শেষ বার এসেছিলেন দার্জিলিঙে মন্ত্রিসভার বৈঠক করতে। সে দিন উত্তাল হয়েছিল পাহাড়। অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছিল প্রায় গোটা মন্ত্রিসভা। তার ৫১ দিন পরে আবার উত্তরবঙ্গ সফরে এলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবং এ বার তিনি বাগডোগরায় নামার দু’ঘণ্টা আগে বিমল গুরুঙ্গ বললেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীকে আমি পাহাড়ে আমন্ত্রণ করছি। এসে পরিস্থিতি দেখে যান।’’
ভিন্ন প্রেক্ষাপটে হলেও গুরুঙ্গ যে ভাবে মুখ্যমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন, তাকে তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন পাহাড়-সমতলের অনেকেই। এর আগে যখন পাহাড় উত্তপ্ত হয়েছে, প্রশাসনিক কর্তা থেকে নেতা-মন্ত্রীদের সেখানে ঢোকার ব্যাপারে অলিখিত নিষেধাজ্ঞাই জারি করেছিলেন আন্দোলনকারীরা। এ বারে কবি ভানুভক্তের জন্মদিন পালন করতে পাহাড়ে যাওয়ার পথে আক্রমণের মুখে পড়তে হয়েছিল পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেবকে। ডিএম, এসপিকে তো আগেই পাহাড় ছাড়ার ফতোয়া দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: চুপ কেন সুরেন্দ্র, বিঁধলেন গুরুঙ্গ
তা হলে গুরুঙ্গ সুর বদলালেন কেন? পাহাড়ের রাজনীতির অনেক প্রবীণ ব্যক্তিত্বের ধারণা, তিনি আসলে দ্রুত আলোচনায় বসার বার্তা দিয়েছেন। যদিও বন্ধের ব্যাপারে মোর্চা প্রধান এখনও অনড়। পাহাড় রাজনীতির লোকজনদের অবশ্য বক্তব্য, মোর্চার পক্ষে এখন বন্ধ থেকে সরে আসা সম্ভব নয়। বরং বন্ধ চালিয়ে গেলে প্রশাসনের উপরে পাল্টা চাপ বজায় রাখা সম্ভব।
এ দিন সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ বাগডোগরা হয়ে শিলিগুড়ি পৌঁছন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানে তিনি বিশদে পাহাড় পরিস্থিতির খোঁজ নেন। সরকারি সূত্রের খবর, মুখ্যমন্ত্রী শীর্ষ অফিসারদের জানিয়েছেন, যারা গোলমাল পাকাচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে কড়া আইনি পদক্ষেপ করতে হবে। এ মাসেও যেমন সরকারি ও জিটিএ কর্মীদের অফিসে গরহাজিরার জন্য বেতন কাটা হয়েছে। তবে সাধারণ পাহাড়বাসীর কথা ভেবে অশান্তি ছেড়ে আলোচনার টেবিলে বসতে চাইলে রাজ্যের যে আপত্তি নেই, সেটাও তিনি ফের জানিয়ে দিয়েছেন।
আজ, মঙ্গলবার দিল্লিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের সঙ্গে রাজ্যের স্বরাষ্ট্র দফতরের প্রতিনিধিদের বৈঠক হওয়ার কথা। সেখানেও পাহাড় অগ্রাধিকারের তালিকায় রয়েছে। এই দিনই দিল্লিতে মোর্চার ডাকা সর্বদল কমিটির বৈঠকও রয়েছে। সেই কমিটির প্রতিনিধিরাও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের মনোভাব বোঝার চেষ্টা করছেন। কমিটির একাধিক সদস্য জানান, রাজ্যকে বাদ দিয়ে কেন্দ্র একক ভাবে কখনওই পাহাড় নিয়ে আলোচনা করতে পারবে না। তাই কৌশলগত কারণেই গুরুঙ্গ মুখ্যমন্ত্রীকে পাহাড়ে যাওয়ার অনুরোধ জানিয়ে রাখলেন।
সহ প্রতিবেদন: প্রতিভা গিরি
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy