শেষ লগ্নেও প্রশ্নবিহীন রইল না পঞ্চায়েত ভোট!
ব্যালট পেপার ছিনতাই থেকে ছিঁড়ে ফেলা, এমনকী গণনাকেন্দ্রেই ছাপ মেরে ব্যালট বাতিল করার অভিযোগ বৃহস্পতিবার তুলেছে বিরোধীরা। শুধু তারা নয়, গণনায় ‘সমস্যা’র কথা জানিয়ে উত্তর ২৪ পরগনা, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, নদিয়া, পূর্ব বর্ধমানের কয়েকজন পর্যবেক্ষকও রাজ্য নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ করেন বলে সূত্রের খবর। কিন্তু সেই সব অভিযোগকে ‘গুরুত্ব’ না দিয়ে কমিশনের তরফে গণনা শেষ করার নির্দেশ দেওয়া হয় বলে জানা গিয়েছে। রাজনৈতিক মহলের মতে, এমন ঘটনা নজিরবিহীন।
এ দিন নদিয়ার মাজদিয়াতে কৃষ্ণগঞ্জ ব্লকের ভোটগণনা চলাকালীন গণনাকেন্দ্র কার্যত ঘিরে ফেলে উত্তেজিত জনতা। অভিযোগ, তাদের কেউ কেউ ভিতরে ঢুকে বিরোধী প্রার্থীদের পাওয়া ব্যালটে ছাপ মারতে থাকে। যাতে সেগুলি বাতিল হয়ে যায়। সূত্রের খবর, সংশ্লিষ্ট পর্যবেক্ষক কমিশনে ফোন করে জীবনহানির আশঙ্কার কথা জানান। এর পরেই জেলাশাসক এবং পুলিশ সুপারকে ব্যবস্থা নিতে বলেন কমিশনার অমরেন্দ্রকুমার সিংহ। কিন্তু তার পরেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসেনি। ওই পর্যবেক্ষক আবার কমিশনারকে ফোন করেন। জানান, জেলাশাসক ও পুলিশ সুপারের আশ্বাস সত্ত্বেও বাহিনীর দেখা নেই। ফের জেলা প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করেন কমিশনার। বলেন, পর্যবেক্ষক-সহ গণনা কর্মীদের যেন কোনও ক্ষতি না হয়। এর কিছু পরেই অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের নেতৃত্বে বাহিনী গণনাকেন্দ্রে যায়। প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টা পর সাড়ে ৩টে নাগাদ ওইকেন্দ্রে গ্রাম পঞ্চায়েতের দু’টি আসন বাদ দিয়ে ফের গণনা শুরু হয়। জেলাশাসকের রিপোর্ট পাওযার পরেই ওই দুই আসন সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নেবে কমিশন।
সূত্রের খবর, মাজদিয়ার পাশাপাশি কোচবিহারের দিনহাটার বড় আটিয়াবাড়ি, তারকেশ্বরের ভঞ্জিপুরে ব্যালট পেপার নয়ছয়, ডোমজুড়ে ব্যালট পেপার ছিনতাই-সহ প্রায় ৬০টি অভিযোগ আসে কমিশনের কাছে। উত্তর ২৪ পরগনার বারাসত-১, হাবরা এবং গাইঘাটার ব্লকে গণনাকেন্দ্রে কর্মীদের উপর ‘চাপ’ তৈরির অভিযোগ জমা পড়ে কমিশনে। কমিশন সূত্রে দাবি করা হচ্ছে, সব ক’টি ক্ষেত্রেই জেলা প্রশাসনকে উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু কমিশন নিজে কী করল, প্রশ্ন বিরোধীদের। তারা কেন গণনা স্থগিত না করে উল্টে দ্রুত গণনা শেষ করার নির্দেশ দিল, সেই প্রশ্নও উঠেছে।
রাজ্য নির্বাচন কমিশন সূত্রে বলা হচ্ছে, গণনা নির্বিঘ্ন করতে নিরাপত্তা বন্দোবস্ত থেকে অবশ্যপালনীয় কাজ— সব বিষয়েই খুঁটিনাটি নির্দেশিকা জারি করা হয়েছিল। কিন্তু বাস্তবে কাজের কাজ কিছুই হয়নি। ফলে সব মিলিয়ে তারা ‘হতাশ’।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy