নানা স্তরের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পঠনপাঠনের পাশাপাশি খেলাধুলো, আঁকাআঁকি, নাচগান শেখানোর রেওয়াজ বেশ পুরনো। সিবিএসই বোর্ডের স্কুল এ বার শেখাবে, কী ভাবে তৈরি করতে হয় স্যান্ডউইচ, কেমন করে রাঁধা যায় ভাত, ডাল, ডিমসেদ্ধ ইত্যাদি। কলকাতার কয়েকটি সিবিএসই স্কুলের শিক্ষকেরা জানান, বোর্ড নির্দেশিকা পাঠিয়ে বলেছে, সঙ্গীত, নৃত্য, নাটক, ভিসুয়াল আর্ট ক্লাস ছাড়াও সপ্তাহে রন্ধনশিল্পের অন্তত দু’টি ক্লাস রাখতে হবে। ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণির পড়ুয়াদের রন্ধনশিল্পের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।
কিন্তু কিছু প্রশ্ন উঠছে। যেমন, রান্না শেখানোর পরিকাঠামো স্কুলগুলোতে আছে কি? ক্লাসে কি গ্যাস জ্বালিয়ে বা মাইক্রো ওভেনে রান্না শেখানো হবে? নাকি শুধু রান্নার পদ্ধতি আলোচনা করা হবে মৌখিক ভাবে?
সিবিএসই স্কুলের শিক্ষকদের একাংশ জানাচ্ছেন, মৌখিক শিক্ষা ছাড়াও হাতেকলমে শেখানো হবে। তবে তার জন্য চাই যথাযথ পরিকাঠামো। তাঁদের মতে, রান্নার ক্লাস মানে শুধু হাতেকলমে রান্না শেখানো নয়। বিভিন্ন পদের খাদ্যগুণ সম্পর্কে ধারণা দেওয়া হবে পড়ুয়াদের। বিভিন্ন পুষ্টিকর খাদ্যের উপযোগিতা, কোথায় কোন শস্যের চাষ হয়, কোন মশলায় কী ধরনের রান্না ভাল হয়, কোন মশলার কী গুণ ইত্যাদি জানানো হবে ছাত্রছাত্রীদের।
সল্টলেকের শিক্ষা নিকেতন অ্যাকেডেমির ডিরেক্টর রেখা বৈশ্যের বক্তব্য, সব কিছুর আগে দরকার পরিকাঠামো। ‘‘রান্না শেখাতে একটা পরিকাঠামো লাগে। সেটা তৈরি করতে হবে। সবে তো শিক্ষাবর্ষ শুরু হল। পড়াশোনার দিকটিকে প্রাধান্য দেওয়া বেশি জরুরি,’’ বললেন রেখাদেবী।
সিবিএসই বোর্ডের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন সাউথ পয়েন্ট হাইস্কুলের অধ্যক্ষ রূপা সান্যাল ভট্টাচার্য। ‘‘কী ভাবে এটা বাস্তবায়িত করব, তার একটা পরিকল্পনা করছি। তবে এখনও আমরা পুরোপুরি প্রস্তুত নই। তবে এই উদ্যোগ খুবই ভাল। প্রত্যেকের স্বাবলম্বী হওয়াটা খুব জরুরি,’’ বলেন রূপাদেবী। তিনিও মনে করেন, রান্নার ক্লাস চালু করার জন্য দরকার যথাযথ পরিকাঠামো।
শ্রীশিক্ষায়তন স্কুলের সচিব তথা শ্রীশিক্ষায়তন ফাউন্ডেশনের মহাসচিব ব্রততী ভট্টাচার্যও মনে করেন, এটা খুব ভাল উদ্যোগ। ‘‘রান্না করাটা দৈনন্দিন জীবনের অঙ্গ। ছেলেমেয়েরা এখন খুব কম বয়সেই বাইরে পড়তে যায়। অনেকে চাকরি করতে যায়। খুব সাধারণ কিছু রান্না না-জানলে অসুবিধায় পড়তে হয় তাদের। খুব সাধারণ কিছু খাবার রান্না যদি স্কুলেই শিখে নেওয়া যায়, তা হলে অন্যের উপরে নির্ভর করতে হয় না। ডাল, ভাত, ডিমসেদ্ধ বা স্যান্ডউইচ ছাড়াও পুষ্টিকর কিছু রান্না পড়ুয়াদের শেখানো যেতে পারে,’’ বলেন ব্রততীদেবী। তবে তাঁর মতে, স্কুলে দৈনন্দিন ক্লাসের সময়সীমা বাড়ছে না। সপ্তাহে যদি দু’টি রান্নার ক্লাস রাখতে হয়, তা হলে কোন ক্লাস বাদ দিয়ে ওই ক্লাস দু’টিকে রুটিনে রাখতে হবে, তার একটা ঠিকঠাক পরিকল্পনা দরকার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy