Advertisement
০২ মে ২০২৪

শুরু হয়নি ধান কেনা, ক্ষোভ

একে খোলা বাজারে দাম নেই, তারপর সহায়ক মূল্যে ধান কেনার শিবিরও চালু হয়নি মহকুমায়। ফলে বিপাকে পড়েছেন কালনার চাষিরা। তাঁদের দাবি, উপযুক্ত দামে আমন ধান বেচতে না পারায় আলু, পেঁয়াজ ও বোরো চাষ করতে গিয়েও দেনায় জড়িয়ে পড়ছেন তাঁরা। বিষয়টি নিয়ে পড়ে নেমেছে সিপিএমের কৃষক সভাও। সোমবার অবিলম্বে সহায়ক মূল্যে ধান কেনার দাবি করে কালনা ২ ব্লকের নেপাকুলি মোড়ে রাস্তায় ধান ফেলে বিক্ষোভ দেখান তাঁরা।

কালনায় বিক্ষোভ। নিজস্ব চিত্র।

কালনায় বিক্ষোভ। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কালনা শেষ আপডেট: ০৬ জানুয়ারি ২০১৫ ০০:২০
Share: Save:

একে খোলা বাজারে দাম নেই, তারপর সহায়ক মূল্যে ধান কেনার শিবিরও চালু হয়নি মহকুমায়। ফলে বিপাকে পড়েছেন কালনার চাষিরা। তাঁদের দাবি, উপযুক্ত দামে আমন ধান বেচতে না পারায় আলু, পেঁয়াজ ও বোরো চাষ করতে গিয়েও দেনায় জড়িয়ে পড়ছেন তাঁরা। বিষয়টি নিয়ে পড়ে নেমেছে সিপিএমের কৃষক সভাও। সোমবার অবিলম্বে সহায়ক মূল্যে ধান কেনার দাবি করে কালনা ২ ব্লকের নেপাকুলি মোড়ে রাস্তায় ধান ফেলে বিক্ষোভ দেখান তাঁরা।

চাষিরা জানিয়েছেন, এ বার মাসখানেকেরও বেশি আগে জমি থেকে আমন ধান তোলা হয়েছে। সাধারণত, আমন বিক্রির টাকাতেই আলু, পেঁয়াজ বা বোরো চাষ করা হয়। কিন্তু এ বার ধান খামারে তুলে ঝাড়াই করে বিক্রি করার চেষ্টা হলে দেখা যায় তা কেনার ব্যাপারে ব্যাবসায়ীদের তেমন আগ্রহ নেই। গত বার যেখানে ধানের ৬০ কেজির বস্তা বিক্রি হয়েছিল ৮৩০ থেকে ৮৫০ টাকায়, এ বার তা বিক্রি হচ্ছে ৭১০ থেকে ৭২০ টাকায়। চাষিদের দাবি, এই দামে ধান বিক্রি করে লাভ না হওয়ায় তাঁরা নিজেদের গোলা এবং মড়াইয়ে ধান মজুত করে রাখতে বাধ্য হয়েছেন। কালনা ২ ব্লকের কেলনই ব্লকের চাষি রতন সাঁতরা জানান, সার-সহ নানা জিনিসপত্রের দাম বাড়ায় গত বছরের তুলনায় চাষের খরচ অনেকটাই বেড়েছে। অথচ ধানের দাম কম। অভাবী বিক্রি হওয়াই এ বার ধান বিক্রি করা যায় নি। তাছাড়া সরকারি ভাবে কোনও শিবির চালু না হওয়াই সহায়ক মূল্যেও ধান বিক্রি করা যায় নি। তাঁর দাবি, ধান ওঠার পরে ৮ বিঘা জমিতে পেঁয়াজ চাষ করা হয়েছে। কিন্তু তার খরচ সামলাতেও হিমসিম খেতে হচ্ছে। কালনার দফরপুর গ্রামের চাষি ভরত কয়াল, হিরন্ময় সরকারদের দাবি, জলের দরে ধান বিক্রি করতে তাঁরা চান না। তাই ধার দেনা করে আলুর চাষ করছেন। তাঁদের দাবি, কবে সহায়ক মূল্যে সরকারি ভাবে ধান কেনা হবে তা নিয়েও এলাকায় কোনও প্রচার নেই।

সোমবার বিকেলে সহায়ক মূল্যে দ্রুত ধান কেনার দাবিতে পথে নামে সিপিএমের কৃষক সভা। কালনা ২ ব্লকের নেপাকুলি মোড়ে পাকা রাস্তায় ধান ঢেলে বিক্ষোভ শুরু করেন তারা। পরে পুলিশ গিয়ে বিক্ষোভ তোলে। কৃষক সভার দাবি, কুইন্ট্যাল প্রতি ১৮৫১ টাকা সহায়ক মূল্য দিতে হবে। তাছাড়া প্রতি কুইন্ট্যালে ২০০ টাকা বোনাস দিতে হবে রাজ্য সরকারকে এবং চাষিদের অভাবী ধান বিক্রি ঠেকাতে দ্রুত সরকারি শিবির খুলতে হবে।

মহকুমা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, সহায়ক মূল্যে শিবির খোলার জন্য সপ্তাহখানেক আগে একটি প্রশাসনিক বৈঠক হয়েছে। এলাকার চালকল মালিকদের নিয়ে করা এই বৈঠকে সহায়ক মূল্যে চাষিদের ধান কেনার পাশাপাশি চালকল মালিকদের তরফে কিছু দাবিদাওয়া জানানো হয়। বৈঠকে উপস্থিত এক চালকল মালিকের অভিযোগ, চাষিদের কাছে ধান কেনার পরে সে টাকা সরকারি ভাবে পেতে দীর্ঘসময় লেগে যায়। ঠিকঠাক সময়ে টাকার জোগান না পেলে চাষিদের দাম মেটাতে সমস্যায় পড়তে হয় বলেও তাঁর দাবি।

কালনার মহকুমাশাসক সব্যসাচী ঘোষ অবশ্য আশ্বাস দিয়েছে, “১৫ দিনের মধ্যে যাতে চালকল মালিকেরা টাকা পেয়ে যান সে ব্যাপারে জেলায় জানানো হয়েছে।” মহকুমাশাসকের দাবি সহায়ক মূল্যে চাষিদের ধান কিনতে শীঘ্রই শিবির শুরু করবে ইসিএসসি এবং ডিসিএফএস নামে সরকারি দুটি সংস্থা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

paddy buying anger kalna
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE