Advertisement
E-Paper

একজোট গ্রাম ফিরিয়ে দিচ্ছে নেতাদের

শুধু মুখেই বলছেন না, কাজেও করে দেখাচ্ছেন ওঁরা। জেলা নেতাদের কেউ হুমকি দিয়েছেন, কেউ বা চা খাইয়ে বিনয়ের সঙ্গে মোড় থেকেই বিদায় করে দিয়েছেন।

অনির্বাণ রায়

শেষ আপডেট: ০৮ এপ্রিল ২০১৮ ০৩:৪৪
হাজির: মনোনয়নপত্র জমা দিতে এসেছেন বারোপেটিয়া এলাকার বাসিন্দারা। —নিজস্ব চিত্র

হাজির: মনোনয়নপত্র জমা দিতে এসেছেন বারোপেটিয়া এলাকার বাসিন্দারা। —নিজস্ব চিত্র

জেলা সদর জলপাইগুড়ি লাগোয়া জোড়াবাঁধ। বাঁধের থেকে বাঁ দিক ঘুরে রাস্তা ঢুকে গিয়েছে বারোপেটিয়া নতুনবস গ্রামের ভিতর। এই রাস্তাতেই আগামী সোমবার পর্যন্ত পাহারায় থাকবেন তপন, মজিদুর, দুলাল, আব্বাসরা। কেউ সিপিএম, কেউ কংগ্রেস বা বিজেপির স্থানীয় মুখ। সকলের একটাই লক্ষ্য: মনোনয়ন জমা শেষ না হওয়া অবধি নিজের দলের জেলা নেতারা যেন গ্রামে ঢুকতে না পারেন!

শুধু মুখেই বলছেন না, কাজেও করে দেখাচ্ছেন ওঁরা। জেলা নেতাদের কেউ হুমকি দিয়েছেন, কেউ বা চা খাইয়ে বিনয়ের সঙ্গে মোড় থেকেই বিদায় করে দিয়েছেন। তাঁদের আবেদন একটাই, “গ্রামে আপনাদের নাক গলানোর দরকার নেই।’’ কেন এমন করছেন ওঁরা? তপন, মজিদুরদের স্পষ্ট কথা, ‘‘তৃণমূলকে হারাতে হলে একজোট হতে হবে। ওই নেতারা এলে তা সম্ভব নয়। তৃণমূলকে কী করে হারাতে হবে, তা আমরা বুঝে নেব।”

কৌশলও তৈরি করে ফেলেছেন ওঁরা— একের বিরুদ্ধে এক প্রার্থী। মজিদুর, দুলালদের দাবি, “বিরোধীদের মধ্যে কয়েকটি জায়গায় বিজেপির শক্তি বেড়েছে। সেখানে বিজেপির প্রার্থীকে সমর্থন করা হচ্ছে। সব মিলিয়ে গ্রাম পঞ্চায়েতের ন’টি আসনে। বাকি তিন আসনে বিরোধী তিন দল মিলে নির্দল প্রার্থী ঠিক করেছি।’’ ছুঁৎমার্গ ভুলে এই জোটবদ্ধ লড়াইয়ে পদ্ম চিহ্ন নিয়ে প্রার্থী হয়েছেন পরিচিত বাম-কংগ্রেস নেতারাও।

কেন জোটবদ্ধ হলেন তাঁরা? তিন দলেরই যুক্তি, ‘‘সারা বছর সকলেই মার খাই তৃণমূলের হাতে। এক তো হতেই হবে।’’ বামপন্থী কর্মী তপন বলেন, “দলের প্রতীকে প্রার্থী দিলে জিততে পারব, এমন ক্ষমতা নেই। উল্টে ভোট কেটে ঘাসফুল জিতবে। তাই দলীয় প্রতীক ছেড়ে একজোট হয়েছি, যাতে ভোট ভাগ না হয়।’’

বিজেপির প্রতীকেই বেশি প্রার্থী রয়েছে। বিজেপির জেলা সম্পাদক বাপি গোস্বামীর কথায়, “ক’টা আসনে প্রার্থী দেওয়া হবে, কে প্রার্থী হবেন, তা গ্রামের লোকেরই ঠিক করেছে। আমরা কিছু চাপিয়ে দেইনি।” উল্টো দিকে, একদা লালদুর্গ বলে পরিচিত বারোপেটিয়ার দায়িত্বপ্রাপ্ত সিপিএম নেতা তমাল চক্রবর্তী জানিয়েছেন, ওখানে তাঁরা কোনও প্রার্থী খুঁজে পাননি। জেলা কংগ্রেস সভাপতি নির্মল ঘোষদস্তিদারেরও এক কথা।

এই বিরোধী জোটকে কটাক্ষ করছেন তৃণমূল নেতারা। জেলা তৃণমূল সভাপতি সৌরভ চক্রবর্তী বলেন, “এই যে ওঁরা একে ‘প্রতিরোধের গ্রাম’, সেই কথাটাই হাস্যকর। ঘটনা হল, বিজেপির সঙ্গে বাম-কংগ্রেসের যে নির্লজ্জ নীতিহীন জোট হয়েছে, তা ওই গ্রামেই প্রমাণ।”

বারোপেটিয়ার বিরোধীরা অবশ্য এই কথা হেসে উড়িয়ে দিয়েছেন। কংগ্রেস কর্মী সাত্তার বলেন, “আমরা যারা রোজ তৃণমূলের কাছে মার খাই, তারা একজোট হয়েছি।’’ তার পরে বলেন, ‘‘একের এক বিরুদ্ধে এক প্রার্থী হলে দেখব কী করে জেতে!”

West Bengal Panchayat Elections 2018 Panchayat Poll TMC BJP
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy