, অষ্টুর বাড়িতে গিয়ে দোল খেলার পরিকল্পনা ছিল ওই চার পড়ুয়ার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

kalna showcause student
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE