Advertisement
E-Paper

রশিদের মুক্তিতে মূল বাধা টাডা

লৌহকপাটের আড়ালে কেটে গিয়েছে প্রায় ২৬ বছর। ‘সদ্ব্যবহার’-এর ছাপ রেখে মুক্তি পেতে মরিয়া বৌবাজার বিস্ফোরণ মামলার মূল আসামি সত্তরোর্ধ্ব রশিদ খান।

চন্দ্রপ্রভ ভট্টাচার্য

শেষ আপডেট: ১৩ মার্চ ২০১৯ ০৩:৫২
রশিদ খান।

রশিদ খান।

লৌহকপাটের আড়ালে কেটে গিয়েছে প্রায় ২৬ বছর। ‘সদ্ব্যবহার’-এর ছাপ রেখে মুক্তি পেতে মরিয়া বৌবাজার বিস্ফোরণ মামলার মূল আসামি সত্তরোর্ধ্ব রশিদ খান। এত দিনের কারাবাসে তাঁর আচার-ব্যবহারে জেল-কর্তৃপক্ষ ‘সন্তুষ্ট’। কিন্তু রশিদের মুক্তির ক্ষেত্রে আইনি প্রশ্ন থাকায় রাজ্য সরকারের হাত-পা কার্যত বাঁধা। ফলে এই মুহূর্তে তাঁর মুক্তির জোরালো সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না বলেই মনে করছেন অনেক অভিজ্ঞ আমলা।

১৯৯৩ সালে বৌবাজার বিস্ফোরণের পর থেকেই রশিদ জেলে আছেন। ২০০১ সালে তাঁকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয় টাডা আদালত। মুক্তি পেতে কয়েক বছর আগেই আদালতের দ্বারস্থ হন তিনি। দিল্লি হাইকোর্টে সেই মামলা চলছে। এই পরিস্থিতিতে রশিদের মুক্তির বিষয়ে রাজ্যের মনোভাব জানতে চেয়েছিল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। কারা দফতর সূত্রের খবর, রাজ্য সম্প্রতি কেন্দ্রকে জানিয়ে দিয়েছে, টাডা বা উগ্রপন্থী ও ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপ প্রতিরোধ আইনে মামলা থাকায় রশিদের মুক্তির ব্যাপারে সবুজ সঙ্কেত দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।

এমনিতে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিতদের মুক্তি দিতে রাজ্য সরকারের একটি ‘সেনটেন্স রিভিউ বোর্ড’ বা সাজা পুনর্বিবেচনা পর্ষদ রয়েছে। যাবজ্জীবন কারাদণ্ড পাওয়া বন্দির আচার-ব্যবহার কেমন, কতটা বদল হয়েছে তাঁর মানসিকতার, তিনি যে-অপরাধে জেল খাটছেন, সেই সাজা এত দিনে যথেষ্ট হয়েছে কি না ইত্যাদি বিষয় তাঁর মুক্তির ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ ক্ষেত্রে খুব গুরুত্বপূর্ণ পুলিশ রিপোর্টও। সাধারণত সাজা খাটার ১৪ বছর পরে জেল-কর্তৃপক্ষ এই সব বিষয়ের তাঁদের বক্তব্য রিপোর্ট আকারে জমা দিলে সরকারের সাজা পুনর্বিবেচনা পর্ষদ সংশ্লিষ্ট বন্দির মুক্তির বিষয়টি পর্যালোচনা করে।

রশিদের ক্ষেত্রে তাঁর আচরণ নিয়ে জেল-কর্তৃপক্ষের জমা দেওয়া রিপোর্ট ইতিবাচক। রশিদ যে খুব ভাল ছবি আঁকেন, প্রত্যেকের সঙ্গেই যে তাঁর ব্যবহার ভাল— ইত্যাদি তথ্য উল্লেখ জেল-কর্তৃপক্ষ ওই রিপোর্টে সন্তোষ প্রকাশ করেছিল। কিন্তু তার পরেও সরকারি কমিটি রশিদের মুক্তির ব্যাপারে সবুজ সঙ্কেত দিতে পারেনি। সরকারি সূত্রের মতে তার প্রথম কারণ, রশিদের বিরুদ্ধে টাডার মতো অত্যন্ত গুরুতর আইনে মামলা রয়েছে। দ্বিতীয়ত, কোনও অপরাধের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট বন্দির

অপরাধপ্রবণতার গভীরতা কতটা ছিল, পুলিশ রিপোর্ট থেকে তা যাচাই করা হয়। এ ক্ষেত্রে সেই রিপোর্ট রশিদের পক্ষে নেই। তাই রশিদের মুক্তির বিপক্ষে কেন্দ্রকে মতামত জানাতে বাধ্য হয়েছে রাজ্য।

রশিদকে ছাড়ার ব্যাপারে অতীতে এক বার ভাবনাচিন্তা করেছিল রাজ্য। তখন কিছু আইনি কারণে তা সম্ভব হয়নি বলে জানাচ্ছেন আইন দফতরের একাংশ। গত প্রায় ২৬ বছরের মধ্যে ১০ বার প্যারলে ছাড়া পেয়েছিলেন রশিদ। তিন থেকে দশ দিন পর্যন্ত সময়সীমায় মোট ৯৩ দিন প্যারলে মুক্ত জীবন কাটিয়েছেন তিনি।

‘‘মামলাটা টাডার অধীনে। ফলে জেল-কর্তৃপক্ষ এবং রাজ্য সরকার কী মনে করলেন, তা যথেষ্ট নয়। রাজ্যের সংশ্লিষ্ট সিদ্ধান্ত কেন্দ্রের অবস্থানের উপরে অনেকাংশে নির্ভরশীল। এ ক্ষেত্রে সেই অবস্থান কার্যত রশিদের মুক্তির বিরুদ্ধে যাচ্ছে,’’ বলছেন প্রশাসনের এক কর্তা।

Bowbazar Blast Case Rashid Khan TADA
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy