দেশ জুড়ে নানা কুলীন শিক্ষাসদনে ছাত্রী-গবেষকদের যৌন হেনস্থার অভিযোগ তুলে বরেণ্য অধ্যাপকদের নামের তালিকা প্রকাশ হচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। ‘নেম অ্যান্ড শেম’-এর এই বাজারেই ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চ (আইসার)-এর কলকাতা ক্যাম্পাস উত্তাল এক অধ্যাপকের বিরুদ্ধে ওঠা যৌন নির্যাতনের অভিযোগ নিয়ে।
উদ্ভিদ জীববিদ্যার মুখ্য গবেষক প্রকাশ পাণ্ডের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগ তুলেছেন তাঁরই বিভাগের এক গবেষক ছাত্রী। গত সেপ্টেম্বরে তিনি লিখিত ভাবে যৌন হেনস্থার কথা জানান। ‘তদন্ত কমিটি’ গড়া হয়। সবে রিপোর্ট জমা দিয়েছে ওই কমিটি। ওই রিপোর্ট প্রকাশের বিরুদ্ধেই গিয়েছে বলে আইসার সূত্রের খবর। তাঁকে ছুটিতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।
কর্তৃপক্ষের কাছে পিএইচডি-র তৃতীয় বর্ষের ছাত্রীটি জানিয়েছেন, ৪ সেপ্টেম্বর রাত ১১টা নাগাদ প্রকাশ তাঁকে ল্যাবে ডাকেন ও নাচতে বলেন। বলেন, পোশাক খুলে ফেলতে। তাঁর হাত ধরে কাছে টানার চেষ্টাও করেন। পালিয়ে বাঁচেন তরুণীটি।
আইসার কলকাতার ক্যাম্পাসটি কল্যাণীতে। এখানে বিদেশ থেকেও অনেকে গবেষণা করতে আসেন। কিন্তু এটাই প্রথম নয়। সূত্রের খবর, প্রকাশ পাণ্ডের বিরুদ্ধে আগেও এমন অভিযোগ উঠেছে। কিন্তু আগে কেউ লিখিত অভিযোগ জানাননি কেন?
উদ্ভিদ জীববিদ্যার ছাত্রছাত্রী ও গবেষকদের একটা বড় অংশের মতে, এই নীরবতার একমাত্র কারণ ভীতি। তাঁদের অভিযোগ, প্রকাশ নিজেকে ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ‘ডন’ বলে দাবি করতেন। কেরিয়ার নষ্ট হওয়ার ভয়ে তাঁর বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুলত না।
সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ‘পিটিশন’ দিয়ে একই অভিযোগ করেছেন উদ্ভিদ জীববিদ্যা বিভাগের গবেষক সুস্নাত কর্মকারও। কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী প্রকাশ জাভড়েকর, নারী ও শিশুকল্যাণ মন্ত্রী মানেকা গাঁধী এবং আইসার অধিকর্তা সৌরভ পালকে পাঠানোর জন্য ওই পিটিশনে স্বাক্ষর সংগ্রহ করা হচ্ছে।
ছাত্রছাত্রীদের একাংশের দাবি, এই লিখিত অভিযোগটিও চেপে দেওয়ার চেষ্টা হয়। তদন্ত কমিটির এক সদস্য, প্রকাশের বিভাগেরই অধ্যাপক জয়শ্রী দাসশর্মা ছাত্রীটিকে অভিযোগ তুলে নিয়ে আইসার ছেড়ে চলে যেতে বলেন। জয়শ্রী অবশ্য দাবি করছেন, ‘‘তদন্ত কমিটির নিয়ম অনুসারে প্রথমে আপসে মীমাংসার কথাই বলা হয়। আমি সেটাই করেছিলাম।’’
সদ্য আইসারে অধিকর্তা হয়ে এসেছেন সৌরভ পাল। তিনি বলেন, ‘‘ওই অধ্যাপককে পদে রেখে তদন্ত সম্ভব নয় বলে ছুটিতে পাঠানো হয়েছে। তদন্ত কমিটির রিপোর্টও জমা পড়েছে।” ফোনে যোগাযোগ করা হলে প্রকাশ বলেন, “আমি এখনই কিছু বলব না। পরে ফোন করে সব জানাব।” সেই ফোন আর আসেনি। শুক্রবার রাত পর্যন্ত বার বার চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা যায়নি তাঁর সঙ্গে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy