ভারতী ঘোষ। নিজস্ব চিত্র
পুলিশ সুপারের পদে থাকাকালীন বরাবরই তিনি ছিলেন বিতর্কের কেন্দ্রে। পদ হারানোর পরও তাঁকে নিয়ে চর্চায় ইতি পড়েনি। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার প্রাক্তন পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষকে নিয়ে প্রকাশ্যে রাস্তার মোড়ে, চায়ের দোকানে গুঞ্জন চলছেই।
তরজার তুফান উঠেছে ফেসবুকের ওয়ালেও। কটাক্ষ-পাল্টা কটাক্ষে জমে উঠেছে ‘ভারতী-পর্ব’।
সবমিলিয়ে প্রায় ছ’বছর পশ্চিম মেদিনীপুরে ছিলেন ভারতী ঘোষ। এই সময়ে হুমকি দেওয়া, বিরোধীদের মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর মতো একাধিক অভিযোগ উঠেছে তাঁর বিরুদ্ধে। ভারতীদেবী মুখ্যমন্ত্রীকে ‘জঙ্গলমহলের-মা’ বলে সম্বোধন করায় হইচই পড়ে যায়। ভারতী-বিদায়ে কেউ কেউ তাই ফেসবুকে লিখেছেন, ‘শুনেছ, জঙ্গলমহলের মাসি ইস্তফা দিতে চলেছেন। সেটা আবার কে? পিসি যদিজঙ্গলমহলের মা হয় তাহলে তার পাতানো বোন তো মাসিই হবে না কি!’
পুলিশ মহলে গুঞ্জন, সবংয়ের উপ-নির্বাচনে ভারতীদেবীর ভূমিকা নিয়ে নানা অভিযোগ পৌঁছেছিল নবান্নে। তারই ফলে এই বদলি। ঘুরিয়ে এই প্রসঙ্গ টেনে কেউ কেউ ফেসবুকে লিখেছেন, ‘সবংয়ের মার্কশিটে ফেল করেছেন ভারতী। তাই এই বদলি’। কারও আবার তোপ, ‘কয়েক বছরে দেখলাম পশ্চিম মেদিনীপুরের কয়েকজন বিধায়ক, মন্ত্রীকে। যারা সদা ব্যস্ত থাকতেন ওই দিদির আশীর্বাদ পাওয়ার জন্য… এঁদের পিঠেরটা বাঁকা।’ খোঁচা দিয়ে কেউ লিখেছেন, ‘এ বার বোঝো ঠ্যালা।’
ভারতী ঘোষের ‘গুণমুগ্ধের’ সংখ্যাও যে কম নয় তারও ইঙ্গিত মিলছে তরজায়। একজন যেমন লিখেছেন, ‘টাইগার জঙ্গলে থাকলেও টাইগার আবার বাইরে থাকলেও টাইগার।’ অন্য আর একজনের কথায় আবার সহানুভূতির সুর। তিনি লিখছেন, ‘সময় খারাপ হলে অনেক কিছুই খারাপ ঘটে। এমনকী যে তোমাকে সবচেয়ে ভাল বোঝে, ভাল জানে, সেও দূরে সরে যায়।’
এ বিষয়ে কথা বলতে চেষ্টা করেও ভারতীদেবীর সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা যায়নি। এসএমএস-এরও জবাব দেননি তিনি।
গত সোমবার ভারতীদেবীর বদলির নির্দেশ জারি হয়। গত বুধবার জেলার পুলিশ সুপার হিসেবে দায়িত্ব নেন অলোক রাজোরিয়া। প্রাক্তন পুলিশ সুপারের বদলির নির্দেশ আসার দিন থেকেই একের পর এক পেজে ভেসে উঠতে শুরু করে ‘বড়দিনের উপহার। মাননীয় অলোক রাজোরিয়া স্বাগতম’ শীর্ষক পোস্ট। রাজনৈতিক মহলে গুঞ্জন, এই পোস্টের বেশিরভাগই তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকদের কথা। এর আগে তো কোনও পুলিশ সুপারের বদলি নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় এত চর্চা হয়নি। কেন এত পোস্টের বহর? মেদিনীপুরের এক তৃণমূল নেতার মন্তব্য, “বহুদিন কষ্টের মধ্যে ছিলাম! আমরা তো ‘গো ব্যাক ম্যাডাম’ বলতে পারি না। তাই ‘ওয়েলকাম স্যার’ বলেছি!”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy