Advertisement
০৯ মে ২০২৪
State News

‘গাড়ি’ প্রতীকে লড়াই তাপসীর বাবার

এক সময় একটি গাড়ি কারখানা নিয়ে শাসক-বিরোধী দ্বৈরথ ঝড় তুলেছিল এ তল্লাটে। তারপর থেকে যতবার ভোট এসেছে, সিঙ্গুরে আলোচনায় ফিরে এসেছে সেই কারখানা। সেই ঝড় থেমেছে।

প্রতীক হাতে মনোরঞ্জন মালিক। —নিজস্ব চিত্র।

প্রতীক হাতে মনোরঞ্জন মালিক। —নিজস্ব চিত্র।

গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায়
সিঙ্গুর শেষ আপডেট: ০৫ মে ২০১৮ ১০:৪৫
Share: Save:

ঘুরে-ফিরে সিঙ্গুরে ফের চর্চায় ‘গাড়ি’!

এক সময় একটি গাড়ি কারখানা নিয়ে শাসক-বিরোধী দ্বৈরথ ঝড় তুলেছিল এ তল্লাটে। তারপর থেকে যতবার ভোট এসেছে, সিঙ্গুরে আলোচনায় ফিরে এসেছে সেই কারখানা। সেই ঝড় থেমেছে। এ বার পঞ্চায়েত ভোটে কারখানা নেই। কিন্তু হঠাৎ আলোচনায় ফের এক ‘গাড়ি’র আমদানি হয়েছে এখানে। তাতে ঝড় না-উঠলেও শোরগোল প্রবল।

ন্যানো কারখানার বিরোধিতায় ১২ বছর আগে যিনি তৃণমূলে ভিড়েছিলেন, এ বার তৃণমূলের বিরোধিতায় নির্দল হিসেবে ‘মোটরগাড়ি’ প্রতীকে তিনিই ভোট-ময়দানে! তিনি— সিঙ্গুরের তাপসী মালিকের বাবা মনোরঞ্জন মালিক।

এত কিছু থাকতে ‘গাড়ি’ প্রতীক?

‘‘আমি তো আর যেচে নিইনি, নির্বাচন কমিশন দিয়েছে,’’ বলছেন মনোরঞ্জন। স্থানীয় তৃণমূল নেতাকর্মীদের একাংশ দাবি করছেন, এখানে গাড়ি কারখানা কল্কে পায়নি। ভোটে ‘গাড়ি’ প্রতীকও কল্কে পাবে না। জমি আন্দোলনের নেতা, হরিপালের তৃণমূল বিধায়ক বেচারাম মান্না বলেন, ‘‘কোন নির্দল কোন প্রতীকে কোথায় দাঁড়াচ্ছেন, সে সব এখন দেখার সময় কোথায়?’’

২০০৬ সালে ন্যানোর জন্য কৃষিজমি অধিগ্রহণ করে বাম সরকার। ওই বছরেরই শেষ দিকে অধিগৃহীত জমি থেকে তাপসীর দগ্ধ মৃতদেহ মিলেছিল। ধর্ষণ করে তাঁকে খুন করা হয়েছে, তৃণমূলের এই অভিযোগে তোলপাড় হয়েছিল রাজ্য। অভিযোগ তুলেছিলেন মনোরঞ্জনও। সেই মামলা চলছে। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টে জমি-মামলার নিষ্পত্তি হয়ে গিয়েছে। আদালতের নির্দেশ মতো সেই জমি ফিরেও পেয়েছেন গ্রামবাসী। গাড়ি কারখানা নিয়ে আলোচনাও ফিকে হয়ে গিয়েছে অনেকটাই। কিন্তু ‘গাড়ি’র আলোচনা আবার ফিরিয়ে আনলেন মনোরঞ্জন।

সিঙ্গুরের একটি জেলা পরিষদ আসনে এ বার তৃণমূল প্রার্থী হিসেবেই প্রথমে মনোনয়ন জমা দেন তাপসীর বাবা। কিন্তু দল তাঁকে প্রতীক দেয়নি। মনোরঞ্জনও মনোনয়ন প্রত্যাহার করেননি। হয়ে গিয়েছেন নির্দল। মনোরঞ্জনের দাবি, ‘‘আমার মেয়েকে খুনে অভিযুক্ত সিপিএমের দেবু মালিকের এক নিকটাত্মীয়কে এখানকার একটি পঞ্চায়েতে প্রার্থী করেছে দল। এর প্রতিবাদেই লড়া। মনে হয় বিধায়ককে পাশে পাব।’’

বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য অবশ্য দাবি করেছেন, ‘‘মনোরঞ্জনবাবু কী বলেছেন, জানা নেই। উনি নির্দল, ওঁর হয়ে প্রচারে যাওয়া সম্ভব নয়।’’ আর মনোরঞ্জনের প্রতিবাদ নিয়ে বেচারামের দাবি, ‘‘ভিত্তিহীন কথা। ওই প্রার্থী দেবু মালিকের আত্মীয় নন।’’

এই কাজিয়ায় মজা পেয়েছে সিপিএম। এলাকার এক প্রবীণ নেতা বলছেন, গাড়ি কিছুতেই পিছু ছাড়ছে না সিঙ্গুরের!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE