Advertisement
E-Paper

রেলে-সড়কপথে অবরোধ, অশান্তি এ বার কলকাতা-সহ বঙ্গেও

সর্বত্রই জনতার হাতে ছিল জাতীয় পতাকা। কোথাও কোথাও ওই বিল-বিরোধী আন্দোলন হিংসাত্মক রূপ নেওয়ায় ভোগান্তির মুখে পড়েন অনেকেই।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৪ ডিসেম্বর ২০১৯ ০৪:৩৪
নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে কলকাতায় বিক্ষোভ। ছবি: সুমন বল্লভ।

নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে কলকাতায় বিক্ষোভ। ছবি: সুমন বল্লভ।

অসম-সহ উত্তর-পূর্বাঞ্চল প্রথম থেকেই উত্তপ্ত। সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদে এ বার অশান্তি শুরু হল কলকাতা-সহ পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন প্রান্তেও। সর্বত্রই জনতার হাতে ছিল জাতীয় পতাকা। শুক্রবার কোথাও কোথাও ওই বিল-বিরোধী আন্দোলন হিংসাত্মক রূপ নেওয়ায় ভোগান্তির মুখে পড়েন অনেকেই।

কলকাতার বিভিন্ন প্রান্তে দুপুর থেকে দফায় দফায় রাস্তা অবরোধ হয়। দুপুরে ধর্মতলা থেকে মিছিল যায় গাঁধী-মূর্তি পর্যন্ত। গাঁধী-মূর্তির পাদদেশে ঘণ্টাখানেক অবস্থানও হয়। আড়াইটে থেকে পার্ক সার্কাসের সাতমাথার মোড় অবরোধ করেন কয়েক হাজার মানুষ। টানা কয়েক ঘণ্টা অবরোধের জেরে যানজট সামলাতে নাজেহাল হয়ে যায় পুলিশ। দুপুরে মধ্য কলকাতার ওয়েলিংটন মোড়ে অবরোধের জেরে বিভিন্ন রাস্তায় যানজট হয়। অবরোধ হয় বেলগাছিয়া এলাকাতেও। রাজারহাটে লাউহাটি মোড়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের অবরোধ ঘিরে উত্তেজনা ছড়ায়।

দুপুরে হাওড়া-মেচেদা শাখার রেললাইনে অবরোধ শুরু হয়। আটকে পড়ে কান্ডারি এক্সপ্রেস, করমণ্ডল এক্সপ্রেস। বন্ধ হয়ে যায় লোকাল ট্রেনও। বিভিন্ন ট্রেনে আটকে পড়া যাত্রীদের নামিয়ে দেওয়া হয়। পাথর ছোড়া হয় রেলের কেবিন লক্ষ্য করে। উলুবেড়িয়ায় ট্রেন আটকে ভাঙচুর চলে। ট্রেনে পাথর ছোড়া হয়। মুর্শিদাবাদের বেলডাঙাতেও স্টেশন ও প্ল্যাটফর্মের দোকান ভাঙচুর করে বিক্ষুব্ধ জনতা। গোলমালের জেরে কৃষ্ণনগর-লালগোলা শাখায় ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। তার জেরে হাজারদুয়ারি এক্সপ্রেস বাতিল করা হয়। বেশি রাতেও ওই শাখায় ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়নি। ছ’নম্বর জাতীয় সড়কেও অবরোধ হয়। তার ফলে আটকে পড়েন বহু মানুষ।

প্রতিবাদ: সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ পার্ক সার্কাসে। —নিজস্ব চিত্র

বিক্ষোভের আঁচ পড়ে উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনাতেও। বারাসতের কাজিপাড়ায় লোকাল ট্রেনে পাথর ছোড়া হয়। বেলা সাড়ে ৩টে থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত বেলিয়াঘাটায় টাকি রোডে অবরোধ চলে। আমডাঙা, দত্তপুকুর, শাসনেও বিক্ষোভ হয় দফায় দফায়। অবরোধের জেরে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কেও যান চলাচলে প্রভাব পড়ে। বিড়া ও গুমায় ৩৫ নম্বর জাতীয় সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ হয়। সন্ধ্যায় দত্তপুকুর থানার তাড়িপুকুরে দু’টি গাড়িতে আগুন লাগানো হয় বলে অভিযোগ। বারুইপুর ও ডায়মন্ড হারবার শাখার বাসুলডাঙা স্টেশনে বিকেলে ঘণ্টা আড়াই অবরোধ চলে।

বিকেলে বীরভূমের নলহাটিতে ৬০ নম্বর জাতীয় সড়ক দু’ঘণ্টা অবরোধ করে রাখা হয়। টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে, জাতীয় পতাকা হাতে বিক্ষোভ দেখায় জনতা। মিছিলের জেরে আসানসোলেও জিটি রোডে তীব্র যানজট হয়। রেলপাড় এলাকায় প্রতিবাদ মিছিল বার করে কংগ্রেস। সংশোধিত আইনের প্রতিবাদে বাঁকুড়ায় পথে নামে এসইউসি।

বিক্ষোভে মুর্শিদাবাদ। ছবি: অর্কপ্রভ চট্টোপাধ্যায়।

ক্ষোভের আঁচ উত্তরবঙ্গেও। উত্তর দিনাজপুরের ইসলামপুর ও চোপড়া-সহ বিভিন্ন এলাকায় উত্তেজনা ছড়ায়। চোপড়ার পিরসাহেব মোড় এলাকায় মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে হিন্দু-মুসলিম ঐক্য সংগঠন। এ দিন দাড়িভিট এলাকায় বিলের বিরোধিতা করে ক্ষোভ দেখানো হয়। পাকড়িগুড়ি ও বারবিশায় আটকে পড়ে বহু ট্রাক।

অন্য দিকে, বিলের সমর্থনে রানিগঞ্জে মিছিল করে বিজেপি। তবে এডিজি (আইনশৃঙ্খলা) জ্ঞানবন্ত সিংহ সন্ধ্যায় নবান্নে বলেন, ‘‘এমন কিছুই হয়নি। উলুবেড়িয়ায় আরপিএফ ছিল না। রেল আমাদের অনুরোধ করায় পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি আয়ত্তে আনে।’’ বেলডাঙা থানায় হামলা হয়েছে কি না, তা জানতে চাওয়া হলে এডিজি (আইনশৃঙ্খলা) বলেন, ‘‘হ্যাঁ হয়েছে। ইট পড়েছে।’’

Citizenship Amendment Act CAB
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy