হুগলিতে বিজেপির ‘আক্রান্ত’ কর্মীদের সঙ্গে দেখা করল বিজেপির কেন্দ্রীয় দল। —নিজস্ব চিত্র।
পঞ্চায়েত ভোট পরবর্তী ‘হিংসা’র ঘটনা সরেজমিনে খতিয়ে দেখতে বাংলায় এসেছে বিজেপির আরও একটি তথ্যসন্ধানী দল। তফসিলি সম্প্রদায়ের পাঁচ সাংসদের সেই দল রবিবার হুগলির তারকেশ্বর ও আরামবাগের কয়েকটি এলাকা ঘুরে দেখল। অভিযোগ, গত ৮ এপ্রিল, পঞ্চায়েত ভোটের দিন সেই জায়গাগুলিতে ‘সন্ত্রাস’ চালিয়েছেন তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা। দাবি, শাসকদলের শাসানির কারণেই বিজেপির বহু কর্মী-সমর্থক ঘরছাড়া। ভোটের দিন যে সব দলীয় কর্মীরা জখম হয়েছিলেন, তাঁদের সঙ্গে দেখা করে বিজেপির প্রতিনিধি দলের হুঁশিয়ারি, রাজ্য সরকার সংবিধান মেনে কাজ না করলে এবং বিজেপি কর্মীদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হলে কঠোর পদক্ষেপ করা হবে।
পাল্টা আক্রমণ শানিয়েছে শাসক তৃণমূলও। বিজেপির বার বার কেন্দ্রীয় দল পাঠানো নিয়ে তারা প্রশ্ন তুলেছে। দলের রাজ্যসভা সাংসদ শান্তনু সেন বলেন, ‘‘বাংলায় বিজেপির ১৮ জন সাংসদ। তার পরেও কেন বার বার বাইরে থেকে সাংসদ আনতে হচ্ছে, সেটাই তো বুঝতে পারছি না। আর পঞ্চায়েত ভোটে বেশি গোলমাল করেছে তো ওরাই।’’
রবিবার বিকেল সাড়ে ৪টে নাগাদ তারকেশ্বর ব্লকের পিয়াসাড়া নাইটা মালরপাহাড়পুর গ্রাম পঞ্চায়েতের মালপাহাড়পুর ও রামচন্দ্রপুর গ্রামে যায় বিজেপির তফসিলি সম্প্রদায়ের পাঁচ নেতার ওই দল। দলে ছিলেন— বিনোদ সোনকর, সুরেশ কশ্যপ, এস মুনিস্বামী, মনোজ রাজোরিয়া এবং বিনোদ চাবড়া। বিজেপির অভিযোগ, ভোটের দিন মালপাহাড়পুরের ১৪৮ নম্বর বুথের বিজেপি প্রার্থী নীলকান্ত বাগ-সহ বেশ কয়েক জন বিজেপি কর্মীর উপর হামলা চালান তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা। ভোটকেন্দ্রে যাওয়ার আগেই রাস্তায় তাঁদের বাঁশ, লাঠি, রড দিয়ে মারধর করা হয়। সেই ঘটনায় নীলকান্ত, তাঁর বুথ এজেন্ট সঞ্জিত মাজি এবং বিজেপি কর্মী সাগর রুইদাস গুরুতর জখম হন। তাঁদের তারকেশ্বর গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। পরে তাঁদের স্থানান্তরিত করা হয় আরামবাগ মহকুমা হাসপাতালে। বিজেপির কেন্দ্রীয় দল সঞ্জিতের বাড়িতে যায়। সেখানে দলীয় কর্মীর পরিবারের লোকেদের সঙ্গে কথা বলে তারা।
সন্ধ্যায় আরামবাগের পার্টি অফিসেও যায় কেন্দ্রীয় দলটি। বিজেপি সূত্রে খবর, শাসকদলের নেতা-কর্মীদের হুমকির কারণে তাদের বহু কর্মী পার্টি অফিসে আশ্রয় নিয়েছেন। সেখানে তাঁদের সঙ্গে দেখা করেছেন কেন্দ্রীয় দলের প্রতিনিধিরা। পরে দলের সদস্য বিনোদ সোনকর বলেন, ‘‘তৃণমূলের অত্যাচারে আমাদের দলের কর্মীরা ঘরছাড়া। পুলিশের মদতে তৃণমূল কর্মীরা বিজেপির কর্মীদের হামলা করেছে। এর দায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেই নিতে হবে। কারণ, তিনিই পুলিশমন্ত্রী। সংবিধান মেনে কাজ হোক। সকলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হোক। না হলে কঠোর পদক্ষেপ করা হবে।’’ পুলিশ প্রশাসনকেও হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়। বিনোদ বলেন, ‘‘এখানে পুলিশ প্রশাসনকে জানিয়ে রাখছি, তারা একটা রাজনৈতিক দলের মতো কাজ করছে। সেটা বন্ধ করতে হবে। তারা যদি এ রকম কাজ করতে থাকে, তা হলে তৃণমূল নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে যে রকম ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধেও একই রকম পদক্ষেপ করা হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy