নিহত বিজেপি নেতা কালাচাঁদ কর্মকারের পরিবারের সঙ্গে বিজেপি নেতারা। —নিজস্ব চিত্র।
তুফানগঞ্জের নাককাটি গাছ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় তৃণমূলের দুষ্কৃতীদের হাতে বিজেপি নেতা কালাচাঁদ কর্মকার খুন হয়েছিলেন বলে অভিযোগ উঠেছিল। শনিবার নিহত ব্যক্তির পরিবারের সঙ্গে দেখা করলেন রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক রথীন্দ্রনাথ বসু ও আলিপুরদুয়ার লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ জন বার্লা।
বিজেপি সূত্রে খবর, রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের নির্দেশেই রাজ্য নেতৃত্ব নিহতের পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন। উপস্থিত ছিলেন দলের কোচবিহার জেলা সভানেত্রী মালতী রাভা রায়, জেলা বিজেপির সাধারণ সম্পাদক সঞ্জয় চক্রবর্তী-সহ অন্য নেতারাও। বিজেপির ওই নিহত বুথ সম্পাদকের পরিবারে সঙ্গে দেখা করে সমবেদনা জানানোর পাশাপাশি পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাসও দেওয়া হয়। নেতাদের কাছে পেয়ে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন কালাচাঁদের স্ত্রী, তাঁর মা ও তার দুই সন্তান। কালাচাঁদের খুনীরা যাতে কঠোরতম শাস্তি পায়, ওই নেতাদের কাছে সেই আবেদন জানান তাঁরা। বিজেপির নেতারা এর পর চলে যান তুফানগঞ্জ শহরের বিজেপির কার্যালয়ে। সেখানে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে রথীন্দ্রনাথ বলেন, ‘‘রাজ্য পুলিশ প্রশাসনের ভূমিকা তলানিতে ঠেকেছে। শুধুমাত্র তৃণমূল কংগ্রেসের ঝান্ডাটাই পুলিশ ধরেনি।শাসকদলের অঙ্গুলিহেলনে তারা চালিত হচ্ছে। একের পর এক বিজেপি কর্মী-সমর্থকের উপর হামলা হচ্ছে, খুনের মতো ঘটনা ঘটছে। তারপরও পুলিশ চুপ করে দর্শকের ভূমিকা পালন করছে। যাঁরা প্রশাসন চালান, তাঁরা তৃণমূল কংগ্রেসের দলদাসে পরিণত হয়েছে। যেটা খুবই নিন্দাজনক এবং শঙ্কার বিষয়। রাজনীতিকে এমন পর্যায়ে নিয়ে এসেছে, যেখানে মানুষ সুবিচার পাচ্ছে না।’’ সঙ্গে সংযোজন, ‘‘গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় বিরোধী দল তাদের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া চালাবে, পার্টির কাজ করবে, মিটিং মিছিল করবে, বন্ধ ডাকবে এটা তো স্বাভাবিক। কিন্তু তুফানগঞ্জে যাকে পিটিয়ে মেরে ফেলা হল, সেই কালাচাঁদ ভারতীয় জনতা পার্টির একজন কার্যকর্তা। তাঁকে দিনের বেলায় পিটিয়ে মেরে ফেলা হল। তারপর এফআইআর করা হল পাঁচ জনের বিরুদ্ধে। সেই পাঁচ জনকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। মাত্র একজনকে ধরে নিয়ে এসেছে। তাও তাকে এমন ধারা দিয়েছে যে, সে হয়তো জামিনে ছাড়া পেয়ে যাবে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘এখন যে খেলা চলছে আগামী চারমাস এই খেলা চলতে থাকলে আমরাও কিন্তু খেলব। আমরা গোটা রাজ্যে ২৯০ জন আইএএস অফিসারের নামের তালিকা প্রস্তুত করেছি, ২৮১ জন আইপিএস অফিসার ও ৩৪১ টি ব্লকের বিডিওদের নামের তালিকা প্রস্তুত করেছি। তাঁরা কীভাবে কাজ করছেন, কোন দুর্নীতির সাথে যুক্ত আছেন, সেগুলো দেখা হচ্ছে। আমরা বাংলায় ক্ষমতায় এলে এই নৈরাজ্যের ব্যবস্থা চলতে দেব না। কোনো মায়ের কোল খালি হতে দেব না। রাজ্য জুড়ে যে হিংসা হত্যা চলছে আমরা সেগুলো বন্ধ করব।’’
আলিপুরদুয়ার লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ জন বার্লা বলেন, ‘‘নিহত কালাচাঁদ কর্মকারের পরিবারের দায়িত্ব বিজেপি গ্রহণ করবে। সর্বদা তাঁদের আপদে-বিপদে সঙ্গে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।’’
আরও পড়ুন: কাজের ‘স্বাধীনতা’ চান ক্ষুব্ধ শুভেন্দু, আগামী সপ্তাহে ফের আলোচনায় সৌগত
আরও পড়ুন: প্রার্থীর নাম জানা নেই, জেলায় জেলায় দেওয়াল লিখন শুরু করে দিল বিজেপি
শনিবার মহকুমা কার্যালয়ে সাংবাদিক বৈঠক শেষে বিজেপি নেতৃত্ব বক্সিরহাট থানা ঘেরাও কর্মসূচি পালন করেন। বিজেপির মিছিল যাতে কোনও ভাবেই থানা পর্যন্ত পৌঁছতে না পারে সে জন্য বিশাল পরিমাণ পুলিশ বাহিনী মোতায়েন করা হয় গোটা এলাকায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy