চিত্তরঞ্জনে বাবুল সুপ্রিয়। —নিজস্ব চিত্র।
কারখানার পুনরুজ্জীবনের ব্যাপারে ‘যথাযথ জায়গায়’ তদ্বির করবেন, রূপনারায়ণপুরের বন্ধ হিন্দুস্তান কেবলস কারখানার শ্রমিক-কর্মীদের সঙ্গে দেখা করে বুধবার এমনই আশ্বাস দিলেন আসানসোলের বিজেপি সাংসদ বাবুল সুপ্রিয়।
লোকসভা ভোটের প্রচারের সময়েই কেবলস কারখানার পুনরুজ্জীবন প্রক্রিয়া এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য বাবুলের কাছে দরবার করেছিলেন কারখানার কর্মীরা। ভোটে জিতলে এ ব্যাপারে উদ্যোগী হওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তিনি। সাংসদ হওয়ার পরে এ বার ফের আসানসোলে পৌঁছেই বাবুল ওই কারখানায় যান। প্রথমে সংস্থার অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন এবং পরে শ্রমিক সংগঠনগুলির নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি। বাবুল জানান, এই কারখানার পুনরুজ্জীবন তাঁর কাছে একটি বড় ‘চ্যালেঞ্জ’।
এ দিন দুপুরে বাবুল প্রথমে বার্নপুরে ইস্কো কারখানায় আধিকারিকদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে যান। সেখান থেকে যান চিত্তরঞ্জন রেল কারখানায়। বিকেলে পৌঁছন হিন্দুস্তান কেব্লসে। তিনি জানান, কেবলস কারখানা অধিগ্রহণের বিষয়ে প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের একটি প্রস্তাব এসেছে। সেই প্রস্তাব যাতে গৃহীত হয়, সে ব্যাপারে তিনি ইতিমধ্যেই সচেষ্ট হয়েছেন। বাবুল বলেন, “এ ব্যাপারে দিল্লিতে যথাযথ জায়গায় তদ্বির করেছি। আশা করছি, শূন্য হাতে ফিরব না।” সামনেই বাজেট অধিবেশন শুরু হবে। অধিবেশন চলাকালীন সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীর কাছে আবেদন করবেন বলেও জানান তিনি। বাবুল বলেন, “সমস্ত শ্রমিক সংগঠনের কাছে আমি আবেদন করেছিলাম, আপনারা ঐক্যবদ্ধ হয়ে লড়াই করুন। আপনাদের পাশে থাকব। পাঁচটি শ্রমিক সংগঠনের নেতারা যৌথ ভাবে আমাকে চিঠি লিখেছেন। আমি তাঁদের দেওয়া কথা রাখার চেষ্টা করব।”
১৯৫২ সালে তৈরি হিন্দুস্থান কেবলস কারখানা ধুঁকতে শুরু করে ১৯৯৯ সাল থেকে। ২০০৩ থেকে কারখানার উৎপাদন প্রায় বন্ধই হয়ে যায়। টেলিফোনে ব্যবহারের জন্য বিশেষ কেব্ল তৈরি হত এই সংস্থায়। কিন্তু বাজার পড়ে যাওয়ায় এই কারখানার উৎপাদন ক্রমশ কমতে শুরু করে। কারখানার পুনরুজ্জীবনের জন্য বিআইএফআর এবং বিআরপিএসই-র একাধিক বৈঠক হয়েছে। বর্তমানে কারখানাটি একেবারে উৎপাদন শূন্য। অবশেষে এই কারখানা অধিগ্রহণের ইচ্ছাপ্রকাশ করে অর্ডিন্যান্স ফ্যাক্টরি বোর্ড। এ বিষয়ে অনেকদূর কথাবার্তা এগোনোর পরেও তা ক্যাবিনেটের অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে।
প্রচারের সময়ে দেওয়া প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী বাবুল কারখানা পুনরুজ্জীবন প্রক্রিয়া নিয়ে আগ্রহ দেখানোয় খুশি হিন্দুস্থান কেব্লসের শ্রমিক-কর্মীরা। এ দিন বৈঠক শেষে সংস্থার অফিসার্স অ্যাসোশিয়েসনের নেতা শুভজিৎ মল্লিক বলেন, “এই কারখানা অধিগ্রহণের ব্যাপারে যে প্রস্তাব এসেছে, সেই প্রক্রিয়া যাতে দ্রুত হয়, তা দেখার জন্য সাংসদকে আবেদন করেছি।” আইএনটিইউসি নেতা ঊমেশ ঝা বলেন, “আমরা আশা করব, অধিগ্রহণের প্রস্তাবটি নিয়েই সাংসদ তদ্বির করবেন। সেটুকু করলেই আমরা খুশি।” সিটু নেতা প্রদীপ সাহার আবার বক্তব্য, “কারখানার পুনরুজ্জীবনের তদ্বিরের পাশাপাশি শ্রমিক-কর্মীদের বকেয়া মেটানোর বিষয়েও সাংসদ ইতিবাচক ভূমিকা নেবেন বলে আশা রাখি।” বিএমএস নেতা বিপ্লব রায় বলেন, “এত দিন যা হয়নি, আসানসোলের সাংসদ সেই পদক্ষেপ করছেন। আমরা আশাবাদী, এ বার কিছু একটা হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy