Advertisement
১৬ মে ২০২৪

বেলুন থেকে চাউমিনের স্টল, কর্মিসভা যেন মেলা

বিশাল মাঠের মাঝে প্যান্ডেল। আর প্যান্ডেল ঘিরে যেন বসে গিয়েছে মেলা। ছোলা-বাদামভাজা থেকে লেপ-কম্বল, কী নেই পসরার তালিকায়! দলনেত্রীর ভাষণ শুনে ‘রথ দেখা, কলা বেচা’র ঢঙে ফেরার পথে টুকটাক কেনাকাটা সেরে নিলেন তৃণমূল কর্মীদের অনেকেই। বর্ধমান, বীরভূম, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া চার জেলার কর্মীদের নিয়ে দলনেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভার জন্য দুর্গাপুরের ইস্পাতনগরীর রাজীব গাঁধী ময়দানে বিশাল প্যান্ডেল তৈরি করা হয়েছিল।

খাবার পেতে লম্বা লাইন। শুক্রবার দুর্গাপুরে তৃণমূলের কর্মিসভায়। ছবি: বিকাশ মশান।

খাবার পেতে লম্বা লাইন। শুক্রবার দুর্গাপুরে তৃণমূলের কর্মিসভায়। ছবি: বিকাশ মশান।

সুব্রত সীট
দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ২৯ নভেম্বর ২০১৪ ০৩:০৩
Share: Save:

বিশাল মাঠের মাঝে প্যান্ডেল। আর প্যান্ডেল ঘিরে যেন বসে গিয়েছে মেলা। ছোলা-বাদামভাজা থেকে লেপ-কম্বল, কী নেই পসরার তালিকায়! দলনেত্রীর ভাষণ শুনে ‘রথ দেখা, কলা বেচা’র ঢঙে ফেরার পথে টুকটাক কেনাকাটা সেরে নিলেন তৃণমূল কর্মীদের অনেকেই।

বর্ধমান, বীরভূম, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া চার জেলার কর্মীদের নিয়ে দলনেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভার জন্য দুর্গাপুরের ইস্পাতনগরীর রাজীব গাঁধী ময়দানে বিশাল প্যান্ডেল তৈরি করা হয়েছিল। ঠিক কত জন কর্মী এসেছিলেন, তার ঠিক হিসেব শুক্রবার রাত পর্যন্ত জানা যায়নি। তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, বাঁকুড়া থেকে ১০ হাজার, বীরভূম ও পুরুলিয়া থেকে ৬ হাজার করে এবং বর্ধমানের গ্রামীণ এলাকা থেকে ৮ হাজার প্রতিনিধি এসেছিলেন। এ ছাড়া বর্ধমান জেলার শিল্পাঞ্চল থেকে এসেছিলেন তুলনায় অনেক বেশি সংখ্যক কর্মী। দলের বর্ধমান জেলা (শিল্পাঞ্চল) সভাপতি অপূর্ব মুখোপাধ্যায়ের দাবি, এ দিনের সম্মেলনে মোট ৫০ হাজার প্রতিনিধি ছিলেন। তার বাইরে ছিলেন সাধারণ কর্মীরাও।

এ দিন সকাল ১১টা নাগাদ শুরু হয়ে যায় সভার কাজ। তার বহু আগে থেকেই চার জেলা থেকে আসতে শুরু করেছিলেন দলীয় কর্মীরা। মঙ্গলকোটের কোঁয়ারপুর থেকে এসেছিলেন অরুণকুমার রায়। তিনি জানান, ভোরে বাড়ি থেকে বেরিয়েছেন। পৌঁছেছেন সকাল ১১টা নাগাদ। সভায় যাঁরা যোগ দিয়েছিলেন, তাঁদের অধিকাংশই এ ভাবে বেরিয়েছেন ভোরে। সুযোগ বুঝে ব্যাপারিরাও খাবারের পসরা সাজিয়ে বসতে শুরু করে দেন সকাল থেকেই। চা, কফি, মুড়ি, ছোলা, বাদাম ভাজা থেকে শুরু করে চাউমিন-এগ রোলের দোকান, ছিল সবই। মুখ্যমন্ত্রী আসার আগে দলের অন্য নেতারা বক্তব্য রাখছিলেন। তখন অনেকেই প্যান্ডেলের বাইরে কেনাকাটা ও টুকটাক খাওয়া-দাওয়ায় ব্যস্ত ছিলেন। ভাত, ডাল, তরকারি, ডিমের ঝোলের ব্যবস্থা থাকলেও সেই সময় চাউমিন, এগ রোল চেখে দেখছিলেন অনেক কর্মীই। বাঁকুড়ায় বেলিয়াতোড় থেকে এসেছিলেন শ্রীমন্ত বন্ধু। তিনি বলেন, “এগ রোল খাচ্ছি। একটু স্বাদ বদল আর কি!”

মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য শেষ হলে ফেরার পথে অনেকে জিনিসপত্র কেনাকাটাও করেন। ফুলের মালা, বাচ্চাদের জন্য বেলুন ও অন্য খেলনা, বিভিন্ন দেবদেবীর ছবি, বই, লেপ, কম্বলছিল অনেক কিছুই। দুর্গাপুরেরই মেন গেট এলাকা থেকে এসেছিলেন শেখ সামিম। তাঁর বছর চারেকের ছেলের আব্দারে কিনে দিয়েছেন গাঁদা ফুলের মালা। আবার পাণ্ডবেশ্বর এলাকা থেকে আসা মনোজ বাউড়িকে দেখা গিয়েছে কম্বলের দোকানে দরদাম করতে। তিনি বলেন, “বাড়িতে কাজের চাপে বাজারে যাওয়ার সময় পাই না। এখান থেকে ফেরার সময় দামে পোষালে কম্বল কিনে নিয়ে যাব।” চায়ের দোকানি উমাপদ সুঁই দুর্গাপুরের বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে-ঘুরে চা বিক্রি করেন। তিনি বলেন, “চায়ের ভাল বাজার ছিল। দাম বেশি দিয়েও নিয়েছেন ক্রেতারা। ভাল লাভ করেছি।”

দলের শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে ভবিষ্যৎ কর্মসূচির দিশা পেতে এসে অনেকটা এ ভাবে মেলার মেজাজেই দিন কাটালেন তৃণমূলের বহু কর্মী-সমর্থক।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

subrata sit durgapur
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE