Advertisement
E-Paper

শান্তার উত্থানেই কি ক্ষুব্ধ ভাইচুং

সুবাস ঘিসিঙ্গের আমল থেকে গোর্খাল্যান্ড আন্দোলনকে সমর্থন জানিয়ে আসছে সিকিম। বিমল গুরুঙ্গের নেতৃত্ব যখন বছর দশেক আগে উত্তাল হয়েছিল পাহাড়, তখনও পবনকুমার চামলিংয়ের নেতৃত্বে সিকিম বিধানসভায় এই আন্দোলনের পাশে থাকা ইঙ্গিত দিয়েছিল।

কিশোর সাহা

শেষ আপডেট: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০৪:০৮
ভাইচুং ভুটিয়া। ছবি: সংগৃহীত

ভাইচুং ভুটিয়া। ছবি: সংগৃহীত

তিনি দু’বার তৃণমূলের প্রার্থী হয়েছিলেন। এক বার লোকসভায়, পরের বার বিধানসভায়। তার পরেও কেন গোর্খাল্যান্ডের সমর্থনে মুখ খুললেন ভাইচুং ভুটিয়া, তাই নিয়ে পাহাড় থেকে সমতল, সর্বত্র জোর আলোচনা। ভাইচুং ঘনিষ্ঠদের বক্তব্য, তৃণমূল থেকে রাজ্যসভায় যাওয়ার টিকিট না পেয়েই সম্ভবত কিছুটা ক্ষুব্ধ প্রাক্তন ভারত অধিনায়ক। পাশাপাশি সিকিমের রাজনীতিতে প্রাসঙ্গিক হওয়ার জন্যও বার্তা দিতে এমন কথা বলতে পারেন তিনি।

সেই সুবাস ঘিসিঙ্গের আমল থেকে গোর্খাল্যান্ড আন্দোলনকে সমর্থন জানিয়ে আসছে সিকিম। বিমল গুরুঙ্গের নেতৃত্ব যখন বছর দশেক আগে উত্তাল হয়েছিল পাহাড়, তখনও পবনকুমার চামলিংয়ের নেতৃত্বে সিকিম বিধানসভায় এই আন্দোলনের পাশে থাকা ইঙ্গিত দিয়েছিল। এ বারেই সিকিম বিধানসভায় এই মর্মে একটি প্রস্তাব পাশ হয় এবং তা পাঠানো হয় কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে।

পশ্চিমবঙ্গ সরকার এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করে জানায়, সিকিমের পক্ষে অন্য একটি রাজ্যের অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে প্রস্তাব পাশ করাটা যুক্তরাষ্ট্রীয় পরিকাঠামোর পরিপন্থী। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বারবার স্পষ্ট করেছেন, পাহাড় পশ্চিমবঙ্গের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। তার পরেও কী ভাবে ভাইচুং এমন কথা বললেন? ভাইচুং ঘনিষ্ঠদের দাবি, শান্তা ছেত্রীকে রাজ্যসভায় পাঠানোয় তৃণমূল নেতৃত্বের উপরে ক্ষুব্ধ প্রাক্তন ভারত অধিনায়ক। পাহাড়ে আন্দোলনের পুরো সময়টায় তাঁকে উত্তরবঙ্গে বিশেষ দেখাও যায়নি। দ্বিতীয় কারণ, হতে পারে তিনি সিকিমের রাজনীতিতে প্রাসঙ্গিক হতে চাইছেন। পরবর্তীকালে সেখানে কোনও দলের হয়ে প্রার্থী হওয়াটাও অস্বাভাবিক নয়। আর সিকিমে প্রাসঙ্গিক হতে গেলে গোর্খাল্যান্ডের দাবিকে সমর্থন করতেই হবে। চামলিংয়ের ডেমোক্র্যাটিক পার্টি বা বিরোধী ক্রান্তিকারী মোর্চা, সকলেই এই ব্যাপারে এক সুর।

এর পিছনেও ইতিহাস রয়েছে। ১৯৭৫ সালে ভারতের অঙ্গরাজ্য হয় সিকিম। সেই সময়ে সরকারি দফতরে প্রচুর কর্মী নিয়োগের প্রয়োজন ছিল। সিকিমের লোকদের নেওয়ার পরে ফাঁকা রয়ে যায় অনেক পদ। তখন রাজ্যের বাইরের লোক নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। এর পরেই বিপুল সংখ্যায় নেপালিভাষীরা আবেদন করেন। ফলে এখন সিকিমে নেপালিভাষীরাই সংখ্যাগরিষ্ঠ। সিকিমের বিশিষ্টজনদের অধিকাংশ আড়ালে বলছেন, ভোটব্যাঙ্কের কথা মাথায় রেখেই সিকিমের সব দল গোর্খাল্যান্ডের দাবিকে সমর্থন করে। চামলিংয়ের রাজনৈতিক পরামর্শদাতা কে টি গ্যালসেনের দাবি, ‘‘গোর্খাল্যান্ডের দাবি যুক্তিযুক্ত বলেই মনে করে আমাদের দল। এতে ভোটের অঙ্ক নেই। উন্নয়নের স্বার্থেই সিকিমের মানুষ আমাদের মুখ্যমন্ত্রীকে ভোট দেন।’’ বিরোধী দল ক্রান্তিকারী মোর্চার প্রেম সিংহ তামাঙ্গ অশান্তি-বন্‌ধের বিরোধিতা করলেও বিমল গুরুঙ্গদের দাবির বিরোধিতা করেননি।

ভাইচুং নিজে বিষয়টি নিয়ে আর কিছু বলতে চাইছেন না। তৃণমূলের দার্জিলিং জেলা সভাপতি গৌতম দেব বলেন, ‘‘কার মনে কী আছে, সেটা বোঝা সম্ভব নয়। ভাইচুংয়ের সঙ্গে বিশদে কথা বলার সুযোগ হলে বিষয়টি স্পষ্ট হতে পারে।’’

Sikkim Gorkhaland Bhaichung Bhutia GJM ভাইচুং ভুটিয়া গোর্খাল্যান্ড
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy