Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

আদিবাসী ঘোষণা নিয়ে কেন্দ্রকে তোপ বিনয়ের

তার নির্যাস: ১১টি সম্প্রদায়কে আদিবাসী হিসেবে ঘোষণার দাবি সামনে রেখে পাহাড়ের মানুষকে বোকা বানাচ্ছে বিমল গুরুং শিবির ও বিজেপি। 

—ফাইল চিত্র।

—ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০৬ জানুয়ারি ২০১৯ ০৪:৪০
Share: Save:

সদ্য একটি ভিডিয়ো সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দিয়েছিলেন রোশন গিরি। সেখানে দেখা যাচ্ছে, কেন্দ্রীয় আদিবাসী সম্পর্কিত মন্ত্রকের মন্ত্রী জুয়েল ওরাওঁ বলছেন, ভারত সরকার চাইলে রাতারাতি আদিবাসী মর্যাদা পেয়ে যাবেন পাহাড়ের বাসিন্দারা। দু’দিনের মধ্যে বিমল গুরুং শিবিরের এই দাবির বিরুদ্ধে মুখ খুললেন মোর্চার বর্তমান প্রধান তথা জিটিএ-র তত্ত্বাবধায়ক চেয়ারম্যান বিনয় তামাং। একটি ই-মেলকে হাতিয়ার করে শনিবার তিনি যা বললেন, তার নির্যাস: ১১টি সম্প্রদায়কে আদিবাসী হিসেবে ঘোষণার দাবি সামনে রেখে পাহাড়ের মানুষকে বোকা বানাচ্ছে বিমল গুরুং শিবির ও বিজেপি।

কী আছে মেলে? বিনয় জানাচ্ছেন, কেন্দ্রীয় আদিবাসী মন্ত্রক বৃহস্পতিবার ওই মেলটি পাঠিয়েছে সিকিম সরকারকে। সেখানে বলা হয়েছে, ১১টি সম্প্রদায়কে আদিবাসী হিসেবে ঘোষণার দাবি খতিয়ে দেখতে তিন সদস্যের কমিটি ৭ জানুয়ারি সিকিমে পৌঁছবে। সেখানে দু’দিন থাকার পরে ৯ জানুয়ারি তাঁরা দার্জিলিঙে যাবেন। সফরে তাঁরা দাবি খতিয়ে দেখার জন্য সংশ্লিষ্ট অফিসারদের সঙ্গে কথা বলবেন এবং ওই সম্প্রদায়ের বসতি এলাকা পরিদর্শন করবেন।

ওই ই-মেল দেখিয়ে বিনয় বলেন, ‘‘দু’দিন আগে গুরুং-ক্যাম্প সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়াল, পাহাড়বাসীকে যে কোনও সময়ে আদিবাসী স্বীকৃতি দিতে পারে বলে এক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী দাবি করেছেন। তা-ই যদি হয়, তা হলে তৃতীয় দফায় কমিটি গড়ে কেন পাহাড়ে পাঠাতে হল?’’ এর পরেই বিনয়ের দাবি, ‘‘পাহাড়বাসীর দাবি নিয়ে বিজেপি, বিমল গুরুং বিশ্বাসঘাতকতা করায় ওদের রাজনৈতিক মৃত্যু হল।’’ পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশংসা করে তিনি জানান, বিধানসভায় পাহাড়ের ১১টি সম্প্রদায়ের দাবি মেনে প্রস্তাব পাস করে কেন্দ্রকে পাঠানো হয়েছে। তার পরেও কেন্দ্র শুধু কমিটিই গড়ে চলেছে!

দার্জিলিং পাহাড়ে পৃথক গোর্খাল্যান্ডের মতো ১১টি সম্প্রদায়কে আদিবাসী হিসেবে ঘোষণার দাবিও অনেক দিনের। বিনয় জানান, গোর্খাল্যান্ড এখন সম্ভব নয় বলে জিটিএ চুক্তি হয়েছে। কিন্তু আদিবাসী ঘোষণা সমানে পিছিয়ে যাচ্ছে কেন? তিনি জানান, ২০১৬ সালে কেন্দ্র ১১টি সম্প্রদায়ের দাবি খতিয়ে দেখতে এক সদস্যের কমিটি গড়ে। পরে সে বছরই দ্বিতীয় দফায় তিন সদস্যের কমিটি গড়ে ৩ মাসের মধ্যে রিপোর্ট দিতে বলে কেন্দ্র। জিটিএ চেয়ারম্যান জানান, দ্বিতীয় দফায় কমিটি পাহাড়ে ঘুরে প্রচুর নথিপত্র সংগ্রহ করে ফিরে যায়। তাঁর দাবি, সে সময়ে তিনিও ৫৪ কেজি নথি দিল্লিতে নিয়ে জমা করেন।

বিনয়ের বক্তব্য, ‘‘তৃতীয় দফায় আর একটি কমিটি গড়ে এবং তাকে পাহাড়ে পাঠিয়ে লোকসভা ভোটে গোর্খা ভোটব্যাঙ্ক ধরে রাখার চেষ্টায় রয়েছে বিমল শিবির ও বিজেপি। বলা যায় না, ভোটের আগে বিজ্ঞপ্তি বা অর্ডিন্যান্স জারি করে প্রক্রিয়াটি শুরু করে দিতে পারে কেন্দ্র।’’ শুক্রবার রাজ্যসভায় ১১টি সম্প্রদায়ের দাবির বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন করেন তৃণমূলের সাংসদ শান্তা ছেত্রী। তিনি বলেন, ‘‘আমাদের রাজ্য সরকার আগেই ওই দাবি মানতে কেন্দ্রকে অনুরোধ করেছে।’’ যদিও বিজেপির দার্জিলিং পাহাড় শাখার সভাপতি মনোজ দেওয়ানের মতে, কেন্দ্র ঠিক পথেই এগোচ্ছে। তাঁর যুক্তি, ‘‘১১টি সম্প্রদায়কে আদিবাসী ঘোষণার দাবি খতিয়ে দেখার প্রক্রিয়া আগেই শুরু হয়েছে। যে কোনও সময়ে তার স্বীকৃতি দিতে পারে কেন্দ্র। তা ছাড়া অর্ডিন্যান্স জারি হতে পারে ভেবে সমালোচনা ঠিক নয়। তাও সাংবিধানিক প্রক্রিয়া।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Binay Tamang Tribal
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE