Advertisement
E-Paper

অবস্থা যা, কেন্দ্রীয় বাহিনী ছাড়া সুষ্ঠু ভোট অসম্ভব

আসন্ন পুর-নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি যে পর্যায়ে পৌঁছেছে, তা দেখে রাজ্য নির্বাচন কমিশন উদ্বিগ্ন। রাজ্য সরকারকে তারা জানিয়ে দিল, এই অবস্থায় পর্যাপ্ত কেন্দ্রীয় বাহিনী না-মিললে অবাধে ভোট করা কোনও মতেই সম্ভব নয়। মুখ্যসচিব সঞ্জয় মিত্রকে এই মর্মে লেখা রাজ্য নির্বাচন কমিশনার সুশান্তরঞ্জন উপাধ্যায়ের চিঠিটি সোমবারই নবান্নে পৌঁছেছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৭ এপ্রিল ২০১৫ ০৩:১১

আসন্ন পুর-নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি যে পর্যায়ে পৌঁছেছে, তা দেখে রাজ্য নির্বাচন কমিশন উদ্বিগ্ন। রাজ্য সরকারকে তারা জানিয়ে দিল, এই অবস্থায় পর্যাপ্ত কেন্দ্রীয় বাহিনী না-মিললে অবাধে ভোট করা কোনও মতেই সম্ভব নয়।

মুখ্যসচিব সঞ্জয় মিত্রকে এই মর্মে লেখা রাজ্য নির্বাচন কমিশনার সুশান্তরঞ্জন উপাধ্যায়ের চিঠিটি সোমবারই নবান্নে পৌঁছেছে। পুরভোটে কেন্দ্রীয় বাহিনী প্রসঙ্গে এ দিন রাজ্য প্রশাসনের তরফে অবশ্য জানানো হয়, বাহিনী চেয়ে দিন দশেক আগে দিল্লিতে চিঠি পাঠানো হয়েছে, যার কোনও উত্তর এখনও আসেনি।

ফলে পুরভোটের আগে কেন্দ্রীয় বাহিনী আদৌ পাওয়া যাবে কি না, গেলেও কত সংখ্যায়, স্বরাষ্ট্র দফতরের কর্তারা তা জানাতে পারেননি। ‘‘কলকাতায় ১৮ এপ্রিল ভোট। শান্তি-শৃঙ্খলার স্বার্থে ভোটের অন্তত দশ দিন আগে কেন্দ্রীয় বাহিনী নামানো দরকার। কিন্তু এখনও বাহিনী সম্পর্কে আমরা অন্ধকারে।’’— মন্তব্য এক আধিকারিকের। কমিশন যে নতুন করে চিঠি দিল, তা নিয়ে প্রশাসন কী ভাবছে? নবান্নের এক কর্তা বলেন, ‘‘কমিশনের ওই চিঠি উদ্ধৃত করে দিল্লিকে আবার বার্তা পাঠানো হবে। তবে একান্তই কেন্দ্রীয় বাহিনী না-এলে রাজ্যের পুলিশ দিয়েই ভোট হবে।’’

নবান্নের এই অংশ মনে করছে, আইন-শৃঙ্খলার এমন কোনও অবনতি ঘটেনি যে, এখানকার পুলিশ দিয়ে ভোট করা যাবে না। অন্য দিকে কমিশনের স্পষ্ট পর্যবেক্ষণ, পুরভোটের প্রচার বা দেওয়াল লিখন নিয়ে বিরোধীরা এখনই যে হারে অভিযোগ তুলছে, তাতে ভোটের সময় কেন্দ্রীয় বাহিনী না-থাকলে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া অসম্ভব হয়ে উঠবে।

এবং সেই যুক্তিতেই রাজ্যের কাছে দেড়শো কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী চাওয়া। এ দিন সুশান্তরঞ্জনবাবুর কথায়, ‘‘বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের তরফে যত অভিযোগ জমা পড়ছে, তাতে ওই পরিমাণ কেন্দ্রীয় বাহিনী না-মিললে পুরভোট করা সম্ভব নয়।’’ বাহিনী যদি পাওয়া না-ই যায়?

নির্বাচন কমিশনারের জবাব, ‘‘আগে দেখি, রাজ্য সরকার কী জানায়। তার পরে বলব।’’

বস্তুত এই পুরভোটের আগে শাসকদল যে ভাবে সন্ত্রাস সৃষ্টি করে বিরোধী-প্রচারে বাধা দিচ্ছে, বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসুর মতে, তা অভূতপূর্ব। এ দিন কলকাতার এক অনুষ্ঠানে বিমানবাবু প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী সিদ্ধার্থশঙ্কর রায়ের আমলের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, ‘‘তখন বামেরা সভা করার অনুমতি চাইলে দেওয়া হতো না। তবে কংগ্রেসকেও সেখানে সভা করতে দেওয়া হতো না। এখন যা চলছে, সিদ্ধার্থ রায় বেঁচে থাকলে তিনিও লজ্জা পেতেন।’’ কেন, তা ব্যাখ্যা করে বিমানবাবুর মন্তব্য, ‘‘এখন কোথাও বামেদের সভা করতে না-দেওয়ার পর দিনই সেখানে তৃণমূল সভা করে!’’

সন্ত্রাসের নালিশে বিজেপিও শাসকদলকে বিঁধেছে। সন্ত্রাসের উদাহরণ দিয়ে বিজেপি’র রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহ এ দিন বলেন, ‘‘বাঁশবেড়িয়ার ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপি প্রার্থী বিশ্বজিৎ দাসের বাড়িতে ভাঙচুর করে তাঁকে সপরিবার ঘরছাড়া করা হয়েছে। এমনকী, তাঁর আত্মীয়দের বাড়ি বাড়ি গিয়ে খোঁজ নিচ্ছে দুষ্কৃতীরা! এসপি-ডিএম-কে জানিয়েও লাভ হয়নি।’’ কংগ্রেসের অভিযোগ, পুরভোটের প্রচারে নেমে তারাও আক্রান্ত। কলকাতা পুরসভার ৬১ নম্বর ওয়ার্ডের কংগ্রেস প্রার্থী শেখ সিরাজুদ্দিন বলেন, ‘‘বেডফোর্ড লেনে ব্যানার লাগাতে গেলে তৃণমূল কাউন্সিলর মন‌্জর ইকবালের অনুগামীরা বাধা দিয়েছে। গুলি করার হুমকিও দেয়।’’ যদিও অভিযোগ উড়িয়ে ইকবাল বলেছেন, ‘‘আমার দলের ছেলেরা কিছু করেনি। ওরা পাড়ার লোক।’’

ইকবালের মতো তাঁর দলের শীর্ষ নেতৃত্বও সন্ত্রাসের অভিযোগ ফুৎকারে ওড়াচ্ছেন। ‘‘এগুলো আবার সন্ত্রাস নাকি! পশ্চিমবঙ্গের মানুষ নন্দীগ্রাম-নেতাইয়ে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস দেখেছে। এগুলো রাজনৈতিক গণ্ডগোল।’’— মন্তব্য তৃণমূল মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের। তাঁর পাল্টা কটাক্ষ, ‘‘বিরোধীরা সংবাদমাধ্যমকে ব্যবহার করে এই সব অভিযোগ তুলে বেঁচে থাকতে চাইছে।’’

State election Commission municipal election trinamool tmc cpm BJP congress Mamata Bandopadhyay
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy