E-Paper

সোনা পাচার রোধে ‘দুয়ারে’ বিএসএফ

বিএসএফ-এর সীমা সাথী হেল্পলাইন নম্বর ১৪৪১৯-তে যোগাযোগ করে সোনা চোরাচালান সংক্রান্ত তথ্য দেওয়ার জন্য বলেছেন বিএসএফের দক্ষিণবঙ্গ সীমান্তের কর্তারা।

মিলন হালদার, সীমান্ত মৈত্র  

শেষ আপডেট: ১৬ এপ্রিল ২০২৩ ০৯:২৪
BSF.

গত বৃহস্পতিবার মুর্শিদাবাদে ২১ লক্ষ ৩৬ হাজার ২০০ টাকার তিনটি সোনার বিস্কুট উদ্ধার করেছে বিএসএফ। ফাইল চিত্র।

ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে সোনার চোরাচালান ঠেকাতে সীমান্তবর্তী এলাকার বাসিন্দাদের ‘দুয়ারে’ বিএসএফ। এলাকাবাসীর কাছে সোনার চোরাচালান সংক্রান্ত তথ্য জানানোর আহ্বান জানিয়েছে তারা। সঠিক খবর দিলে মিলবে অর্থ পুরস্কার। গোপন রাখা হবে তথ্য প্রদানকারী ব্যক্তির পরিচয়ও।

মার্চ মাসে চালু হয়েছে এই পদ্ধতি। বিএসএফ-এর সীমা সাথী হেল্পলাইন নম্বর ১৪৪১৯-তে যোগাযোগ করে সোনা চোরাচালান সংক্রান্ত তথ্য দেওয়ার জন্য বলেছেন বিএসএফের দক্ষিণবঙ্গ সীমান্তের কর্তারা। এ ছাড়া দক্ষিণবঙ্গ সীমান্ত আরও একটি নম্বর ৯৯০৩৪৭২২২৭ চালু করেছে। সেই নম্বরে সোনা চোরাচালানের ব্যাপারে তথ্য হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজ বা ভয়েস মেসেজ করেও পাঠানো যাবে।

সীমান্তে যে সোনার চোরাচালান বেড়েছে, তা মানছে বিএসএফ-ও। গত বৃহস্পতিবার মুর্শিদাবাদে ২১ লক্ষ ৩৬ হাজার ২০০ টাকার তিনটি সোনার বিস্কুট উদ্ধার করেছে বিএসএফ। গ্রেফতার করা হয়েছে এক চোরাচালানকারীকে। গত মাসে মুর্শিদাবাদের বয়রাঘাটে ৩৩ লক্ষ ৫৭ হাজার টাকার সোনার বিস্কুট উদ্ধার করেছে তারা। আটক করা হয়েছে এক চোরাকারবারিকে। মার্চ মাসে শুধু উত্তর ২৪ পরগনাতেই চারটি পৃথক ঘটনায় সাত কোটি টাকারও বেশি মূল্যের সোনার বিস্কুট উদ্ধার করেছে বিএসএফ। সাম্প্রতিক সময়ে উত্তর ২৪ পরগনার বাগদা সীমান্ত থেকেই বিএসএফ প্রচুর সোনার বিস্কুট উদ্ধার করেছে।

এই পরিস্থিতিতেই এ বার সীমান্ত এলাকার বাসিন্দাদের সাহায্য চাইছে বিএসএফ। বাহিনীর দক্ষিণবঙ্গ সীমান্তের ডিআইজি এ কে আর্য বলেন, ‘‘কারও দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে চোরাই সোনা উদ্ধার হলে সেই ব্যক্তি উদ্ধার হওয়া সোনার কিলোগ্রাম পিছু ১ লাখ ৪০ হাজার টাকার হিসাবে অর্থ পুরস্কার পাবেন।’’ বিএসএফ সূত্রের খবর, সোনা চোরাচালানের কাজে সীমান্ত এলাকায় খেতে কাজ করা চাষি কিংবা মজুরদের কাজে লাগায় পাচার চক্রের চাঁইরা। টাকার টোপ দিয়ে এলাকার বেকার যুবকদেরও কাজে যুক্ত করা হয়। ব্যাগে সোনা পুরে কাঁটাতারের ও-পার থেকে তা ছুড়ে দেওয়া হয় এ-পারে। সেই ব্যাগ কুড়িয়ে পৌঁছে দিতে হয় পাচারের চাঁইদের কাছে। তাই এই পাচারের হদিস এলাকার মানুষের কাছে থাকেই।

বিএসএফ সূত্রের খবর, সোনা চোরাচালানের অভিযোগে বেশির ভাগ সময় যাঁদের ধরা হয়, তাঁরা মূলত বাহক। তাঁরা মূলত টাকার বিনিময়ে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় সোনার বিস্কুট পৌঁছে দেন। কার সোনা তাঁরা নিয়ে যাচ্ছেন সেটা বহু ক্ষেত্রেই জানা থাকে না। তাই চোরাকারবারের চাঁইরা অধরা থেকে যায়। এই প্রশ্ন তুলেই তৃণমূল বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি তথা বাগদার বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাস বলেন, ‘‘আন্তর্জাতিক সোনা পাচার চক্র দীর্ঘদিন ধরে গরিব মানুষদের টাকার লোভ দেখিয়ে সোনার বিস্কুট পাচার করাচ্ছে। এই পাচার চক্রের চাঁইদের গ্রেফতার করতে হবে। না-হলে সোনার চোরাকারবার বন্ধ হবে না।’’

কেন বাড়ছে সোনার চোরাচালান? স্থানীয় সূত্রে খবর, সীমান্তে গরু পাচার প্রায় বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ফেনসিডিল, গাঁজার মতো জিনিসের পাশাপাশি বেড়েছে সোনার চোরাচালানও। এ কথা মানছে বিএসএফ-ও। তবে বিএসএফ সূত্রের খবর, সোনার চোরাচালান বাড়ার অন্যতম কারণ হল কালো টাকাকে সাদা করার চেষ্টা। কালো টাকা লুকোতে অনেকেই সেই টাকায় সোনা কিনছে। ফলে সোনার চাহিদা বাড়ছে। তাই বাড়ছে সোনার চোরাচালানও।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

BSF Gold Smuggling

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy