মাঝে মাত্র চার দিনের সংঘর্ষ বিরতি। বাংলায় সেনা মোতায়েনকে ঘিরে ফের সংঘাত শুরু হয়ে গেল মোদী-মমতার।
সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গের ১৮টি জায়গায় সেনা মোতায়েন নিয়ে কেন্দ্র-রাজ্য চাপানউতোর একপ্রকার থিতিয়েই পড়েছিল গত রবিবার থেকে। কিন্তু শুক্রবার তা ফের উস্কে দিলেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী মনোহর পর্রীকর। এ দিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে পাঠানো চিঠিতে পর্রীকরের বক্তব্য, মুখ্যমন্ত্রী যে অভিযোগ করেছেন তাতে তিনি মর্মাহত। ‘‘পরস্পরের বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন অভিযোগ আনার বিলাসিতা রাজনৈতিক দল বা নেতাদের থাকতে পারে, কিন্তু সেনা বাহিনীর প্রসঙ্গ উত্থাপন করার আগে সতর্ক থাকা উচিত।’’ —লিখেছেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী।
চিঠি পেয়েই চটে যান মমতা। ঘণ্টাখানেকের মধ্যে সাউথ ব্লকে পাল্টা চিঠি পাঠিয়ে দেন তিনি। মমতা লেখেন, ‘‘আমার অভিযোগ সেনার বিরুদ্ধে ছিল না। ছিল আপনার সরকার ও তার নীতির বিরুদ্ধে। একটি মহান প্রতিষ্ঠানের (সেনাবাহিনীর) অপব্যবহার করে এমন প্রতিহিংসার রাজনীতি করা আমার সুদীর্ঘ রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক জীবনে কখনও দেখিনি।’’
আচমকা এমন চিঠি পাঠানোর পিছনে কেন্দ্রের শাসক দলের রাজনীতি দেখছেন তৃণমূল নেতারা। এবং তাঁদের সঙ্গে অনেকটাই একমত বিষয়টি সম্পর্কে ওয়াকিবহাল মহল। তাঁদের প্রশ্ন, বিষয়টি এক প্রকার নিষ্পত্তি হয়ে যাওয়ার পরে এমন চিঠি পাঠানোর কী দরকার ছিল? রাজনীতির অভিযোগ আরও অক্সিজেন পেয়েছে বিজেপি নেতাদের আচরণে। পর্রীকর যে মমতাকে চিঠি দেবেন, তা সকাল থেকেই চাউর করে দেন তাঁরা। বেলা সওয়া ১০টা নাগাদ চিঠির প্রতিলিপিও সাংবাদিকদের হাতে পৌঁছে যায়। পর্রীকরকে লেখা চিঠিতে মমতার দাবি, ‘‘বৈদ্যুতিন মাধ্যম ওই চিঠি দেখানোর অনেক পরে আমি ফ্যাক্স বার্তাটি পেয়েছি। যা খুবই বিস্ময়কর!’’
সূত্রের খবর, মমতাকে চিঠিটি পাঠানোর আগে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করেন পর্রীকর। নরেন্দ্র মোদীর সম্মতি পাওয়ার পরেই ফ্যাক্স করে নবান্নে পাঠানো হয় চিঠিটি।
মমতাকে পাঠানো চিঠিতে পর্রীকরের দাবি, টোল প্লাজায় যে সেনা মোতায়েন হবে, তা রাজ্যকে অনেক আগেই জানানো হয়েছিল। মুখ্যমন্ত্রী চাইলেই খোঁজ নিয়ে দেখতে পারতেন। তাঁর কথায়, ‘‘ভারতীয় সেনাবাহিনীর পেশাদারিত্ব ও অরাজনৈতিক আচরণের জন্য দেশ গর্ব করে। কিন্তু আপনার অভিযোগ সেনার মনোবলে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে, যা আপনার মতো অভিজ্ঞতা সম্পন্ন মানুষের থেকে কাঙ্ক্ষিত নয়।’’
কড়া ভাষাতেই এই অভিযোগের জবাব দিয়েছেনন মমতা। তিনি লিখেছেন, ‘‘রাজনৈতিক দল ও নেতাদের ভিত্তিহীন অভিযোগ আনার বিলাসিতা রয়েছে বলে আপনার যে ধারণা, তা আপনার দলের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হতে পারে। আমাদের নয়।’’
রাজনীতিকদের একাংশের মতে, নোট-সঙ্কট নিয়ে মমতা যে ভাবে দেশ জুড়ে প্রচারে নেমেছেন, এবং বিরোধী ঐক্য গড়তে অনুঘটকের কাজ করছেন, তাতে চাপে পড়েছে বিজেপি। তাই মমতাকেও বিব্রত করার কৌশল নেওয়া হয়েছে। পর্রীকরের চিঠি সেই কৌশলেরই অঙ্গ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy