Advertisement
০৬ মে ২০২৪
Calcutta High Court

Calcutta High Court: ‘গ্রুপ সি’ নিয়োগের তদন্তেও বাগ কমিটি

অনিয়ম নয়, নিয়োগে যে বেআইনি কার্যকলাপ জড়িত, ডিভিশন বেঞ্চের এ দিনের পর্যবেক্ষণে প্রকারান্তরে সেটাও উঠে এসেছে। কী ভাবে কমিশনের অজ্ঞাতে কমিশনের ডিজিটাল স্বাক্ষর অন্য কেউ ব্যবহার করতে পারল, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ০৭:৩৩
Share: Save:

সিবিআই নয়। রাজ্যের বিভিন্ন স্কুলে ‘গ্রুপ ডি’ বা চতুর্থ শ্রেণির কর্মী নিয়োগের মামলার মতো ‘গ্রুপ সি’ বা তৃতীয় শ্রেণির কর্মী নিয়োগে দুর্নীতি-অনিয়মের অভিযোগ নিয়ে তদন্ত করবে কলকাতা হাই কোর্টের গড়ে দেওয়া কমিটিই। বিচারপতি হরিশ টন্ডন এবং বিচারপতি রবীন্দ্রনাথ সামন্তের ডিভিশন বেঞ্চ বৃহস্পতিবার নির্দেশ দিয়েছে, এসএসসি বা স্কুল সার্ভিস কমিশনের বিরুদ্ধে তৃতীয় শ্রেণির স্কুলকর্মী নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত চালিয়ে প্রাক্তন বিচারপতি রঞ্জিতকুমার বাগের নেতৃত্বাধীন কমিটিকে তিন মাসের মধ্যে রিপোর্ট পেশ করতে হবে। এর আগে এই মামলায় বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন। তা স্থগিত করে দেয় ডিভিশন বেঞ্চ।

বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় প্রথমে চতুর্থ শ্রেণির স্কুলকর্মী নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগ সংক্রান্ত মামলাতেও সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন। সেই নির্দেশ খারিজ করে বাগ কমিটিকে দায়িত্ব দিয়েছিল ডিভিশন বেঞ্চ। কিন্তু নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তারা রিপোর্ট দিতে পারেনি। তার পরে কমিটির রিপোর্ট পেশের সময়সীমা বাড়িয়েছে কোর্ট। এ দিন চতুর্থ শ্রেণির কর্মী সংক্রান্ত সেই মামলায় কোর্ট জানিয়েছে, দু’সপ্তাহের মধ্যে কমিটিকে অন্তর্বর্তিকালীন রিপোর্ট দিতে হবে।

স্কুলে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মী নিয়োগে বড় ধরনের অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। মেয়াদ-উত্তীর্ণ প্যানেল থেকে কিছু চাকরিপ্রার্থীকে নিয়োগ করা হয়েছে বলে অভিযোগ। সেই সব প্রার্থী এসএসসি-র সুপারিশপত্রের ভিত্তিতেই চাকরি পেয়েছিলেন। কিন্তু কমিশন আদালতে জানিয়েছে, তারা কাউকে নিয়োগের সুপারিশ করেনি। অনেকেরই প্রশ্ন, কমিশন না-দিলে তো
সুপারিশপত্র জাল বলেই ধরে নেওয়া যায়। সে-ক্ষেত্রে ফৌজদারি তদন্ত হবে না কেন? এখনও চতুর্থ শ্রেণির কর্মী নিয়োগ সংক্রান্ত অভিযোগেরই তদন্ত শেষ হয়নি। তার উপরে কমিটি তিন মাসে তৃতীয় শ্রেণির কর্মী
নিয়োগে দুর্নীতির তদন্ত শেষ করতে পারবে কি না, তা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে জনমানসে।

মূল মামলাকারীদের আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য, সুদীপ্ত দাশগুপ্ত ও বিক্রম বন্দ্যোপাধ্যায় এ দিন কোর্টে জানান, ওই দু’ধরনের স্কুলকর্মীর পদে নিয়োগে দুর্নীতি হয়েছে। বেতন দেওয়ার আগে রাজ্যের অর্থ দফতর নানা বিষয় যাচাই করে নেয়। কিন্তু এ ক্ষেত্রে সেটা হয়নি। এই নিয়োগকে কার্যত একটি বৃহত্তর ষড়যন্ত্র বলে অভিহিত করেন তাঁরা। তা সত্ত্বেও রাজ্য সরকার কেন সিবিআই তদন্ত ঠেকাতে তৎপর, প্রশ্ন তোলেন তাঁরা। কমিশনের আইনজীবী
কিশোর দত্ত সিবিআই তদন্তের বিরোধিতা করেন।

অনিয়ম নয়, নিয়োগে যে বেআইনি কার্যকলাপ জড়িত, ডিভিশন বেঞ্চের এ দিনের পর্যবেক্ষণে প্রকারান্তরে সেটাও উঠে এসেছে। কী ভাবে কমিশনের অজ্ঞাতে কমিশনের ডিজিটাল স্বাক্ষর অন্য কেউ ব্যবহার করতে পারল, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। এর জবাব কমিশনকে দিতে হবে বলে জানিয়েছে ডিভিশন বেঞ্চ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Calcutta High Court School service commission
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE