Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

মানুষ ভোট দিতে পারলে জয় নিশ্চিত, প্রচারে দাবি সাইদুলের

নিজের ভোটটা নিজে নিশ্চিন্তে দিতে পারব তো? লোকসভা ভোটের প্রচারে নেমে দলের কর্মীদের থেকে বারবার এই আকুতিই শুনতে হচ্ছে বলে দাবি করলেন বর্ধমান-দুর্গাপুর লোকসভা কেন্দ্রের সিপিএম প্রার্থী সাইদুল হক। সিপিএম নেতা-কর্মীদেরও দাবি, গত পঞ্চায়েত ও পুরসভা ভোটের মতো ‘সন্ত্রাস’ না হলে ভোট যুদ্ধে তাদের প্রার্থীর জয় নিশ্চিত।

চলছে প্রচার। —নিজস্ব চিত্র।

চলছে প্রচার। —নিজস্ব চিত্র।

রানা সেনগুপ্ত
বর্ধমান শেষ আপডেট: ১৯ মার্চ ২০১৪ ০০:৩৪
Share: Save:

নিজের ভোটটা নিজে নিশ্চিন্তে দিতে পারব তো?

লোকসভা ভোটের প্রচারে নেমে দলের কর্মীদের থেকে বারবার এই আকুতিই শুনতে হচ্ছে বলে দাবি করলেন বর্ধমান-দুর্গাপুর লোকসভা কেন্দ্রের সিপিএম প্রার্থী সাইদুল হক। সিপিএম নেতা-কর্মীদেরও দাবি, গত পঞ্চায়েত ও পুরসভা ভোটের মতো ‘সন্ত্রাস’ না হলে ভোট যুদ্ধে তাদের প্রার্থীর জয় নিশ্চিত। এরমধ্যেই তৃণমূলের বিরুদ্ধে নানা জায়গায় হুমকির অভিযোগ তুলতে শুরু করেছেন জেলা সিপিএম নেতৃত্ব।

গত লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূল ঝড়ের মধ্যেও বর্ধমানের লাল দূর্গ অটুট ছিল। বর্ধমান-দুর্গাপুর, বর্ধমান পূর্ব, আসানসোল তিনটি লোকসভা আসনেই জিতেছিল সিপিএম। বর্ধমান-দুর্গাপুর আসনে জিতেছিলেন সাইদুল হক। এ বারের লোকসভা নির্বাচনে তিনিই আবার সিপিএমের প্রার্থী। কিন্তু মাঝের সময়ে পরিস্থিতি বদলেছে অনেকটাই। বিধানসভা, পঞ্চায়েত ও পুরসভায় যত বারই নির্বাচন হয়েছে বর্ধমানে খারাপ ফল করেছে সিপিএম। একে একে হাতছাড়া হয়েছে বর্ধমান জেলা পরিষদ ও বর্ধমান পুরসভা। এই অবস্থায় লড়াই যে অনেক কঠিন সেটা ভালই জানেন সাইদুল হক। তাই প্রার্থী হিসেবে নাম ঘোষণার পরেই নেমে পড়েছেন প্রচারে। সিপিএম নেতাদের সঙ্গে নিয়ে বাড়ি বাড়ি ঘুরছেন। কর্মীদের নিয়ে বৈঠকও করছেন। বাড়ির উঠোনে, পাড়ার মোড়ে ছোট ছোট প্রচারসভায় সাইদুল হক বলছেন, “সন্ত্রাস করে গত লোকসভা ভোটের পরে আমাদের কর্মীদের কার্যত বন্দী করে রাখা হয়েছে। পঞ্চায়েত ও পুরসভার ভোটে আমরা একেবারেই দাঁড়াতে পারিনি। এ বার লোকসভার ভোট এসেছে। মানুষ মরিয়া হয়ে পথে নেমেছেন। সন্ত্রাস রুখে ভোট করাই আমাদের চ্যালেঞ্জ। মানুষ যদি নিরাপদে ভোট দিতে পারে, তাহলে আমাদের লিড ধরে রাখা সম্ভব।”

বসে যাওয়া কর্মীদের উৎসাহ দিতে কমতি করছেন না বর্ধমান-দুর্গাপুরের সিপিএম প্রার্থী। কিন্তু তারপরেও সিপিএম কর্মীরা নিশ্চিত হতে পারছেন কই। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সিপিএম কর্মীর কথায়, “পঞ্চায়েত ভোটের পরে এলাকা ছাড়া হয়ে গিয়েছিলাম। লোকসভার মুখে ফের বাড়ি ফিরলেও কতদিন থাকতে পারবো জানি না।” শক্তিগড়, বড়শূল-সহ অনেক জায়গাতেই ভোটাররা ভোটের দিন বুথে পৌঁছতে পারা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন। শক্তিগড়ের পুরনো জিটি রোড সংলগ্ন বাঙাল পাড়ায় স্থানীয় বাসিন্দা মণিকা সরকার সিপিএম প্রার্থীর পথ আটকে প্রশ্ন করেছেন, “পঞ্চায়েতে নিজের ভোটটা নিজে দিতে পারিনি। এ বার কী বুথে যেতে পারব?”

তবে, ‘সন্ত্রাসে’র সব অভিযোগ অবশ্য উড়িয়ে দিচ্ছে তৃণমূল নেতৃত্ব। জেলা তৃণমূলের এক নেতার কটাক্ষ, “ক্ষমতায় থাকার সময়ে সিপিএম কী ভাবে ভোট করত সেটা বর্ধমানের মানুষ জানেন। বুথ দখল, সন্ত্রাসের অভিযোগ সিপিএম নেতাদের মুখে মানায় না।” স্থানীয় তৃণমূল নেতা তথা বর্ধমান জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ গোলাম জার্জিস বলেন, “লোকসভা ভোট শান্তিতেই হবে। সিপিএম এখন জনবিচ্ছিন্ন। তাই আবোল তাবোল বকছে।”

জেলাশাসক তথা জেলার নির্বাচন আধিকারিক সৌমিত্র মোহনের অবশ্য আশ্বাস, “প্রশাসনের লক্ষ্য শান্তিতে লোকসভার ভোট করানো। সেই কারণে ৬০-৬৫ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী চাওয়া হয়েছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE