Advertisement
০২ মে ২০২৪

সামডিহিতে ফের ধস, পুনর্বাসন চেয়ে বিক্ষোভ

ফের ধসের আতঙ্ক সামডিহিতে। আচমকা মাটি ধসে তৈরি হওয়া গর্ত থেকে ধোঁয়া বেরোল সালানপুর ব্লকের এই গ্রামে। রবিবার রাতে গ্রামের মুচিপাড়ায় ধস ভরাট করতে গেলে বাধা দেওয়া হয় ইসিএলের কর্মীদের। অন্ধকারে কোনও মতে গর্ত ভরাট করা হলে পরে তা বিপজ্জনক হতে পারে, দাবি করেন বাসিন্দারা।

মাটি ধসে তৈরি হওয়া এই গর্ত থেকেই বেরোয় ঝাঁঝালো গ্যাস। —নিজস্ব চিত্র।

মাটি ধসে তৈরি হওয়া এই গর্ত থেকেই বেরোয় ঝাঁঝালো গ্যাস। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
আসানসোল শেষ আপডেট: ০৪ মার্চ ২০১৪ ০৬:৪৬
Share: Save:

ফের ধসের আতঙ্ক সামডিহিতে। আচমকা মাটি ধসে তৈরি হওয়া গর্ত থেকে ধোঁয়া বেরোল সালানপুর ব্লকের এই গ্রামে। রবিবার রাতে গ্রামের মুচিপাড়ায় ধস ভরাট করতে গেলে বাধা দেওয়া হয় ইসিএলের কর্মীদের। অন্ধকারে কোনও মতে গর্ত ভরাট করা হলে পরে তা বিপজ্জনক হতে পারে, দাবি করেন বাসিন্দারা। সোমবার সকালে মাটি-বালি দিয়ে গর্ত ভরাট করা হয়।

এলাকার বাসিন্দারা জানান, রবিবার রাত সাড়ে ৯টা নাগাদ তাঁরা ধসের আওয়াজ পান। বাড়ির বাইরে বেরিয়ে দেখেন, বেশ কিছুটা জমিতে গর্ত তৈরি হয়েছে। ব্যাস প্রায় পাঁচ ফুট হলেও গর্তটি কতটা গভীর, তা বোঝা যাচ্ছে না। সেই সময়ে গর্ত দিয়ে গলগল করে ঝাঁঝালো গন্ধযুক্ত ধোঁয়া বেরোচ্ছিল। খবর ছড়িয়ে পড়তেই ধসের আতঙ্কে বাড়ি ছেড়ে বেরিয়ে পড়েন এলাকার মানুষজন।

রাতেই খবর পান আসানসোলের মহকুমাশাসক অমিতাভ দাস। তিনি জানান, প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ইসিএল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেন। রাতেই ইসিএলের তরফে গর্ত ভরাটের জন্য যন্ত্র পাঠানো হয় ঘটনাস্থলে। কিন্তু বাসিন্দারা কাজ করতে দেননি তখন। তাঁদের অভিযোগ, রাতের অন্ধকারে ঠিক মতো কাজ হবে না। কোনও রকমে পরিস্থিতি ধামাচাপা দিয়ে সরে পড়তে চাইছে প্রশাসন। বাসিন্দাদের বাধায় যন্ত্র নিয়ে ফিরে যান কর্মীরা।

সোমবারও এলাকার মানুষজন ছিলেন ক্ষুব্ধ। সকালে ঘটনাস্থলে জড়ো হন গ্রামের মুচিপাড়া, ময়রাপাড়া, লাহাপাড়া, মোদকপাড়ার বাসিন্দারা। তাঁরা জানান, গোটা গ্রামের লোকজনই ধসের আতঙ্কে ভুগছেন। ধসপ্রবণ এই এলাকার বাসিন্দাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করার কথা থাকলেও এখনও পর্যন্ত তা হয়নি। রবিবার যেখানে ধস নেমেছে তার কিছুটা দূরেই থাকেন অনাথ মাজি। তিনি বলেন, “রাতবিরেতে এ ভাবে ধস নামলে খুব ভয় হয়। ভাল করে ভরাট না করা হলে গোটা এলাকা তলিয়ে যাবে।” আর এক বাসিন্দা স্বপন মণ্ডল অভিযোগ করেন, “পুনর্বাসনের কথা জানানো হলেও প্রশাসনের তরফে আর কোনও হেলদোল দেখছি না।”

ঘটনাস্থলে গ্রামবাসীদের জমায়েত চলাকালীনই সেখানে পৌঁছন স্থানীয় সামডিহি কোলিয়ারির ম্যানেজার মহম্মদ মুসা ও নিরাপত্তা আধিকারিক রাজা পাল। তাঁদের ঘিরে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন বাসিন্দারা। তাঁরা দাবি তোলেন, অবিলম্বে এলাকাবাসীর পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে হবে। বেশ কিছুক্ষণ বিক্ষোভের পরে ধস এলাকা মাটি ভরাটের কাজ শুরু করতে দেন বাসিন্দারা।

প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৯৯৮ সাল থেকে সামডিহি এলাকায় একের পর এক ধসের ঘটনা ঘটছে। আসানসোল-রানিগঞ্জ খনি অঞ্চলের ধস কবলিত এলাকার বাসিন্দাদের পুনর্বাসন দেওয়ার জন্য কয়লা মন্ত্রক ২০০৯ সালে অর্থ বরাদ্দ করেছে। এই কাজের দায়িত্বে রয়েছে এডিডিএ। এলাকার যুব তৃণমূল নেতা পাপ্পু উপাধ্যায় অভিযোগ করেন, সেই কাজ একচুলও এগোয়নি।

এডিডিএ-র চেয়ারম্যান নিখিল বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে চেষ্টা করেও এ দিন যোগাযোগ করা যায়নি। আসানসোলের মহকুমাশাসক অমিতাভ দাস জানান, তিনি সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে নিয়ে বৈঠক করে সিদ্ধান্ত নেবেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

samdihi avalanche
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE