Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

নকশাল নেতা অলীক ১০ দিন পুলিশি হেফাজতেই

বৃহস্পতিবার রাতে ভুবনেশ্বরে কলিঙ্গ হাসপাতালের সামনে থেকে অলীককে গ্রেফতার করে বারুইপুর জেলা পুলিশ। শুক্রবার রাতে বিমানে কলকাতায় আনা হয় তাঁকে।

অলীক চক্রবর্তীকে ১০ দিন পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিলেন বারুইপুর আদালতের বিচারক।

অলীক চক্রবর্তীকে ১০ দিন পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিলেন বারুইপুর আদালতের বিচারক।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৩ জুন ২০১৮ ০৪:১২
Share: Save:

ভাঙড়ে পাওয়ার গ্রিড বিরোধী আন্দোলনের নেতা অলীক চক্রবর্তীকে ১০ দিন পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিলেন বারুইপুর আদালতের বিচারক। পাশাপাশি তাঁর উপযুক্ত চিকিৎসারও নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। আদালতের নির্দেশ, পুলিশি হেফাজতে থাকাকালীন নকশাল নেতার স্বাস্থ্য নিয়ে নিয়মিত রিপোর্ট পেশ করতে হবে তদন্তকারী অফিসারকে। চিকিৎসকের পরামর্শ মতো ওষুধ-পথ্যের ব্যবস্থাও করতে হবে।

বৃহস্পতিবার রাতে ভুবনেশ্বরে কলিঙ্গ হাসপাতালের সামনে থেকে অলীককে গ্রেফতার করে বারুইপুর জেলা পুলিশ। শুক্রবার রাতে বিমানে কলকাতায় আনা হয় তাঁকে। কয়েক ঘণ্টা বারুইপুর থানায় রাখার পরে ভোরে বারুইপুর আদালতের লকআপে নিয়ে যাওয়া হয়। দুপুরে অতিরিক্ত মুখ্য বিচার বিভাগীয় বিচারক অয়ন বন্দ্যোপাধ্যায়ের এজলাসে তোলা হয় তাঁকে। এক তদন্তকারী জানান, ভুবনেশ্বর থেকে কলকাতার পথে অলীক পাওয়ার গ্রিড বিরোধী আন্দোলনের যৌক্তিকতা নিয়ে অনেক কথা বলেন। খাতায় ছবি এঁকে বোঝানোর চেষ্টা করেন।

ভাঙড়-কাণ্ডে অলীকের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ, খুন, খুনের চেষ্টা-সহ ৪১টি মামলা ঝুলছে। আরও ২৬টি মামলায় তিনি জড়িত বলে পুলিশের তরফে এ দিন আদালতকে জানানো হয়েছে।

এ দিন বারুইপুর আদালত চত্বরে বিক্ষোভ দেখান নকশাল নেতারা। গাড়িতে ওঠার সময়ে অলীক বলেন, ‘‘এ ভাবে আন্দোলন বন্ধ করা যাবে না।’’ একই কথা বলেন ভাঙড় আন্দোলনের আর এক নেত্রী, অলীকের স্ত্রী শর্মিষ্ঠা চৌধুরীও।

পুলিশি হেফাজতে থাকাকালীন তাঁর সঙ্গে দেখা করার আবেদন করেন শর্মিষ্ঠা। সেই আর্জি খারিজ হয়ে যায়। তবে তদন্তকারী অফিসারের নির্ধারিত সময় মতো অলীকের দাদা মানস চক্রবর্তী তাঁর দেখা করতে পারবেন বলে অনুমতি দেন বিচারক। অলীককে জেরা করার সময়ে তাঁর আইনজীবীও থাকতে পারবেন।

অলীকের আইনজীবী সুশীল চক্রবর্তী বলেন, ‘‘মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে গ্রিড বিরোধী আন্দোলন বন্ধের জন্য পুলিশ অলীককে ধরেছে। উনি খুবই অসুস্থ। আলসারে ভুগছেন। পুলিশ ওষুধ পর্যন্ত দিচ্ছে না।’’ এসএসকেএমে অলীকের চিকিৎসার আবেদন করেন তাঁর আইনজীবী। তা খারিজ করে পুলিশকেই ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন বিচারক। অলীককে তাঁর স্বাস্থ্য নিয়ে প্রশ্ন করেন বিচারক। কোন চিকিৎসক তাঁর রোগ নির্ণয় করেছিলেন, তা জানতে চান। অলীক সরকারি হাসপাতালের এক ডাক্তারের নাম করেন। বারুইপুর পুলিশ জেলার সুপার অরিজিৎ সিংহ পরে বলেন, ‘‘চিকিৎসকের পরামর্শ মতো অলীকের কাছে থাকা নথি মতো সব ওষুধ-খাবারই দেওয়া হয়েছে।’’

ভাঙড়ে খুনের ঘটনায় ধৃত তৃণমূল নেতা আরাবুল ইসলাম অবশ্য চিকিৎসকের পরামর্শে গত কয়েক দিন এসএসকেএমে ভর্তি ছিলেন। সুগার বাড়ায় পুলিশি হেফাজত থেকে তাঁকে পাঠানো হয়েছিল হাসপাতালে। অন্য দিকে, ভাঙড়ে নানা ধরনের সেবাকাজের সঙ্গে জড়িত ডাক্তার রাতুল বন্দ্যোপাধ্যায় শনিবার জামিনে ছাড়া পেলেন। রাষ্ট্রদ্রোহের মামলায় দু’মাস আগে তাঁকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। পুলিশের দাবি, সশস্ত্র আন্দোলনে রাতুল জড়িত থাকার যথেষ্ট তথ্যপ্রমাণ মিলেছে। তদন্তে যা যা জানার ছিল, রাতুলের কাছ থেকে তা জানা হয়ে গিয়েছে। ইউএপিএ মামলায় অভিযুক্ত শঙ্কর দাস, বিশ্বজিৎ হাজরা, অমিতাভ ভট্টাচার্য প্রমুখও জামিন পেয়েছেন। তবে ভাঙড় গণআন্দোলনের নেতা অলীক চক্রবর্তীর মুক্তির দাবিতে কাল, সোমবার পথে নামার ডাক দিয়েছে ভাঙড় সংহতি কমিটি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE