ধৃত সুমন গুপ্ত। শনিবার বিশ্বরূপ বসাকের তোলা ছবি।
মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করিয়ে দেওয়ার নাম করে লক্ষ লক্ষ টাকা প্রতারণার অভিযোগে এক চিকিৎসকের পুত্রকে গ্রেফতার করল সিআইডি। শুক্রবার মালবাজারে একটি বেসরকারি ব্যাঙ্কের সামনে থেকে ওই যুবককে পাকড়াও করা হয়।
সিআইডি সূত্রের খবর, ধৃতের নাম সুমন্ত্র গুপ্ত। তার বাড়ি শিলিগুড়িতে। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, সুমন্ত্রর বাবা বিহারের একটি মেডিক্যাল কলেজের সুপার। শনিবার তাকে শিলিগুড়ি আদালতে পেশ করা হয়। শিলিগুড়ি আদালতের বিচারক শুভ্রা ভৌমিক ধৃতকে ১৪ দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেন। মেডিক্যালে ভর্তি করিয়ে দেওয়ার নাম করে প্রতারণার ওই মামলায় এই নিয়ে তিনজনকে গ্রেফতার করা হল বলে জানিয়েছে সিআইডি। ধৃতের আইনজীবী শুভাশিস সাহা অবশ্য দাবি করেন, ‘‘আমার মক্কেলকে ব্যক্তিগত আক্রোশ থেকে ফাঁসানো হয়েছে।
উনি নির্দোষ।’’
ভবানীভবন সূত্রের খবর, গত বছর নভেম্বর মাসে আন্দামানের বাসিন্দা সাজিয়া আহমেদ শিলিগুড়ি পুলিশের কাছে ওই প্রতারণার অভিযোগ দায়ের করেন।
অভিযোগে বলা হয়, ২০১২ সালে হায়ার সেকেন্ডারি পাশ করার পর মেডিক্যালে ভর্তির চেষ্টা করছিলেন তিনি। এই সময় তাঁর আলাপ হয় বেঙ্গালুরুর এক যুবকের সঙ্গে। সে সাজিয়াকে বেঙ্গালুরুর একটি মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করিয়ে দেওয়ার আশ্বাস দেয়। তবে তার জন্য মোটা টাকা দাবি করে।
এরপর ওই যুবকই গুয়াহাটির একটি বেসরকারি এজেন্সির সঙ্গে সাজিয়াদের যোগাযোগ করিয়ে দেয়। সাজিয়ার অভিযোগ, ২০১৩ সালে দফায় দফায় কয়েক লক্ষ টাকা নেয় ওই সংস্থা। কিন্তু কোনও কলেজেই ভর্তির সুযোগ করে দিতে পারেনি। এরপরেই সাজিয়া তাদের কাছে টাকা ফেরত চাইলে ২০১৫ সালের গোড়ায় শিলিগুড়ির বাসিন্দা সুমন্ত্র গুপ্তর সঙ্গে তাদের যোগাযোগ করিয়ে দেয় ওই সংস্থা।
পুলিশের দাবি, সুমন্ত্ররা সাজিয়াকে কাটিহারের একটি মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করিয়ে দেবে বলে ফের টাকা নেয়।
সুমন্ত্রর বাবা ওই কলেজের সুপার বলে পুলিশের দাবি। পুলিশ সূত্রের খবর, সুমন্ত্রকে টাকা দেওয়ার পরেও কোথাও ভর্তি হতে না পেরে প্রতারিত সাজিয়া শিলিগুড়ি থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।
তদন্তকারীদের দাবি, শিলিগুড়ি থানা এলাকার প্রধাননগরে ওই টাকা লেনদেন হওয়াতে গত বছরে নভেম্বর মাসে শিলিগুড়ি থানায় অভিযোগ দায়ের হয়। তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারেন, ওই চক্রের জাল ভিন রাজ্যে ছড়িয়ে। এর পরেই তদন্তভার তুলে দেওয়া সিআইডির হাতে।
গোয়েন্দারা জানান, প্রাথমিক তদন্তে তাঁরা জানতে পারেন ওই চক্রের মূল চাঁই সুমন্ত্র। দীর্ঘদিন পালিয়ে বেড়াচ্ছিল সে। চলতি মাসে এই চক্রের অন্য দুই সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের নাম কাশেম আলি এবং অজিত কুমার শর্মা।
তাদের জেরা করেই সুমন্ত্রর নাম সামনে আসে। শুক্রবার মালবাজারে একটি ব্যাঙ্কে ঢোকার সময় তার পিছু ধাওয়া করে তাকে গ্রেফতার করা হয়। সিআইডির দাবি, ওই চক্রের সঙ্গে বিহারের ওই মেডিক্যাল কলেজের যোগসূত্র রয়েছে কী না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, গত চার বছরে কয়েক শো ছাত্র-ছাত্রীর কাছে থেকে কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে ওই চক্রটি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy