Advertisement
E-Paper

বাকি জমি কিনতে আসরে এনটিপিসি

মাঠে নেমে পড়ল এনটিপিসি। কাটোয়ায় তাদের তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য প্রয়োজনীয় বাকি জমি কিনতে। চলতি বছর ৩১ অক্টোবরের মধ্যেই প্রকল্পের জন্য বাড়তি ২০২ একর জমি কেনার প্রক্রিয়া যে ভাবেই হোক শেষ করতে চাইছেন এনটিপিসি কর্তৃপক্ষ। তাই রবিবার বিকেলে কাটোয়ার চুড়পুনি গ্রামে গিয়ে কয়েক জন চাষির সঙ্গে বৈঠক করলেন সংস্থার কাটোয়া প্রকল্পের আধিকারিকেরা। চাষিরা তাঁদের জানান, জমি দিতে তাঁদের আপত্তি নেই।

সৌমেন দত্ত

শেষ আপডেট: ২৫ অগস্ট ২০১৪ ০২:২৩
কাটোয়ার চুড়পুনি গ্রামে চাষিদের সঙ্গে জমির দাম নিয়ে এনটিপিসি কর্তাদের বৈঠক।  নিজস্ব চিত্র

কাটোয়ার চুড়পুনি গ্রামে চাষিদের সঙ্গে জমির দাম নিয়ে এনটিপিসি কর্তাদের বৈঠক। নিজস্ব চিত্র

মাঠে নেমে পড়ল এনটিপিসি। কাটোয়ায় তাদের তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য প্রয়োজনীয় বাকি জমি কিনতে।

চলতি বছর ৩১ অক্টোবরের মধ্যেই প্রকল্পের জন্য বাড়তি ২০২ একর জমি কেনার প্রক্রিয়া যে ভাবেই হোক শেষ করতে চাইছেন এনটিপিসি কর্তৃপক্ষ। তাই রবিবার বিকেলে কাটোয়ার চুড়পুনি গ্রামে গিয়ে কয়েক জন চাষির সঙ্গে বৈঠক করলেন সংস্থার কাটোয়া প্রকল্পের আধিকারিকেরা।

চাষিরা তাঁদের জানান, জমি দিতে তাঁদের আপত্তি নেই। এনটিপিসি-র এই প্রকল্পের অতিরিক্ত জেনারেল ম্যানেজার শিবাশিস বসু তাঁদের বলেন, “আপনারা যখন এগিয়ে এসে সম্মতি দিচ্ছেন, তা আমাদের কাছে সত্যিই শ্লাঘার বিষয়।” এনটিপসি-র ম্যানেজার (এইচআর) ভি পি সাউ বলেন, “আমরা সব চাষির কথা শুনতে চাই। ধাপে ধাপে সবার সঙ্গেই কথা হবে।”

এই তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য বাম আমলে ৫৫৬ একর জমি অধিগ্রহণ করেছিল রাজ্য সরকার। তৃণমূলের সরকার ক্ষমতায় এসে জানিয়ে দেয়, বাকি জমি চাষিদের থেকে সরাসরি কিনতে হবে এনটিপিসি-কে। এর জেরে প্রকল্প নিয়ে অচলাবস্থা তৈরি হয়। পরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারের তরফে প্রায় একশো একর জমি দেওয়ার কথা ঘোষণা করলে জট কাটে। এনটিপিসি সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৩২০ মেগাওয়াটের তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য আরও প্রায় ২০০ একর জমি র প্রয়োজন তাদের। ৮৯২ জন চাষির কাছ থেকে তা কিনবে তারা।

এ দিন চুড়পুনি গ্রামে এনটিপিসি কর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে চাষি সাগর বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আমাদের জন্য কাজ বন্ধ হয়ে যাক, এটা আমরা চাই না। আপনাদের জমি দেব। প্রয়োজনে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র তৈরিতে শ্রমও দেব।” কিছু চাষি জানতে চান, জমির দাম কী ধার্য হয়েছে। শিবাশিসবাবু জানান, গত ১০ জুন মহকুমাশাসকের কাছে সর্বদল বৈঠকে ঠিক হয়েছে, এর আগে অধিগৃহীত ৫৫৬ একর জমির জন্য রাজ্য সরকার যে পদ্ধতিতে ক্ষতিপূরণ দিয়েছিল, এনটিপিসি-ও সেই পদ্ধতিতে জমির দাম দেবে। ওই পদ্ধতি অনুসারে, ক্ষতিপূরণ ও ১২ শতাংশ হারে সুদ ধরে চলতি মাসে একর প্রতি জমির দাম দাঁড়াবে প্রায় ১৬ লক্ষ ৯০ হাজার টাকা। বর্গাদারদেরও আগের পদ্ধতি মেনেই দাম দেওয়া হবে বলে জানানো হয়।

প্রবীণ চাষি দেবজ্যোতি চন্দ্র প্রস্তাব দেন, “আপনারা জমিমালিকের সঙ্গে চুক্তি করে জমি কিনুন। কোনও কারণে জমি না কিনলে আমরা আদালতে গিয়ে বলতে পারব, জমি দিতে চেয়েছিলাম, কিন্তু তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র না করে পালিয়েছে এনটিপিসি।”

এনটিপিসি কর্তারা তাতে সহমত জানান। তবে চাষিরা জানান, এখন তাঁরা জমিতে চাষ করেছেন। ফসল উঠবে ডিসেম্বরে। ৩১ অক্টোবরের মধ্যে জমি কিনে নিলে ফসলের কী হবে? শিবাশিসবাবু বলেন, “সমস্যাটা লিখে রাখলাম।”

এনটিপিসি কর্তারা জানান, মঙ্গলবার থেকে সংস্থা নিযুক্ত আইনজীবীরা চাষিদের কাছে জমির নথি দেখবেন। জট ছাড়িয়ে কী ভাবে সহজে জমি বিক্রি করা যেতে পারে, চাষিদের সে পরামর্শও দেবেন।

এই সপ্তাহে বর্ধমানের অতিরিক্ত জেলাশাসক (ভূমি ও ভূমি সংস্কার), কাটোয়ার মহকুমাশাসক ও কেতুগ্রামের বিধায়কের সঙ্গে বৈঠক করে জমির দাম সরকারি ভাবে ঘোষণা করা হতে পারে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত জমি কেনার জন্য রাজ্য সরকারের কাছে ছাড়পত্র পায়নি এনটিপিসি।

সে ক্ষেত্রে সমস্ত ঝামেলা মিটিয়ে ৩১ অক্টোবরের মধ্যে জমি কেনার প্রক্রিয়া শেষ করা সম্ভব? সংস্থার এক কর্তা বলেন, “সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি জমি কেনার ছাড়পত্র চলে আসবে। তার মধ্যে জট কাটিয়ে চাষিদের সঙ্গে চুক্তি করা হয়ে যাবে। তার পরেই জমি কেনা শুরু হবে।”

churpuni katwa ntpc soumen dutta
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy