Advertisement
০৪ মে ২০২৪
West Bengal Panchayat Election 2023

ভোটে বিজেপির বৃদ্ধি ৭৬ শতাংশ, শাহকে জানালেন সুকান্তেরা, অভিযোগের ‘গোপন’ তালিকাও লম্বা

শুক্রবার দিল্লিতে অমিত শাহের বাসভবনে যান সুকান্ত মজুমদার। সেখানেই রাজ্যে বিজেপির সাফল্যের তথ্য শাহকে সুকান্ত দেন বলে জানা গিয়েছে। কয়েকজন আইপিএস, আইএএস সম্পর্কে অভিযোগ জানান বলেও খবর।

শুক্রবার শাহী দরবারে সুকান্ত।

শুক্রবার শাহী দরবারে সুকান্ত। ছবি: টুইটার

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৬ জুলাই ২০২৩ ১৭:০৮
Share: Save:

পঞ্চায়েত নির্বাচনে রাজ্যে অনেকটাই সাফল্য মিলেছে বলে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে দাবি জানাল বিজেপি। গত শুক্রবারই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের দিল্লির বাসভবনে যান বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। পঞ্চায়েত নির্বাচন শেষ হতে না হতেই শাহি দরবারে সুকান্ত আচমকা কেন গেলেন, তা নিয়ে অনেক প্রশ্ন গেরুয়া শিবিরেও। বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, এই রাজ্যে ভোটে আইপিএস, আইএএসদের একাংশ যে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে শাসক তৃণমূলকে সাহায্য করেছে, সেই অভিযোগও শাহকে জানিয়েছেন সুকান্ত। এ নিয়ে রাজ্য নেতৃত্বের তৈরি করা একটি তালিকাও জমা দেওয়া হয়েছে। সে তালিকাও না কি বেশ লম্বা এবং তা গোপনই রাখতে চাইছে রাজ্য বিজেপি। যেখানে অনেকগুলি জেলার পুলিশ সুপার এবং জেলাশাসকের নামও রয়েছে বলে দাবি। যদিও সুকান্ত এ বিষয়ে নির্দিষ্ট করে কিছু বলতে রাজি হননি। তিনি বলেন, ‘‘আমি বাংলার সার্বিক পরিস্থিতির কথা জানিয়েছি। রাজনৈতিক এবং প্রশাসনিক সব বিষয়েই কথা হয়েছে। ভোট পরবর্তী সন্ত্রাস নিয়েও বিস্তারিত জানিয়েছি অমিতজিকে।’’

বিজেপি সূত্রে এটাও জানা গিয়েছে, রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচনে বিজেপি যে সাফল্য পেয়েছে, তার পরিসংখ্যানও শাহকে দিয়েছেন সুকান্ত। রাজ্য বিজেপির হিসাব মতো ২০১৮ সালের তুলনায় এ বার দল দ্বিগুণ আসনে জিতেছে পঞ্চায়েতের তিনটি স্তরে। সে বার জয় মিলেছিল ৫,৬০০ আসনে। তা এ বার বেড়ে হয়েছে ১১ হাজার। শাহকে যে তথ্য দেওয়া হয়েছে তাতে দাবি করা হয়েছে, গ্রাম পঞ্চায়েত স্তরে জয় ৫,৭৭৯ থেকে বেড়ে ১০,০০৪ আসনে হয়েছে। পাঁচ বছরে বৃদ্ধি পেয়েছে ৭৩ শতাংশ। একই ভাবে পঞ্চায়েত সমিতিতে বৃদ্ধি ৩২ শতাংশ। জয়ী আসনের সংখ্যা ৭৬৯ থেকে বেড়ে ১,০১৮ হয়েছে। আর জেলা পরিষদ স্তরে আসন সংখ্যা ২২ থেকে বেড়ে ৩১ হয়েছে। বৃদ্ধি ৪০ শতাংশ। সেই সঙ্গে এটাও জানানো হয়েছে যে, মোট প্রাপ্য ভোট ১৩ শতাংশ থেকে বেড়ে ২৩ শতাংশ হয়েছে। রাজ্য জুড়ে তৃণমূলের সন্ত্রাস সত্ত্বেও বৃদ্ধি ৭৬ শতাংশ।

শাহকে এই তথ্য জানানো সঙ্গে এটাও বলা হয়েছে যে, এ বার বাংলায় মহিলাদের ভোটদানের হার আশাব্যঞ্জক হয়নি। মোট ভোটদানের হার যদি ১০ থেকে ১৫ শতাংশ বাড়ানো যায়, তবে দলের আসন আরও অনেক বাড়ত কারণ, বহু আসনেই ৩০০ ভোটের কম ব্যবধানে হারতে হয়েছে।

প্রসঙ্গত, পঞ্চায়েত ভোটের গণনা ১২ জুলাই শেষ হলেও দলের নেতা, কর্মীদের অভিনন্দন জানিয়ে শাহ টুইট করেন ১৪ তারিখ। সুকান্তের সঙ্গে সাক্ষাতের সময়েই শাহ টুইট করে লেখেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গের এই রক্তক্ষয়ী সন্ত্রাস বিজেপিকে পঞ্চায়েত নির্বাচনে দুর্দান্ত ফল করা থেকে থামাতে পারেনি। বিজেপি আগের নির্বাচনের তুলনায় তার আসন সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ বৃদ্ধি করেছে, যা থেকে প্রমাণিত আমাদের ওপর জনগণের আস্থা বৃদ্ধি পেয়েছে।’’ বিজেপি শিবিরের দাবি, শাহ তথা কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব যে দলের ফলাফলে সন্তুষ্ট, তারই প্রমাণ এই টুইট। রাজ্যের এক নেতা বলেন, ‘‘বাংলায় কেমন প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্যে লড়াই হয়েছে, রাজ্য নির্বাচন কমিশন এবং প্রশাসনের কী ভূমিকা ছিল, সবটাই জানেন কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। তাই এই ফল নিয়ে রাজ্যের মতো কেন্দ্রীয় নেতারাও চিন্তিত নন।’’

রাজ্য বিজেপির এই পরিসংখ্যান নিয়েও আক্রমণ শানিয়েছেন তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক তথা মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। তিনি বলেন, ‘‘এর আগের বার বিজেপির লড়াই তো ছিল শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে। ২০১৮ সালে শুভেন্দু যেখানে যেখানে দায়িত্বে ছিলেন, সেখানে বিজেপিকে তো মনোনয়ন জমা দিতেই দেননি। আর অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এ বার নির্বাচন অবাধ করিয়েছেন। বেশি আসনে লড়লে জয়ের হার তো বাড়বেই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE