Advertisement
E-Paper

ক্ষোভের মুখে বিজেপি নেতারা

ক’দিন আগে হাবরা-অশোকনগরে ত্রাণ বিলি করতে গিয়ে বিক্ষোভের মুখে পড়েছিলেন বিজেপি নেত্রী রূপা গঙ্গোপাধ্যায়। সেখানে অভিযোগের তির ছিল শাসক তৃণমূলের বিরুদ্ধে। এবার পশ্চিম মেদিনীপুরের নয়াগ্রাম ব্লকের বানভাসি এলাকা পরিদর্শন করতে এসে দলের একাংশ কর্মী-সমর্থকদের তুমুল বিক্ষোভের মুখে পড়লেন বিজেপি রাজ্য নেতৃত্বের একটি দল।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৩ অগস্ট ২০১৫ ০০:২৮
ক্ষোভের মুখে নেতৃত্ব। —নিজস্ব চিত্র।

ক্ষোভের মুখে নেতৃত্ব। —নিজস্ব চিত্র।

ক’দিন আগে হাবরা-অশোকনগরে ত্রাণ বিলি করতে গিয়ে বিক্ষোভের মুখে পড়েছিলেন বিজেপি নেত্রী রূপা গঙ্গোপাধ্যায়। সেখানে অভিযোগের তির ছিল শাসক তৃণমূলের বিরুদ্ধে। এবার পশ্চিম মেদিনীপুরের নয়াগ্রাম ব্লকের বানভাসি এলাকা পরিদর্শন করতে এসে দলের একাংশ কর্মী-সমর্থকদের তুমুল বিক্ষোভের মুখে পড়লেন বিজেপি রাজ্য নেতৃত্বের একটি দল। ওই দলে ছিলেন বিজেপি-র রাজ্য সহ সভাপতি সুভাষ সরকার। এ ছাড়া ছিলেন দলের তরফে ঝাড়গ্রাম সাংগঠনিক জেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত পর্যবেক্ষক মহাদেব বসাক, বাংলা সিরিয়ালের অভিনেতা সুমন বন্দ্যোপাধ্যায়, বিজেপি-র ঝাড়গ্রাম জেলা সভাপতি পঞ্চানন হাঁসদা প্রমুখ।

গত মঙ্গলবার রাতে সুবর্ণরেখার জলোচ্ছ্বাসে নয়াগ্রাম ব্লকের মলম গ্রাম পঞ্চায়েতের গোটা চারেক গ্রাম জলমগ্ন হয়। কিন্তু মলম গ্রাম পঞ্চায়েতটি বিজেপি-র ক্ষমতাসীন হওয়ায় সেখানে কোনও সরকারি ত্রাণ শিবির খোলা হয়নি বলে অভিযোগ। গত শুক্রবার রাজ্য বিজেপি নেত্রী তথা অভিনেত্রী রূপা গঙ্গোপাধ্যায়ের ব্যক্তিগত উদ্যোগে ত্রাণ নিয়ে নয়াগ্রামে আসার কথা ছিল। কিন্তু স্থানীয় বিজেপি কর্মীদের একাংশের অভিযোগ, দলের গোষ্ঠী রাজনীতির কারণে নয়াগ্রামে রূপার সফর বাতিল হয়ে যায়।

এরপর রবিবার রাজ্য স্তরের এক প্রতিনিধি দলকে নয়াগ্রামে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয় বিজেপি-র রাজ্য নেতৃত্ব। রবিবার দুপুরে দলের রাজ্য স্তরের দুই নেতা সুভাষবাবু ও মহাদেববাবুর সঙ্গে জেলার কয়েক জন নেতাও নয়াগ্রামের মলম এলাকা পরিদর্শনে যান। কিন্তু অভিযোগ, জেলার গোষ্ঠী রাজনীতির কারণে বিজেপি-র নয়াগ্রাম ব্লক নেতৃত্বকে এই পরিদর্শনের ব্যাপারে কোনও আগাম খবরই দেওয়া হয়নি। এমনিতেই জেলা ও রাজ্য নেতৃত্বের উপর ক্ষোভ রয়েছে স্থানীয় কর্মীদের। বিজেপি-র নয়াগ্রাম ব্লক সভাপতি অর্ধেন্দু পাত্র ও তাঁর ভাই সুখেন্দু পাত্র-সহ স্থানীয় ২৯ জন কর্মী দীর্ঘদিন জেলবন্দি থাকাকালীন সুভাষবাবু ছাড়া রাজ্যের আর কোনও নেতা তাঁদের খোঁজখবর নেননি। এলাকাতেও আসেননি। এই নিয়ে কর্মীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ রয়েছে। প্রায় পাঁচ মাস জেলবন্দি থাকার পর গত জুনে অর্ধেন্দুবাবু ও সুখেন্দুবাবু জামিনে ছাড়া পান।

এ দিন দুপুরে বিজেপি-র প্রতিনিধি দলটি নয়াগ্রামের নরসিংহপুর গ্রামের শিবমন্দির পাড়ায় পৌঁছতেই কয়েকশো বিজেপি কর্মী সুভাষবাবুদের ঘিরে ধরেন। বিক্ষোভকারী দলে মহিলারাও ছিলেন। কেন পরিদর্শক দলে অর্ধেন্দুবাবু নেই জানতে চান তাঁরা। এত দিন নেতারা কোথায় ছিলেন প্রশ্ন তোলেন কর্মীরা। রূপার পরিবর্তে কেন বাংলা সিরিয়ালের অভিনেতাকে নিয়ে আসা হয়েছে, সেই প্রশ্নও তোলেন তাঁরা। এরপরই ‘গো ব্যাক’ স্লোগান দিয়ে রাজ্য নেতা মহাদেব বসাক, বিজেপি-র ঝাড়গ্রাম জেলা সভাপতি পঞ্চানন হাঁসদা ও জেলা সহ সভাপতি শুভাশিস পালকে ধাক্কাধাক্কি শুরু করেন কর্মীরা। উত্তেজিত কর্মীরা নেতাদের জুতো দেখান। পরে অর্ধেন্দুবাবুর হস্তক্ষেপে কর্মীরা শান্ত হন। সুভাষবাবুরা এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের সঙ্গে কথা বলেন। এরপর কর্মীরাই ব্যারিকেড করে সুভাষবাবুদের থুরিয়া গ্রামে অর্ধেন্দুবাবুর বাড়িতে নিয়ে যান। সেখানে দীর্ঘক্ষণ বৈঠকের পরে ভুল বোঝাবুঝির অবসান হয় বলে দাবি।

বিজেপি-র নয়াগ্রাম ব্লক সভাপতি অর্ধেন্দু পাত্র বলেন, “আমি সব সময়ই মানুষের পাশে থাকি। পরিদর্শক দলে আমাকে দেখতে না পেয়ে বন্যা দুর্গত মানুষজন রাজ্য ও জেলা নেতাদের কিছু ক্ষোভ-বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন। সকলেই দলের কর্মী-সমর্থক।”

এ প্রসঙ্গে বিজেপির রাজ্য সহ-সভাপতি সুভাষবাবুর দাবি, “এটাকে আমি বিক্ষোভ বলব না। আমরা সম্মিলিত অভিমানের মুখে পড়েছিলাম। সে জন্য পরে তাঁদের বাড়িতে চা খেয়ে সমস্যার পূর্ণ সমাধান করে এসেছি।” কেন সমস্যা হয়েছিল? সুভাষবাবুর বক্তব্য, “২০ ঘন্টা আগে রাজ্য নেতৃত্ব এই কার্যক্রমের সিদ্ধান্ত নেন। জেলা নেতৃত্বের যোগাযোগের অভাবের কারণে এই ঘটনাটি ঘটেছে। সেই যোগাযোগের অভাব এমন এলাকায় হয়েছে, যেখানকার নেতা-কর্মীরা দলের জন্য অনেক কষ্ট করেছেন। ফলে এই সম্মিলিত অভিমান হওয়াটা স্বাভাবিক।”

fumes flood affected west medinipur nayagram block bjp flood bjp flood relief nayagram bjp
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy