ওবিসি শংসাপত্র মামলার শুনানি কলকাতা হাই কোর্টে। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।
রাজ্যের নতুন ওবিসি বিজ্ঞপ্তির উপর স্থগিতাদেশ দিল কলকাতা হাই কোর্ট। আগামী ৩১ জুলাই পর্যন্ত অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ বহাল থাকবে।
মামলার নির্দেশ দিচ্ছেন দুই বিচারপতি। আর কিছু ক্ষণ পরেই ঘোষণা।
মূল মামলাকারীদের আইনজীবী এস শ্রীরাম: রায়ে কোনও কিছু ‘গ্রে’ অংশ নেই। আপনাদের রায়ে আইন মেনে পদক্ষেপ করতে বলা হয়েছে। আদালত আইন সঠিক ভাবে বুঝেই রায় দিয়েছে। কিন্তু রাজ্যের পদক্ষেপ সেই অনুযায়ী হয়নি।
ওবিসি মামলায় মঙ্গলবারের শুনানিতে হাই কোর্টের আগের রায় নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করলেন আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘আপনাদের রায়ে কিছু গ্রে (অস্পষ্ট) অংশ রয়েছে। হতে পারে আমি ভুল। কিন্তু বলতে হচ্ছে।’’ কল্যাণের আর্জি, ‘‘আমি সংসদের কমিটিতে রয়েছি। ২০১৫ সাল থেকে কেন্দ্রীয় কমিশন কোনও রিপোর্ট জমা দেয়নি। অন্তর্বতী নির্দেশ দেবেন না। সুপ্রিম কোর্টের জন্য অপেক্ষা করা উচিত।’’
বিচারপতি চক্রবর্তী: বিধানসভায় পেশ করার আগে বিজ্ঞপ্তি ঘোষণা করে দিলেন? রাজ্য: ড্রাফ্ট কপি জানানো হয়েছে। কিন্তু গেজেট প্রকাশ হয়নি।
রাজ্য: বিধানসভায় পেশ করা হয়েছে বিষয়টি। মুখ্যমন্ত্রী, বিরোধী দলনেতা এই বিষয়ে আলোচনায় অংশ নিয়েছেন।
রাজ্যের উদ্দেশে বিচারপতি চক্রবর্তী: আপনি আমাদের রায় নিয়ে কেন বিস্তারিত বর্ণনা দিচ্ছেন? আপনি সুপ্রিম কোর্টে গিয়ে বলুন। আপনারা সেখানে চ্যালেঞ্জ করেছেন। নির্দিষ্ট করে বলুন। এখানকার বিষয় নিয়ে বলুন। আমরা ৬৬টি সম্প্রদায়কে নিয়ে কিছু করিনি। তাদের নিয়ে প্রক্রিয়া চালিয়ে নিয়ে যান। আমরা কোনও নির্দেশ দিতে চাইনি। সুপ্রিম কোর্টে মামলা রয়েছে। আপনারা পদক্ষেপ করার জন্য আমাদের মামলা শুনতে হচ্ছে।
বিচারপতি চক্রবর্তী: এখন আপনারা কেন পদক্ষেপ করছেন? কেন সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের জন্য অপেক্ষা করছেন না? আপনার প্রশ্ন আপনাকেই ফিরিয়ে দিচ্ছি। বিচারপতি মান্থা: গত ১৫ বছর ধরে সুবিধা দিয়ে এসেছেন। আইন বলছে, ১০ বছর ছাড়া সমীক্ষা করতে হয়। সেই সমীক্ষা তো করা হয়নি।
দুই বিচারপতির বেঞ্চ: মামলার গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে রায় আগেই বলে দিয়েছে আদালত।
রাজ্য: মামলাকারী অমলচন্দ্র দাস কে? তাঁর কী উদ্দেশ্য রয়েছে? জনস্বার্থ মামলায় জনগণের স্বার্থ দেখা উচিত। তিনি আগে কোনও পদক্ষেপ করেননি। হঠাৎ আদালতে এসে বলছেন কেন?
রাজ্য: আমাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে কোনও সম্প্রদায়কে সুযোগ করে দিচ্ছি আমরা।
রাজ্যের উদ্দেশে বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী: আপনারা কোনও পদক্ষেপ করছেন না কেন? আপনারা না করলে আমরাও করব না। সুপ্রিম কোর্টে কী হয় দেখুন।
এজি কিশোর দত্ত: রাজ্য সুপ্রিম কোর্টে পদক্ষেপের কথা জানিয়েছে। সেখানে তালিকা জমা দেওয়া হবে। শীর্ষ আদালতে কী হয়, তার জন্য অপেক্ষা করা উচিত।
বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা: সমীক্ষার বিষয়ে বলেছেন। কিন্তু বিজ্ঞপ্তির বিষয়ে বলেছেন কি?
রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল (এজি) কিশোর দত্ত: মামলাটি সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন। সেখানে পুরো বিষয়টি বলা হয়েছে। সেখানে সমীক্ষার কথাও জানানো হয়েছে।
কেন্দ্রের আইনজীবী: ওই বৈঠকে উঠে এসেছে ওবিসি নিয়ে দু'টি সম্প্রদায়ের মধ্যে পরিবর্তন করা হয়েছে। যার ফলে ‘ডেঞ্জারাস ডেমোগ্রাফিক এফেক্ট’ পড়বে। রাজ্য অনগ্রসর শ্রেণি কমিশন স্বাধীন ভাবে সিদ্ধান্ত নেয়নি।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে চেয়ারম্যান হিসাবে প্রধানমন্ত্রী এনসিবিসি-র সঙ্গে বৈঠক করেন। সেখানে ওবিসি কারা, তা নিয়ে আলোচনা হয়। জানালেন কেন্দ্রের অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল অশোককুমার চক্রবর্তী।
২০১০ সালের পরে তৈরি রাজ্যের সব ওবিসি শংসাপত্র বাতিল করে দেয় কলকাতা হাই কোর্ট। ২০২৪ সালের ২২ মে ওই নির্দেশ বহাল রেখে রায় দিয়েছিল আদালত। রায়ে বলা হয়, ২০১০ সালের আগে ৬৬টি সম্প্রদায়ের ওবিসি সার্টিফিকেট বৈধ। তার পর থেকে সব ওবিসি শংসাপত্র বাতিল করা হচ্ছে। উচ্চ আদালতের ওই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে যায় রাজ্য। কিন্তু শীর্ষ আদালত হাই কোর্টের রায়ে স্থগিতাদেশ দেয়নি। মামলাটি এখন সেখানে বিচারাধীন।
রাজ্যের বক্তব্য ছিল,এই মামলার জন্য কোন কোন ক্ষেত্রে কাজের সমস্যা হচ্ছে। সোমবারই হাই কোর্টের বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী এবং বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার এজলাসে রাজ্য তাদের বক্তব্য জানিয়েছে। তাতে বলা হয়, ওবিসি মামলার জন্য কলেজে ভর্তি থেকে শুরু করে নিয়োগ প্রক্রিয়া, সব আটকে রয়েছে।
ওবিসি শংসাপত্র বাতিল মামলায় আদালতের নির্দেশ ছিল সামাজিক, আর্থিক এবং পেশাগত ভাবে ভিন্ন রাজ্যের সব জনগোষ্ঠীর মধ্যে সমীক্ষা করতে হবে। কিন্তু রাজ্য জেলাভিত্তিক কয়েকটি পরিবারের মধ্যে সমীক্ষা সীমাবদ্ধ রেখেছে বলে দাবি করেছেন মামলাকারীদের। তাঁদের বক্তব্য, পূর্বতন ওবিসি তালিকার সঙ্গে বর্তমান তালিকার সামান্য কিছু পার্থক্য রয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy