বাস চলাচল তদারকিতে জেলা শাসক সৌমিত্রমোহন। বর্ধমান শহরের তেলিপুকুর এলাকায় তোলা নিজস্ব চিত্র।
বীরহাটা থেকে বর্ধমান স্টেশন পর্যন্ত যাত্রিবাহী বাস ঢুকতে না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন। কিন্ত সেই সিদ্ধান্ত কার্যকরের প্রথম দিনেই তীব্র যানজট ও হয়রানিতে পড়তে হল বর্ধমান শহরবাসীকে। এ দিন দক্ষিণ দামোদরের দিকের বাসগুলি যাত্রীদের বীরহাটা মোড়ে নামিয়ে দিয়ে ডান দিক বেঁকে আলিশা মৌজায় অবস্থিত পূর্বাশা স্ট্যান্ডে চলে গিয়েছে। এর ফলে বর্ধমান-আরামবাগ রোডে পরপর বাস দাঁড়িয়ে যায়। ব্যাহত হয় যান চলাচল। অন্য দিকে, প্রশাসন বলেছিল যেখানে বাস ঢুকবে না সেখানে ব্যাটারিচালিত অটো রিকশা পাওয়া যাবে। কিন্তু এ দিন বাস ও অটো রিকশা কিছুই পাওয়া যায়নি। ফলে সোমবার চড়া রোদের মধ্যে সবাইকেই বীরহাটা থেকে বিজয়তোরণ পর্যন্ত হাঁটতে হয়েছে।
জেলাশাসক সৌমিত্র মোহন এ দিন তেলিপুকুরে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে গিয়েছিলেন। তিনি বর্ধমান পুরসভার চেয়ারম্যান স্বরূপ দত্তকে জিজ্ঞাসা করেন, “মিনি বাস ঠিক মতো চলছে কী? অটো কোথায় গেল?” উত্তরে চেয়ারম্যানের বদলে উপস্থিত আঞ্চলিক পরিবহন আধিকারিক প্রদীপ মজুমদার বলেন, “মিনি বাসের মালিকদের সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে। তাঁরা পর্যাপ্ত মিনি নামাবেন। আসানসোল-দুর্গাপুর থেকেও অনেক মিনি বাস আনানো হয়েছে। দরকারে ওই বাসগুলিকে নামানো হবে। স্বরূপবাবু জানান, ২০-২২টি পরিবেশ বান্ধব অটো নামানো হয়েছে। আরও কয়েকটি নামানো হবে।
প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল, দক্ষিণবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহন সংস্থা বা এসবিএসটিসির কলকাতামুখী ধর্মতলা ও করুণাময়ী রুটের বাসগুলিকে শহরের বাইরের জিটিরোড বাইপাস দিয়ে যাতায়াত করানোর কথা বলা হয়েছিল। বর্ধমানের যে সব বাসিন্দা ঘন-ঘন কলকাতা যাতায়াত করেন তাঁরা এই সিদ্ধান্তের তীব্র প্রতিবাদ করেন। শেষে ঠিক হয়েছে, সকাল সাড়ে সাতটা পর্যন্ত এসবিএসটিসির বাসগুলি শহরের মধ্যে অবস্থিত জিটিরোড দিয়ে যাতায়াত করবে। তার পরে সারা দিন সেগুলি জিটিরোড বাইপাস দিয়ে যাতায়াত করবে। ফের রাত আটটার পরে শহরের ভেতরে ঢুকতে পারবে এসবিএসটিসির বাস। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এই বাসগুলি নবাবহাট বাসস্ট্যান্ড থেকে ছেড়ে রথতলা, আঞ্জির বাগান, তেলিপুকুর মোড়, দামোদর কোল্ডস্টোরেজ মোড়, কানাইনাটশালে থেমে পূর্বাশা স্ট্যান্ডে ঢুকবে। কিন্তু আগে এসবিএসটিসির অগ্রিম টিকিট তিনকোনিয়া থেকে দেওয়া হলেও, নতুন পর্যায়ে বাস চলাচল শুরু হওয়ার পরে ওই কাউন্টার বন্ধ করিয়ে দেওয়া হয়েছে। ফলে যাঁরা এসবিএসটিসি বাসে যাতায়াত করবেন তাঁদের এ বার থেকে নবাবহাট অথবা আলিশা বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে টিকিট কাটতে হবে। তিনকোনিয়া স্ট্যান্ডের কাউন্টার বন্ধ করিয়ে দেওয়ায় সিদ্ধান্তে বর্ধমানের মানুষ ক্ষুব্ধ। তাঁরা জানান, শহরের ভেতরে এসবিএসটিসির টিকিট কাউন্টার তুলে দেওয়ার প্রয়োজন ছিল না। তিনকোনিয়া স্ট্যান্ডে ওই কাউন্টার থাকলে সাধারণ মানুষের অনেক সুবিধা হত। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এসবিএসটিসি কর্মীদের অভিযোগ, এই কাউন্টার তুলে দিয়ে তাঁদেরও সমস্যায় ফেলা হয়েছে।
তিনকোনিয়ায় এসবিএসটিসির টিকিট কাউন্টার তুলে দেবার প্রসঙ্গে অতিরিক্ত জেলাশাসক সুমিত গুপ্ত বলেছেন, “ মানুষের অসুবিধা হলে আমরা ওই টিকিট কাউন্টার যাতে তিনকোনিয়াতে চালু হয়, তার জন্য এসবিএসটিসি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করা হবে।” এসবিএসটিসির বর্ধমান ডিপো ইনচার্জ তাপস মুখোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “এই সিদ্ধান্তের ফলে আমাদের ভাল হল না খারাপ, সেটা ভবিষ্যৎ বলবে।” এক এসবিএসটিসি কর্তা জানান, এই দুরত্ব বাড়ার জন্য ভাড়াও বাড়াতে পারে এসবিএসটিসি বাসের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy