Advertisement
E-Paper

আম খেয়ে আমজনতা খুশি, চিন্তায় ব্যবসায়ী

চেটেপুটে আম খাচ্ছে আম বাঙালি। ও দিকে, বড় ব্যবসায়ীরা লাভের মুখ দেখতে না পেয়ে হতাশ। গত কয়েক বছরের মতো এ বার ঝড়-বৃষ্টি বেশি না হওয়ায় আমের ফলন বেশ ভাল হয়েছে। গ্রামের পথে হাঁটলেই দু’পাশে দেখা যাবে ফলনে উপচে পড়ছে গাছ। বাজারে আমের দামও পড়েছে হু হু করে। বসিরহাটের পাইকারি বাজারে ৫-৮ টাকার মধ্যে রাশি রাশি আম মিলছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৪ জুন ২০১৫ ০১:০৪
খোলা বাজারে দেদার বিকোচ্ছে আম।—নিজস্ব চিত্র।

খোলা বাজারে দেদার বিকোচ্ছে আম।—নিজস্ব চিত্র।

চেটেপুটে আম খাচ্ছে আম বাঙালি। ও দিকে, বড় ব্যবসায়ীরা লাভের মুখ দেখতে না পেয়ে হতাশ।

গত কয়েক বছরের মতো এ বার ঝড়-বৃষ্টি বেশি না হওয়ায় আমের ফলন বেশ ভাল হয়েছে। গ্রামের পথে হাঁটলেই দু’পাশে দেখা যাবে ফলনে উপচে পড়ছে গাছ। বাজারে আমের দামও পড়েছে হু হু করে। বসিরহাটের পাইকারি বাজারে ৫-৮ টাকার মধ্যে রাশি রাশি আম মিলছে। যা খোলা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ১০-১৮ টাকার মধ্যে। কিন্তু আম জনতার কাছে আম সস্তায় পৌঁছে গেলেও ব্যবসায়ীরা তেমন দাম পাচ্ছেন না। বসিরহাট আমের ফলনের ভাল জায়গা। বেঁকি, দন্ডিরহাট, পুঁড়ো, খোলাপোতা, দেগঙ্গা, গোপালপুর, মাটিয়া-সহ একাধিক এলাকায় ফলন হয়েছে ব্যাপক হারে। অনেকেই দাদন নিয়ে আমের চাষ করেছেন। ফলন বেশি হওয়ায় সস্তায় পাইকারি বাজারে আম বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন তাঁরা। সেই আমই কয়েক হাত ঘুরে খোলা বাজারে বিক্রি হচ্ছে কিছুটা হলেও বেশি দামে।

বসিরহাটের আম ব্যবসায়ীরা জানালেন, এখানকার আম শিলিগুড়ি, ঝাড়খণ্ড, বর্ধমান এবং কলকাতার বিভিন্ন বাজারে যায়। বাংলাদেশের বাজারেও বসিরহাটের আমের চাহিদা বেশ ভাল। এ ছাড়াও ভুটান, নেপাল-সহ কয়েকটি দেশে বসিরহাটের আম রফতানি করা হয়। কাঁচা-পাকা দু’য়েরই সমান কদর।

বেঁকি বাজারের ব্যবসায়ীদের অনেকে জানালেন, এখান থেকে প্রতিদিন গড়ে আড়াই-তিন হাজার টন আম ২৫-৩০টি গাড়িতে করে দেশ-বিদেশের বাজারে যায়। ফলে কয়েক কোটি টাকার এই ব্যবসায় গুণমান দেখে আম বাছাই করা, প্যাকেট বন্দি করা, গাড়িতে তোলার জন্য দিনে ৩-৪ শো শ্রমিক লাগে।

আম ব্যবসায়ী নুরে আলম মোল্লা, ফজলুর হকরা বলেন, ‘‘গত বছর এই সময়ে যেখানে বাংলাদেশে রফতানির জন্য কেজি প্রতি ১৫ টাকা মিলত, এ বারে সেখানে ১০ টাকার বেশি দাম পাওয়া হচ্ছে না। ফলন বেশি হওয়া যার একটা কারণ। তা ছাড়া, প্রাকৃতিক কারণে (বিশেষ করে সময় মতো বৃষ্টি না হওয়ায়) আমের ওজন কম হয়েছে। ফলে ব্যবসায়ীরা ক্ষতির মুখে পড়ছেন।’’ কাঁচা আম মাত্র ২০০ টাকা প্রতি মন দরে বিক্রি করতে হচ্ছে। তাই খুচরো বিক্রেতারা লাভবান হলেও বড় ব্যবসায়ীদের মার খেতে হচ্ছে। তা ছাড়া, আম গাছে স্প্রে, আম পাড়া, পাহারা দেওয়ার শ্রমিকের খরচও বেড়েছে। আবুল কালাম, স্বপন মণ্ডল, তুষার রক্ষিত, খালেক মোল্লাদের মতো ব্যবসায়ীরা জানালেন, আগে যে শ্রমিককে রোজ ১৬০-১৭০ টাকা পারিশ্রমিক দিতে হতো, এখন সেখানে ২৮০-৩০০ টাকা প্রতি দিন দিতে হচ্ছে।’’ তা-ও ঠিক মতো শ্রমিক মিলছে না বলে জানালেন এই ব্যবসায়ীরা। তা ছাড়া, বিদেশে আম পাঠানোর খরচও বেড়েছে। আম অতি পচনশীল ফল। লোকসানের ঝুঁকি প্রতি পদক্ষেপে। ফলে লাভ একটু বেশি না রাখলে চলে না। আগে একজন ব্যবসায়ী এ পার থেকে আম কিনে নিয়ে বাংলাদেশ বিক্রি করে যে পরিমাণ লাভ করতেন, এখন আর তেমনটা হয় না বলে দাবি ওই ব্যবসায়ীদের। কেজি প্রতি ২-৩ টাকার বেশি লাভ না থাকায় ব্যবসায়ীরা দিনকে দিন বিদেশের বাজারে আম বিক্রিতে উৎসাহ হারিয়ে ফেলছেন। এ বছর পরিস্থিতি ব্যবসায়ীদের জন্য মোটেই অনুকূল নয়, এমনটাই তাঁদের দাবি।

সমস্যা আছে আরও। ফলন এত বেশি হয়েছে, যথেষ্ট বিক্রি করার পরেও সব আম খালি করা যাচ্ছে না। ফলে আম নষ্টও হচ্ছে প্রচুর। অতিরিক্ত গরমে সব আম এক সঙ্গে পেকে যাচ্ছে। সব মিলিয়ে ব্যবসায়ীদের মাথায় হাত।

Mango Businessman Basirhat Market Alom Mollha
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy