Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

মন্তেশ্বরে তৃণমূল নেতার বাড়ি থেকে মিলল অস্ত্র, বোমা

এক তৃণমূল নেতার গোয়াল ঘর থেকে ২৭টি বোমা ও পাইপগান উদ্ধার হয়েছে মন্তেশ্বরে। ওই ঘটনায় লাল্টু শেখ নামে একজনকে গ্রেফতারও করেছে পুলিশ। বুধবার ভোরে মন্তেশ্বরের দেনুড় পঞ্চায়েতের মৌসা গ্রামে ঘটনাটি ঘটে। দুপুরে আদালতে তোলার পথে নিজেকে দেনুড় অঞ্চল তৃণমূলের সম্পাদক বলে দাবি করেন লাল্টু। লাল্টুর দাবি, তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হয়েছে। তবে মন্তেশ্বর ব্লক তৃণমূলের সভাপতি সজল পাঁজা জানিয়েছে, লাল্টু দলের কর্মী, তবে কোনও পদাধিকারী নন। এ দিন বিচারক ১০ এপ্রিল পর্যন্ত জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন।

উদ্ধার হওয়া বোমা হাতে পুলিশ। —নিজস্ব চিত্র।

উদ্ধার হওয়া বোমা হাতে পুলিশ। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মন্তেশ্বর শেষ আপডেট: ০৩ এপ্রিল ২০১৪ ০০:৫০
Share: Save:

এক তৃণমূল নেতার গোয়াল ঘর থেকে ২৭টি বোমা ও পাইপগান উদ্ধার হয়েছে মন্তেশ্বরে। ওই ঘটনায় লাল্টু শেখ নামে একজনকে গ্রেফতারও করেছে পুলিশ। বুধবার ভোরে মন্তেশ্বরের দেনুড় পঞ্চায়েতের মৌসা গ্রামে ঘটনাটি ঘটে। দুপুরে আদালতে তোলার পথে নিজেকে দেনুড় অঞ্চল তৃণমূলের সম্পাদক বলে দাবি করেন লাল্টু। লাল্টুর দাবি, তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হয়েছে। তবে মন্তেশ্বর ব্লক তৃণমূলের সভাপতি সজল পাঁজা জানিয়েছে, লাল্টু দলের কর্মী, তবে কোনও পদাধিকারী নন। এ দিন বিচারক ১০ এপ্রিল পর্যন্ত জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন।

পঞ্চায়েত নির্বাচনের পর থেকেই মৌসা গ্রামের তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে চলে আসে। লাল্টু শেখ ও হাবিবুর মোল্লার দুই গোষ্ঠীর মধ্যে একশো দিনের কাজ, রাস্তার কাজ নিয়ে সংঘর্ষ বাধে। ৮ মার্চ গ্রামে পঞ্চায়েত সমিতির একটি মোরাম রাস্তার দুনীর্তির অভিযোগ নিয়ে একটি বৈঠক হয়। অভিযোগ, ওই বৈঠকে লাল্টুর লোকজনের উপর বোমাগুলি ছোঁড়ে হাবিবুরের লোকেরা। দু’জনের মৃত্যুও হয়। পরে ওই ঘটনায় হাবিবুর-সহ তার গোষ্ঠীর ১৩ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। বর্তমানে জেল হেফাজতে রয়েছে তারা। এ দিন লাল্টুর গোয়াল ঘরে বোমা ও আগ্নেয়াস্ত্র রাখার খবর পায় মন্তেশ্বর থানার পুলিশ। অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করা হয় লাল্টুকে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, লাল্টুর পাশাপাশি তার ভাই ইব্রাহিমকেও থানায় নিয়ে আসে পুলিশ। সকালে খবর চাউর হতেই উত্তেজনা ছড়ায় এলাকায়। বেশ কয়েকটি ট্রাক্টরে মহিলা-সহ প্রচুর লোকজন থানায় এসে বিক্ষোভ দেখান। বিক্ষোভকারীদের দাবি, লাল্টুকে চক্রান্ত করে ফাঁসানো হয়েছে। দুই ভাইকে ছেড়ে দিতে হবে। পুলিশ ইব্রাহিমকে ছেড়ে দিলেও লাল্টুকে গ্রেফতার করে আদালতে তোলে।

পুলিশের ভ্যান থেকে নামিয়ে আদালতে তোলার পথে লাল্টু দাবি করেন, “ভোর সাড়ে তিনটে নাগাদ মন্তেশ্বর থানার ওসি দরজায় টোকা দেন। ওনাকে বসতে দিই। কিছুক্ষণ পরে বড়বাবু জানান, গোয়ালঘর থেকে অস্ত্র ও বোমা পাওয়া গিয়েছে। গোটা ঘটনাটাই সাজানো। আমাদের দলেরই কিছু লোকের চক্রান্তের স্বীকার আমি।” লাল্টুর আরেক ভাই কালো শেখেরও দাবি, “বাড়ি থেকে গোয়াল ঘরের দূরত্ব প্রায় ৫০০ ফুট। গোয়ালে ৭টি গরু ও ৩টে ছাগল ছিল। ভাবতে অবাক লাগছে, এ সব জেনেও আমরা অস্ত্র রেখেছিলাম।” তাঁর আরও দাবি, পুলিশ ওই ঘর থেকে চারটি বোমা ও একটি পাইপগান উদ্ধার করে। বোমাগুলি বালতির জলে ডুবিয়ে নিয়ে যায় পুলিশ। পরে জানতে পারি, বোমা ও অস্ত্রের সংখ্যা বেড়ে গিয়েছে।

লাল্টুর গ্রেফতার ও বিক্ষোভের জেরে অস্বস্তিতে পড়েছে তৃণমূলও। মন্তেশ্বর ব্লক তৃণমূলের সভাপতি সজল পাঁজা বলেন, “মৌসা গ্রামে আগে দু’টি খুনের ঘটনা ঘটেছে। শুনেছি তদন্তের স্বার্থে পুলিশ লাল্টুকে জেরা করছে।” আর বোমা উদ্ধার? সজলবাবু জানান, বিশ্বাস হচ্ছে না। তবে খোঁজ নিয়ে দেখা হচ্ছে।

মহকুমা পুলিশের এক আধিকারিক বলেন, “নতুন করে আর কিছু উদ্ধারের নেই। তাই লাল্টুকে পুলিশ হেফাজতে চাওয়া হয়নি।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

arms recovered tmc leader manteswar
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE