গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ
কেরলের পথেই হাঁটল পঞ্জাব। দেশের মধ্যে দ্বিতীয় রাজ্য হিসেবে পঞ্জাব বিধানসভায় পাশ হল নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (সিএএ)-বিরোধী প্রস্তাব। সিএএ-র জন্য সারা দেশের সঙ্গে পঞ্জাবেও অস্থিরতা তৈরি হয়েছে, এই আইন বিভেদমূলক— এই সব অভিযোগ তুলেই প্রস্তাব পাশ করে কেন্দ্রকে এই আইন প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়েছে। এই আইন ভারতীয় সংবিধানের ‘ধর্মনিরপেক্ষ চরিত্রে আঘাত’ হেনেছে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে হয়েছে ওই প্রস্তাবে। এদিন বিধানসভায় এর পাশাপাশি জাতীয় জনসংখ্যা পঞ্জি (এনপিআর) এবং জাতীয় নাগরিক পঞ্জি (এনআরসি)-র বিরুদ্ধেও প্রস্তাব পাশ হয়েছে মুখ্যমন্ত্রী অমরেন্দ্র সিংহের নেতৃত্বে।
নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল পাশ হয়ে আইনে পরিণত হওয়ার পর থেকেই প্রতিবাদ-বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠেছে সারা দেশ। উত্তরপ্রদেশ, পশ্চিমবঙ্গ-সহ একাধিক রাজ্যে অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। সেই উত্তাল পরিস্থিতির আঁচ কিছুটা কমলেও এখনও প্রতিবাদ-প্রতিরোধ অব্যাহত। এই পরিস্থিতির দিকে নজর রেখে প্রথম কেরল বিধানসভায় পাশ হয় সিএএ-বিরোধী প্রস্তাব। বাম শাসিত কেরল সরকার আবার সুপ্রিম কোর্টেও এ নিয়ে মামলা দায়ের করেছে।
তার মধ্যেই এ বার কংগ্রেস শাসিত পঞ্জাবেও পাশ হল একই ধরনের প্রস্তাব। রাজ্যের মন্ত্রী ব্রহ্ম মহিন্দ্রা বিধানসভায় এই প্রস্তাব পেশ করেন বিধানসভায়। সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে সেই প্রস্তাব পাশ হয়। প্রস্তাবে বলা হয়েছে, ‘‘সিএএ দেশের মধ্যে ক্ষোভে-বিক্ষোভের সৃষ্টি করেছে, তৈরি হয়েছে সামাজিক অস্থিরতা।’’ আরও উল্লেখ করা হয়েছে, ‘বিভাজন করতেই উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে এই আইন তৈরি হয়েছে, যা আরও মানবিক চিন্তাভাবনার আধারে তৈরি করা যেত।’’
আরও পডু়ন: নির্ভয়া কাণ্ডে ফাঁসি ১ ফেব্রুয়ারি, নয়া মৃত্যু পরোয়ানা জারি আদালতের
সিএএ পাশ হওয়ার পরেই নানা মহল থেকে অভিযোগ উঠেছে, এই আইনের ফলে দেশের সংবিধানের ধর্মনিরপেক্ষতা নষ্ট হয়েছে। এই আইনের মাধ্যমে কেন্দ্র আইন করে ধর্মের ভিত্তিতে নাগরিকত্ব দেওয়ার ব্যবস্থা করেছে বলেও সরব অনেকে। পঞ্জাব বিধানসভার প্রস্তাবেও সেই বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে। ‘‘ধর্মনিরেপক্ষতাই ভারতীয় সংবিধানের মূল চরিত্র। কিন্তু এটা স্পষ্ট যে, নয়া আইন সেই চরিত্রকে ভঙ্গ করেছে। তাই কেন্দ্র সরকারকে আবেদন করা হচ্ছে যে, ধর্মের ভিত্তিতে বিভাজন করে নাগরিকত্ব দেওয়ার এই আইন তুলে নেওয়া হোক এবং সব ধর্মের মানুষকে সমান চোখে দেখা হোক,’’ বলা হয়েছে প্রস্তাবে।
আরও পডু়ন: ফের পারমাণবিক অস্ত্র প্রযুক্তি চুরি করতে গিয়ে হাতেনাতে পাকড়াও পাকিস্তান
অসম এনআরসি নিয়ে প্রতিবাদ-প্রতিরোধ ছিলই। সিএএ পাশ হওয়ার পর থেকে সেই ক্ষোভ-বিক্ষোভ আরও বেড়েছে। তার সঙ্গে আবার যোগ হয়েছে এনপিআর। অনেকেরই অভিযোগ, এনপিআর আসলে এনআরসির পূর্ব প্রস্তুতি। পঞ্জাব সরকারও তেমনটাই মনে করে। তাই এই প্রস্তাবে সেই বিষয়টিও তুলে ধরা হয়েছে। বলা হয়েছে, ‘‘সমাজের একটি অংশকে বঞ্চিত করতেই এনআরসি চালু করার কথা বলা হয়েছে। এই ধারণা থেকে এনআরসি-কে মুক্ত করতে এনপিআর-এর ফর্ম বা তথ্যগত পরিবর্তন আনার জন্য কেন্দ্রকে আর্জি জানানো হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy