Advertisement
০৫ মে ২০২৪

বেহাল পরীক্ষাগার নিয়েই স্কুল উন্নীত উচ্চ মাধ্যমিকে

স্কুল উন্নীত হতে চলেছে উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে। কিন্তু পরীক্ষাগারের কোনও উন্নয়ন হয়নি। এমন পরিস্থিতিতে তাঁরা বিপাকে পড়েছেন বলে অভিযোগ বর্ধমান জেলার বেশ কিছু স্কুল কর্তৃপক্ষের। ঠিক মতো পরীক্ষাগার ছাড়া উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে বিজ্ঞানের বিষয়গুলি কী ভাবে পড়ানো হবে, সে নিয়ে দুশ্চিন্তায় তাঁরা।

অর্পিতা মজুমদার
দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ০৫ মার্চ ২০১৪ ০৬:৩৩
Share: Save:

স্কুল উন্নীত হতে চলেছে উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে। কিন্তু পরীক্ষাগারের কোনও উন্নয়ন হয়নি। এমন পরিস্থিতিতে তাঁরা বিপাকে পড়েছেন বলে অভিযোগ বর্ধমান জেলার বেশ কিছু স্কুল কর্তৃপক্ষের। ঠিক মতো পরীক্ষাগার ছাড়া উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে বিজ্ঞানের বিষয়গুলি কী ভাবে পড়ানো হবে, সে নিয়ে দুশ্চিন্তায় তাঁরা। উচ্চ মাধ্যমিকের বিজ্ঞান বিভাগ চালু আছে যে সব স্কুলে, সেখানেও পরীক্ষাগার যুগোপযোগী করে তোলার কোনও পদক্ষেপ বহুদিন হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে। স্কুল শিক্ষা দফতর সূত্রে অবশ্য জানা গিয়েছে, পরীক্ষাগার উন্নত করতে স্কুলগুলিকে ধাপে ধাপে অনুদানের পরিকল্পনা হয়েছে ইতিমধ্যেই।

উচ্চ মাধ্যমিকে উন্নীত হতে চলা স্কুলগুলির শিক্ষক-শিক্ষিকারা জানান, মাধ্যমিকের সিলেবাস অনুযায়ী প্র্যাকটিক্যাল ক্লাসের বিশেষ গুরুত্ব নেই। কিন্তু উচ্চ মাধ্যমিকের ক্ষেত্রে পরিস্থিতি একেবারে আলাদা। একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণিতে গণিত বাদে বিজ্ঞানের বাকি তিনটি বিষয়পদার্থ বিজ্ঞান, রসায়ন ও জীববিদ্যার পঠনপাঠনের অনেকটাই পরীক্ষাগার নির্ভর। তিনটি বিষয়েই ভাল ফল করতে পড়ুয়াদের কাছে প্র্যাকটিক্যাল পরীক্ষা গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, তিনটি বিষয়েই মোট নম্বরের ২০ শতাংশ থাকে এই পরীক্ষায়। ফলে পরীক্ষাগারগুলি উন্নত করা না হলে ছাত্রছাত্রীরা পড়বে মুশকিলে।

পুরনো উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলগুলির শিক্ষক-শিক্ষিকারা আবার জানান, যন্ত্রপাতি পুরনো হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তার কার্যকারিতা কমে। আর্থিক কারণে অধিকাংশ স্কুল নতুন যন্ত্রপাতি কিনতে পারে না। পুরনো যন্ত্রপাতি দিয়ে কাজ চালাতে গিয়ে ঠিক মতো ক্লাস করানো যায় না। আবার নতুন সিলেবাস অনুযায়ী প্র্যাকটিক্যাল ক্লাসের জন্য কিছু নতুন যন্ত্রপাতি কেনা প্রয়োজন। বহু স্কুলে পড়ুয়া সংখ্যা আগের থেকে বেড়েছে। কিন্তু পরীক্ষাগারের পরিসর বাড়েনি। তাই এ ব্যাপারে নজর দেওয়া একান্ত প্রয়োজন বলে স্কুলগুলির দাবি।

স্কুল শিক্ষা দফতর অবশ্য এ ব্যাপারে আশার কথাই শুনিয়েছে। এই দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ধাপে ধাপে দু’ধরনের স্কুলেই বিজ্ঞানের পরীক্ষাগার উন্নয়ত করার পরিকল্পনা হয়েছে। ইতিমধ্যে কিছু স্কুলকে এই খাতে এককালীন দু’লক্ষ টাকা করে অনুদান দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে, এখনও পর্যন্ত বর্ধমান জেলায় দু’ধরনের স্কুল মিলিয়ে মোট ১৮৮টি স্কুলকে দু’লক্ষ টাকা করে দেওয়ার পরিকল্পনা হয়েছে। বাকি স্কুলগুলিকেও দ্রুত এই তালিকাভুক্ত করা হবে।

এই পদক্ষেপের কথা শুনে খানিকটা স্বস্তিতে বিভিন্ন স্কুল কর্তৃপক্ষ। কয়েক জন প্রধান শিক্ষকের কথায়, “পরীক্ষাগারের উন্নয়ন ছাড়া স্কুলকে উচ্চ মাধ্যমিকে উন্নীত করায় দুশ্চিন্তায় ছিলাম, কী ভাবে সিলেবাস অনুযায়ী পড়াশোনা হবে। ঠিক মতো পঠনপাঠন না হলে আবার অভিভাবকদের ক্ষোভের মুখে পড়তে হত। সেই দুশ্চিন্তা এ বার কাটবে।” কাটোয়ার রাজুয়া চুড়পুনি বিদ্যাপীঠের প্রধান শিক্ষক বিশ্বনাথ বালা বা আসানসোলের নরসমুদা জনকল্যাণ সমিতি হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক দীপক মুখোপাধ্যায়েরা বলেন, “ঘোষণার কথা জেনেছি। পড়ুয়ারা উপকৃত হবে।” কয়েকটি পুরনো উচ্চ মাধ্যমিক স্কুল কর্তৃপক্ষ আবার জানান, সরকারি অনুদান মিললে যন্ত্রপাতি কেনার পাশাপাশি পরীক্ষাগারের জায়গা বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানান কিছু স্কুল কর্তৃপক্ষ। দুর্গাপুরের বেনাচিতি রামকৃষ্ণপল্লি বিবেকানন্দ বিদ্যাপীঠের প্রধান শিক্ষিকা সুতপা বক্সী যেমন বলেন, “সরকারি চিঠি এখনও পাইনি। তবে অনুদান এলে অনেক সুবিধা হবে, সন্দেহ নেই।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Higer Secondary
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE