Advertisement
১৯ মে ২০২৪

রায়ানের মন্দির সংস্কারে হাত দিক প্রশাসন, দাবি

দেড়শো বছরের পুরনো টেরাকোটার মন্দিরের জীর্ণ দশা দেখে এগিয়ে এসেছিলেন গ্রামবাসীরাই। নিজেরাই টাকা তুলে যতটা সম্ভব সংস্কার করেছিলেন মহারাজ বিজয়চন্দ প্রতিষ্ঠিত রায়ানের দক্ষিণেশ্বর মন্দিরের। কিন্তু তাতেও বাকি রয়ে গিয়েছে সংস্কারের বেশ কিছু কাজ।

ভক্তদের ভিড় রায়ানের মন্দিরে।

ভক্তদের ভিড় রায়ানের মন্দিরে।

রানা সেনগুপ্ত
কালনা শেষ আপডেট: ১৫ অগস্ট ২০১৪ ০১:১৯
Share: Save:

দেড়শো বছরের পুরনো টেরাকোটার মন্দিরের জীর্ণ দশা দেখে এগিয়ে এসেছিলেন গ্রামবাসীরাই। নিজেরাই টাকা তুলে যতটা সম্ভব সংস্কার করেছিলেন মহারাজ বিজয়চন্দ প্রতিষ্ঠিত রায়ানের দক্ষিণেশ্বর মন্দিরের। কিন্তু তাতেও বাকি রয়ে গিয়েছে সংস্কারের বেশ কিছু কাজ। গ্রামবাসীদের দাবি, জেলার ঐতিহ্যের তালিকায় ঠাঁই দিতে হবে ওই মন্দিরকে।

রায়ান গ্রামের স্কুলের পাশেই রয়েছে ওই পঞ্চচূড়ার মন্দির। আশি ফুট উচ্চতার ওই মন্দির ঘিরেই আশপাশের নান্দরা, কৃষ্ণপুর, নারায়ণ দিঘি, মালির বাগান, মির্জাপুরের বাসিন্দারা সারা বছর উত্‌সবে মাতেন। শ্রাবণ মাসে তো আশপাশের জেলা থেকেও আসেন অনেকে। অথচ, ওই মন্দির সংস্কার বা রক্ষণাবেক্ষণে প্রশাসনের কোনও উদ্যোগ নেই বলে গ্রামবাসীদের অভিযোগ। মন্দির পরিচালন কমিটির সভাপতি বিশ্বেশ্বর চৌধুরীর দাবি, স্থানীয় মানুষের আর্থিক সাহায্যে প্রাচীন মন্দিরটিকে কোনও রকমে টিকিয়ে রাখা হয়েছে। কিন্তু মন্দিরের স্থাপত্যের যথাযথ দেখভাল করতে আরও অনেক টাকার প্রয়োজন। তিনি জানান, গ্রামবাসীদের কাছ থেকে বছরে মাত্র কয়েক হাজার টাকা চাঁদা ওঠে। তার সঙ্গে নানা উত্‌সবে মন্দিরের আয় মিলিয়ে যা হয়, তাতে ওই বিশাল মন্দিরের দেখভাল সম্ভব নয়। তাই গ্রামবাসীরাই বৈঠক করে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, মন্দিরটি সংরক্ষণের জন্য রাজ্য হেরিটেজ কমিশনের সাহায্য চাওয়া হবে।

তবে বর্ধমানের অন্যতম ইতিহাস অনুসন্ধিত্‌সু নিশীথ দত্তের দাবি, “গ্রামে গ্রামে এমন অনেক মন্দির ছড়িয়ে রয়েছে যা বর্ধমানের মহারাজ বা তাঁদের পরিবারের কেউ স্থাপন করেছিলেন। কিন্তু গ্রামের মানুষেরা সংস্কার করতে গিয়ে অনেকক্ষেত্রেই মন্দিরের প্রচীনত্ব, গঠনশৈলি নষ্ট করে ফেলেছেন। জেলা প্রশাসনও এ ব্যাপারে তেমন উত্‌সাহী নয়।” তিনি বলেন, “এক সময় জেলা পরিষদ জেলার পুরাকীর্তিগুলির সচিত্র বিবরণ দিয়ে একটি পুস্তিুকা প্রকাশ করেছিল। এলাকাবাসী তা দেখে ওই পুরাকীর্তি সংরক্ষণে সারধান হয়েছিলেন। কিন্তু বর্তমানে আর তেমন কোনও উদ্যোগ চোখে পড়ে না। ফলে বহু ঐতিহ্য লুপ্তপ্রায়।” সংস্কারের নামে অনেক গ্রামেই মন্দির বা মসজিদ নতুন করে গড়া হচ্ছে। তাতে পুরাতন স্থাপত্যরীতির ক্ষতি হচ্ছে। এমনটা ঘটলে রাজ্য হেরিটেজ কমিশনের পক্ষেও ওই স্থাপত্য সংরক্ষণে উদ্যোগ নেওয়ার সম্ভাবনা কমে যাবে বলে নিশীথবাবুর দাবি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

rayan temple renovation work rana sengupta kalna
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE