ফাইল চিত্র।
পঞ্চায়েত ভোটের মুখে রাজ্যের তৃণমূল সরকার যখন তার সাফল্যের বিভিন্ন দিক তুলে ধরতে তৎপর, তারই মধ্যে কেন্দ্রীয় বরাদ্দ খরচ করতে না পারার অভিযোগ তুলল কেন্দ্র। গোটা দেশের প্রায় সব রাজ্যের কৃষি দফতরের কর্তাদের সামনে দাঁড়িয়ে মোদী সরকারের কৃষিমন্ত্রী রাধামোহন সিংহ আজ দাবি করলেন, জাতীয় খাদ্য সুরক্ষা মিশন ও রাষ্ট্রীয় কৃষি বিকাশ যোজনায় প্রায় ৩০০ কোটি টাকা খরচ করতে পারেনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। এই অভিযোগকে অবশ্য ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছে নবান্ন।
চলতি আর্থিক বছরে খরিফ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা স্থির করতে কৃষি মন্ত্রক এ দিন বিজ্ঞান ভবনে রাজ্যগুলির বৈঠক ডেকেছিল। পশ্চিমবঙ্গের কৃষিসচিব সঞ্জীব চোপড়া ছিলেন সেখানে। খরিফ ফসলের চাষ, চাষিদের আয় দ্বিগুণ করার প্রকল্প নিয়ে কথা বলতে বলতেই রাধামোহন হঠাৎই পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সমালোচনা শুরু করেন। বলেন, ‘‘দু’টি গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পে পশ্চিমবঙ্গে পরিসংখ্যান দেখছিলাম। জাতীয় খাদ্য সুরক্ষা মিশনে মাত্র ৩৪ কোটি টাকা খরচ হয়েছে। ১০০ কোটি টাকা খরচ হয়নি। রাষ্ট্রীয় কৃষি বিকাশ যোজনায় খরচ হয়নি ২০০ কোটি টাকা।’’
কৃষিমন্ত্রীর এই অভিযোগ শুনে নবান্নের কৃষি দফতরের কর্তারা পাল্টা প্রশ্ন তুলেছেন, এত টাকা খরচ না হয়ে পড়ে থাকলে, তার পরের দফায় রাজ্য টাকা পেল কী করে?
কৃষি দফতরের এক কর্তার পাল্টা যুক্তি, ‘‘২০১৭-’১৮ আর্থিক বছরে রাষ্ট্রীয় কৃষি বিকাশ যোজনায় পশ্চিমবঙ্গ ৩৮৪ কোটি ৪৫ লক্ষ টাকা পেয়েছে। খরচ হয়েছে ৩১০ কোটি ৫৮ লক্ষ টাকা। খাদ্য সুরক্ষা মিশনে বরাদ্দ হয়েছে ১৯৩ কোটি ২৪ লক্ষ টাকা। খরচ হয়েছে ১১৫ কোটি ৬১ লক্ষ টাকা। অর্থাৎ দু’টি প্রকল্প মিলিয়ে খরচ না হওয়া টাকার অঙ্কটি হচ্ছে ১৫১ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ৩০০ কোটির হিসেব পেলেন কোথা থেকে!’’ রাজ্যের কর্তাদের পাল্টা প্রশ্ন, কৃষিমন্ত্রী কোন সময়কাল নিয়ে অভিযোগ তুলছেন, সেটাই তো স্পষ্ট নয়।
টাকা খরচ না হওয়ার অভিযোগ তুলেও কৃষিমন্ত্রী অবশ্য সান্ত্বনার সুরে সব রাজ্যের আধিকারিকদের উদ্দেশে বলেন, ‘‘আপনাদের দোষ নয়। একটা ব্যবস্থা বহু দিন ধরে চলে আসছে। কিন্তু সরকারের অর্থ যাতে খরচ হয়, তা নিশ্চিত করতে হবে।’’
ভাল বর্ষার পূর্বাভাসে ভর করে ২০১৮-’১৯ কৃষি বর্ষে ২,৮৩৭ লক্ষ টন খাদ্যশস্য উৎপাদনের লক্ষ্য নিয়েছে কৃষি মন্ত্রক। গত বছরের তুলনায় যা প্রায় ৬০ লক্ষ টন বেশি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy