শিয়রে পুর নির্বাচন। তাই সাংগঠনিক নির্বাচন সেরেই ঘর গোছানোর কাজে হাত। কলকাতা পুরসভায় তৃণমূলের সঙ্গে টক্কর নেওয়া যে কঠিন কাজ, তা বিজেপি নেতৃত্ব ভালই জানেন। কিন্তু সে লড়াইয়ে বিন্দুমাত্র জমি যে তাঁরা ছেড়ে রাখতে রাজি নন, তা স্পষ্ট করে দিলেন দিলীপ ঘোষ। সব তিক্ততা এবং মনান্তর দূরে সরিয়ে রাজ্য বিজেপির সভাপতি জানালেন, কলকাতার ভোট-ময়দানে শোভন চট্টোপাধ্যায়ের ভূমিকার কথা গুরুত্ব দিয়েই ভাবছে দল। প্রাক্তন মেয়রের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাঁকে সক্রিয় ভাবে ময়দানে নামানোর চেষ্টা বিজেপি শুরু করছে— অকপটেই শুক্রবার জানিয়েছেন দিলীপ।
২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনে কলকাতার ৫০টি ওয়ার্ডে বিজেপি এগিয়ে ছিল অন্য সব দলের চেয়ে। কিন্তু, ১৪৪ ওয়ার্ডের পুরসভায় ৫০টি আসন পেলে সংখ্যাগরিষ্ঠতায় পৌঁছনো যায় না। তার জন্য ৭৩টি আসন দরকার। আর লোকসভা নির্বাচনে মোদী ঝড়ের প্রেক্ষিতে যতগুলি আসনে এগিয়ে থাকা গিয়েছিল, পুর নির্বাচনেও ততগুলি আসন অবশ্যই বিজেপি জিতবে, এ বিষয়েও রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা নিশ্চিত নন। সুতরাং বিজেপিও সর্বশক্তি দিয়ে ঝাঁপাতে চাইছে। শোভন চট্টোপাধ্যায়কে সক্রিয় করে তোলার জন্য দলের কেন্দ্রীয় নেতারাও সক্রিয় হয়ে উঠেছেন।
২০১৯ সালের ১৪ অগস্ট দিল্লিতে গিয়ে আনুষ্ঠানিক ভাবে বিজেপিতে যোগ দেন শোভন চট্টোপাধ্যায় এবং বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু বিজেপিতে যোগদানের এক সপ্তাহের মধ্যেই রাজ্য বিজেপি নেতৃত্বের সঙ্গে নানা টানাপড়েন শুরু হয় তাঁদের দু’জনের। শুরুতে দিলীপ ঘোষের সঙ্গে সঙ্ঘাত ছিল না। কিন্তু রায়দিঘির তৃণমূল বিধায়ক দেবশ্রী রায়কে বিজেপিতে নেওয়া হবে কি না, সে প্রশ্নকে কেন্দ্র করে শোভন-বৈশাখীর সঙ্গে রীতি মতো বাগ্যুদ্ধ শুরু হয় দিলীপ ঘোষের। ফলে শোভন আর বিজেপির হয়ে সক্রিয় হননি। বিজেপির সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তথা বাংলার দায়িত্বপ্রাপ্ত পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয়ের সঙ্গে দেখা করে মাঝে এক বার বিজেপি ছেড়ে দেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন শোভন-বৈশাখী। অন্য কয়েক জন নেতার হস্তক্ষেপে আনুষ্ঠানিক ভাবে আর ইস্তফা দেননি শোভন। তবে তার পর থেকে আর এক দিনের জন্যও দলীয় কার্যালয়ে যাননি।