E-Paper

শিক্ষক নেই, ঘর নেই, নয়া অনার্স ঘিরে প্রশ্ন

চার বছরের স্নাতক পাঠ্যক্রমে কত সমস্যা হতে পারে, তা চিহ্নিত করা হয়েছে। পরিকাঠামো ও শ্রেণিকক্ষের সংখ্যা বৃদ্ধির বিষয়টি আছে তার মধ্যেই। দ্রুত কাজ নিয়ে আলোচনা হয়েছে পূর্ত বিভাগের সঙ্গে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২২ মার্চ ২০২৩ ০৬:৫২
College Students

জাতীয় শিক্ষানীতি মেনে এই কারিকুলামে চার বছরের অনার্সের কথা বলা হয়েছে। কলেজ অধ্যক্ষদের একাংশের বক্তব্য, এর জন্য শ্রেণিকক্ষ বাড়াতে হবে। প্রতীকী ছবি।

প্রথমাবধি বিরোধিতার আবহে বঙ্গেও জাতীয় শিক্ষানীতির অনুসরণে স্নাতক স্তরে ‘কারিকুলাম অ্যান্ড ক্রেডিট ফ্রেমওয়ার্ক’ চালু করার উদ্যোগ নানা প্রশ্ন ও বিতর্কের মুখে পড়েছে। তার মধ্যেই আসন্ন শিক্ষাবর্ষ থেকে সেটি রূপায়ণ করতে চাইছে রাজ্য সরকার। প্রশ্ন উঠছে, এত দ্রুত কী করে তা সম্ভব? জাতীয় শিক্ষানীতির বিভিন্ন দিক খতিয়ে দেখতে যে-কমিটি গড়া হয়েছে, তার ভবিষ্যৎই বা কী হবে?

জাতীয় শিক্ষানীতি মেনে এই কারিকুলামে চার বছরের অনার্সের কথা বলা হয়েছে। কলেজ অধ্যক্ষদের একাংশের বক্তব্য, এর জন্য শ্রেণিকক্ষ বাড়াতে হবে। বাড়ি তৈরিতে দেরি হয়। এই ফ্রেমওয়ার্ক অনুযায়ী ছাত্রছাত্রীদের নানান পাঠ্যক্রম তৈরি করা দরকার। সেটাও সময়সাপেক্ষ। তা ছাড়া কলেজে কলেজে শিক্ষকের আকাল। শিক্ষক নিয়োগের জন্য সিএসসি ২০২২ সালের জানুয়ারিতে ইন্টারভিউ শুরু করে ১৫ মাসেও তা শেষ করতে পারেনি বলে অভিযোগ।

নিউ আলিপুর কলেজের অধ্যক্ষ জয়দীপ ষড়ঙ্গী জানান, তাঁরা পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন কলেজকে নিয়ে জাতীয় শিক্ষানীতি বিষয়ে কর্মশালা করেছেন। চার বছরের স্নাতক পাঠ্যক্রমে কত সমস্যা হতে পারে, তা চিহ্নিত করা হয়েছে। পরিকাঠামো ও শ্রেণিকক্ষের সংখ্যা বৃদ্ধির বিষয়টি আছে তার মধ্যেই। দ্রুত কাজ নিয়ে আলোচনা হয়েছে পূর্ত বিভাগের সঙ্গে।

নিখিল বঙ্গ অধ্যক্ষ পরিষদের সম্পাদক এবং চিত্তরঞ্জন কলেজের অধ্যক্ষ শ্যামলেন্দু চট্টোপাধ্যায়ের বক্তব্য, এই নীতি চালু করতে হলে কেন্দ্রকে সম্পূর্ণ আর্থিক দায় নিতে হবে। কারিকুলামে মাল্টিপল এগ্‌জ়িট ও এন্ট্রির নিয়ম মেনে পড়ুয়ারা পড়া ছাড়লে ক’জন আবার ফিরে আসবে, তা বলা শক্ত। বিষয় নির্বাচনের ক্ষেত্রে ছাত্রছাত্রীদের কতটা স্বাধীনতা থাকবে, সেই প্রশ্নও তুলেছেন ওই অধ্যক্ষ।

প্রশ্ন উঠছে, জাতীয় শিক্ষানীতি খতিয়ে দেখার জন্য গড়া কমিটির রিপোর্ট জনসমক্ষে এল না কেন? সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, ওই শিক্ষানীতি খতিয়ে দেখা এবং বিকল্প শিক্ষানীতি প্রণয়নের জন্য গায়ত্রী চক্রবর্তী স্পিভাক, সুগত বসু-সহ ১০ শিক্ষাবিদকে নিয়ে গত বছর রাজ্যের গড়া কমিটির রিপোর্ট ডিসেম্বরেই শিক্ষা দফতরে জমা পড়েছে। নবান্নে সেই রিপোর্টের ‘প্রেজেন্টেশন’ বা উপস্থাপনারও ব্যবস্থা হয়েছিল। তার পরে সব চুপচাপ। সারা ভারত সেভ এডুকেশন কমিটির সম্পাদক তরুণকান্তি নস্কর এ দিন জানান, পার্থ চট্টোপাধ্যায় শিক্ষামন্ত্রী থাকাকালীন একটি কমিটি গড়া হয়েছিল। তার রিপোর্ট কেউ চোখে দেখেনি। গত বছর গড়া কমিটির রিপোর্টও জনসমক্ষে আসেনি। ‘‘শিক্ষামন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছিলাম। মুখ্যমন্ত্রীরও সাক্ষাৎ চেয়েছিলাম। কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে স্টেকহোল্ডারদের কিছুই জানানো হয়নি,’’ বলেন তরুণকান্তি।

এই অবস্থায় রাজ্য সরকারের সাম্প্রতিক নির্দেশের বিরুদ্ধে পথে নামছে সারা বাংলা সেভ এডুকেশন কমিটি। ওই সংগঠনের সম্পাদক বিশ্বজিৎ মিত্র এ দিন জানেন, ২৪ মার্চ কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়-সহ রাজ্যের সব বিশ্ববিদ্যালয়গুলির ফটকে বিক্ষোভ দেখানো হবে এবং পোড়ানো হবে রাজ্য সরকারের নির্দেশের প্রতিলিপি। এ ছাড়াও শিক্ষামন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি পেশ করা হবে।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

College UGC

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy