Advertisement
০৪ মে ২০২৪

মাকে বাড়িতে ফিরিয়ে পুজো করে পালবাড়ি

কোথাও স্বপ্নাদেশ পেয়ে শুরু হয়েছিল পুজো। আবার কোথাও কালী হিসেবে পূজিতা হন মহিলা। কালীপুজোর এই ঐতিহ্য অমলিন থাকল অন্ডালে। উখড়ার ঘটক পরিবারের কালীপুজোর বয়স হল ২১৬ বছর। এই পুজোটি হল রাজ্যের মন্ত্রী মলয় ঘটকের বাড়ির পুজো। ঘটক পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, বর্তমানে তাঁদের পরিবারের সদস্যরা বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে রয়েছেন।

ঘটক বাড়ির পুজো। নিজস্ব চিত্র।

ঘটক বাড়ির পুজো। নিজস্ব চিত্র।

নীলোৎপল রায়চৌধুরী
অন্ডাল শেষ আপডেট: ২৫ অক্টোবর ২০১৪ ০১:০১
Share: Save:

কোথাও স্বপ্নাদেশ পেয়ে শুরু হয়েছিল পুজো। আবার কোথাও কালী হিসেবে পূজিতা হন মহিলা। কালীপুজোর এই ঐতিহ্য অমলিন থাকল অন্ডালে।

উখড়ার ঘটক পরিবারের কালীপুজোর বয়স হল ২১৬ বছর। এই পুজোটি হল রাজ্যের মন্ত্রী মলয় ঘটকের বাড়ির পুজো। ঘটক পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, বর্তমানে তাঁদের পরিবারের সদস্যরা বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে রয়েছেন। তাই প্রতি বছরই পালা করে একটি নির্দিষ্ট পরিবারের উপর পুজোর ভার পড়ে। এ বার ছিল মলয় ঘটকের পরিবারের পালা। কালীপুজোর সন্ধ্যা থেকে রাত পর্যন্ত মন্ত্রী নিজে এই পুজোয় উপস্থিত ছিলেন। মলয়বাবু বলেন, “আট বছর পরে এই পুজোর দায়িত্ব পড়ল আমাদের চার ভাইয়ের উপর।” মলয়বাবুর ভাই মুকুল ঘটকের দাবি, প্রথা মেনে পারিবারিক পুজো হলেও তাঁদের বাড়ির পুজোয় গ্রামের প্রায় সবাই যোগ দেয়। তিনি জানান, তাঁদের পূর্বপুরুষ নীলাচল ঘটক শুরু করেছিলেন এই কালীপুজো। তখন উখড়ায় মোট ১৩টি কালীপুজো হত। সবগুলিই ছিল পারিবারিক পুজো। বর্তমানে উখড়ায় সর্বজনীন ও পারিবারিক প্রায় ৩০০টি পুজো হয়।

রানিগঞ্জের কুমার বাজারে লাহা বাড়ির পুজো শুরু হয়েছিল ১৯৯০ সালে। এই পরিবারের সদস্য খোকন লাহা জানান, আর্থিক সমস্যায় পরিবারে যখন সঙ্কট চলছে তখন বাড়ির গুরুদেব বাড়িতে কালীপুজো করার পরামর্শ দিয়েছিলেন। সেই থেকেই পুজোর শুরু। কালীপুজোর সাত দিন পরে কয়েক হাজার গ্রামবাসী লাহা বাড়িতে একসঙ্গে খাওয়া দাওয়া করেন। খোকনবাবুর পড়শি অসীম দত্ত বলেন, “এটি পারিবারিক পুজো হলেও পাড়ার সবাই এই পুজোয় আসেন।”

জামুড়িয়ার বীরকুলটি গ্রামে মুখোপাধ্যায় বাড়ির পুজোর বয়স ৪০০ বছর। এই পরিবারের সদস্যদের পেশা হল হাঁপানির ওষুধ তৈরি। পরিবারের সদস্য সত্যভজন মুখোপাধ্যায় জানান, তাঁদের আদি বাড়ি ছিল ঝাড়খণ্ডের সরবেডা গ্রামে। পূর্বপুরুষেরা পেশার কারণে জামুড়িয়ার বীরকুলটি গ্রামে চলে আসেন। সেই থেকেই গ্রামে তাঁরা কালীপুজো শুরু করেন। গ্রামের বাসিন্দা রাষ্ট্রপতি পুরষ্কারপ্রাপ্ত শিক্ষক স্বরাজ মুখোপাধ্যায় ও প্রবীণ সমাজসেবী শিবকালী মুখোপাধ্যায়েরা জানান, মুখোপাধ্যায় বাড়ির পুজোতে শুধু বীরকুলটি গ্রামই নয়, আশেপাশের গ্রাম থেকেও মানুষ যোগ দেন।

অন্ডালের মধুপুরের পাল বাড়িতে কালী রূপে পূজিতা হন মহিলা। পরিবারের ছোট ছেলে বলরাম পাল জানান, তাঁর মাকেই কালী রূপে পুজো করা হয়। তিনি বলেন, “চার বছর বয়সে বাবা মারা যাওয়ার পর মা সন্ন্যাস নিয়ে দুর্গাপুরের বেনাচিতির আশ্রমে চলে যান। সেখানে মায়ের নাম হয় আনন্দময়ী দেবী। মায়ের গুরু অচুতানন্দ মারা যাওয়ার আগে মাকে কালী রূপে পুজো করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। সেই থেকে কালী পুজোর আগের দিন মাকে আশ্রম থেকে বাড়ি নিয়ে এসে কালীরূপে পুজো করি।” ১৯৮৭ সাল থেকে চলছে এই পুজো। অন্ডালের দক্ষিণখণ্ড গ্রামের রায় পরিবারের পুজো শুরু হয়েছিল ৪৪ বছর আগে। ওই পুজোর উদ্যোক্তা সন্তোষকুমার রায় জানান, স্বপ্নাদেশেই পুজোর শুরু। ভাইফোঁটার রাতে রায় বাড়িতে গ্রামের সবাইকে নিয়ে হয় পঙতি ভোজ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

nilatpal roychoudhuri pal bari andal
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE