নিয়ম-ভেঙে: নির্মাণের জন্য দ্বারকেশ্বর থেকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে বালি। নিজস্ব চিত্র
যন্ত্র দিয়ে যাতে নদ-নদী থেকে বালি তোলা না হয়, তা নিয়ে কড়া অবস্থান নিয়েছে বাঁকুড়া জেলা প্রশাসন। তাতে কাজও দিয়েছে। কিন্তু প্রশাসনের নির্দেশ অমান্য করে নদীর পাড়ের কাছ থেকেই বালি তুলে সরকারি প্রকল্পের নির্মাণ কাজ চলল বিষ্ণুপুর ব্লকের দ্বারিকা গোঁসাইপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের গোপালপুর গ্রামে। এতে তাজ্জব স্থানীয় বাসিন্দারা।
বৃহস্পতিবার বিষ্ণুপুর মহকুমাশাসকের দফতরে বিষ্ণুপুর, কোতুলপুর এবং ওন্দার প্রশাসনিক আধিকারিক ও জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে বসে বাঁকুড়ার জেলাশাসক মৌমিতা গোদারা বসু দ্বারকেশ্বর নদ থেকে বালি তোলা নিয়ে অনিয়ম বন্ধের কড়া নির্দেশ দেন। বেনিয়ম দেখলে কড়া শাস্তির কথাও বলা হয়েছে।
কিন্তু শুক্রবার সকালে গোপালপুর গ্রামে দ্বারকেশ্বর নদ ঘেঁষা জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের জল সরবহারের প্রকল্পের নির্মীয়মাণ অফিস ঘর নদীর গা থেকে বালি তুলে তৈরি হতে দেখা গেল। ২৫–৩০ জন শ্রমিক কোদাল-বেলচা নিয়ে নদের পাড় থেকে বালি কেটে বিরাট গর্ত করে বালি তুলে নিয়ে যাচ্ছেন। অথচ প্রশাসন সূত্রে খবর, বিষ্ণুপুরের ওই বৈঠকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, নদের পাড়ের ২০০ ফুট দূর থেকে নিয়ম মতো রাজস্ব দিয়ে বালি তুলতে হবে। তাই গোপালপুরে বালি তোলায় রাজস্ব যেমন ফাঁকি দেওয়া হচ্ছে, তেমনই নদের পাড়ও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বলে বাসিন্দাদের দাবি।
গোপালপুর গ্রামের মিলন লোহার, বাউল গোপ, পরেশ লোহার বলেন, ‘‘জেলাশাসকের কড়া পদক্ষেপে নদে দেখছি যন্ত্র নামিয়ে বালি তোলা বন্ধ হয়েছে। কিন্তু সরকারি অফিস তৈরির জন্য পাড়ের বালি কাটা কী করে চলছে? প্রশাসনের আধিকারিকদের নজর এড়িয়ে দিনের পর দিন এ সব চলছে কী ভাবে?’’ প্রকল্পের দ্বায়িত্বে থাকা ঠিকা সংস্থার সাইট ইনচার্জ টোটন চক্রবর্তী স্বীকার করেন, ‘‘খুব ভুল হয়ে গিয়েছে। এরপর থেকে বালি কিনেই আমরা কাজ করব।’’
মহকুমা ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিক (বিষ্ণুপুর) কিঙ্করনাথ চট্টোপাধ্যায় অবশ্য এ দিন দাবি করেছেন, ‘‘গোপালপুরে কী হচ্ছে খবর পাইনি। খোঁজ নিয়ে দেখছি।’’ বিডিও (বিষ্ণুপুর) জয়তি চক্রবর্তী জানান, সরকারি দফতরের একটা কাজ যদি এ ভাবে হয়, তাহলে জনগণের কাছে ভুল বার্তা যায়। তিনি পদক্ষেপ করবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন। বিষ্ণুপুরের জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের (জল সরবরাহ) সহকারী বাস্তুকার অরিজিৎ আচার্য বলেন, ‘‘এ ভাবে যদি কাজ হয়, তা হলে খুব ভুল হচ্ছে। বালি কিনেই কাজ করার নিয়ম। আমি ঠিকা সংস্থার সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনে তদন্ত করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy