Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

কমিটির ‘কোটা’ রেখে কংগ্রেসকে বার্তা মমতার

বিধানসভায় এ বার কমিটি গঠনের সময়ে তাদের প্রাপ্য চেয়ারম্যানের সংখ্যা কমিয়ে দেওয়ার চেষ্টা শুরু হয়েছিল। জানতে পেরে প্রথমে আপত্তি তোলেন কংগ্রেসের পরিষদীয় নেতৃত্ব। শেষ পর্যন্ত মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে কংগ্রেস তাদের ভাগের কমিটির সংখ্যা ধরে রাখতে পেরেছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ অগস্ট ২০১৮ ০৩:৫২
Share: Save:

আপাতদৃষ্টিতে সামান্য কয়েকটি কমিটি। কিন্তু প্রধান বিরোধী দলের হাতে বিধানসভার কমিটি রেখে দিয়ে এক ঢিলে তিন পাখি মারলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়! বর্তমান জাতীয় রাজনীতির প্রেক্ষিতে যা তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে রাজনৈতিক শিবিরের একাংশ।

সাম্প্রতিক কালে দফায় দফায় ১৭ জন বিধায়ক কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে নাম লিখিয়েছেন। কাগজে-কলমে তাঁরা অবশ্য এখনও কংগ্রেসেরই বিধায়ক। কিন্তু কংগ্রেসে এই ভাঙনের ধাক্কা মাথায় রেখেই বিধানসভায় এ বার কমিটি গঠনের সময়ে তাদের প্রাপ্য চেয়ারম্যানের সংখ্যা কমিয়ে দেওয়ার চেষ্টা শুরু হয়েছিল। জানতে পেরে প্রথমে আপত্তি তোলেন কংগ্রেসের পরিষদীয় নেতৃত্ব। শেষ পর্যন্ত মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে কংগ্রেস তাদের ভাগের কমিটির সংখ্যা ধরে রাখতে পেরেছে। গুরুত্বপূর্ণ পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির (পিএসি) চেয়ারম্যানের পদও দেওয়া হয়েছে কংগ্রেসের সুপারিশ করা প্রার্থী সুখবিলাস বর্মাকে।

বিধানসভার মধ্যে কংগ্রেসের সঙ্গে টানাপড়েন কমাতে মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে একই সঙ্গে তিনটি বার্তা দেওয়া গিয়েছে বলে রাজনৈতিক শিবিরের একাংশের মত। প্রথমত, বিধানসভায় তাদের মর্যাদা দেওয়া হয় না বলে যে অভিযোগ বিরোধী শিবির থেকে ওঠে, তাতে খানিকটা প্রলেপ দেওয়া দিয়েছে। দ্বিতীয়ত, কংগ্রেসের দাবিদাওয়ার বেশ কিছু মেনে নিয়ে দলের একাংশের মধ্যে লোকসভা ভোটের আগে ‘তৃণমূলপন্থী’ মনোভাব তৈরি করা গিয়েছে। আর তৃতীয়ত, বিধানসভার ভিতরে ও বাইরে কয়েক বছর ধরেই সিপিএম এবং কংগ্রেস বোঝাপড়া রেখে চলে। কংগ্রেসের প্রতি ‘নরম’ মনোভাব দেখিয়ে তাদের সম্পর্কে বাম শিবিরে সংশয়ের বাতাবরণও তৈরি করতে পারছেন তৃণমূল নেতৃত্ব।

বামফ্রন্টের বিধায়ক-সংখ্যা এখন ৩০। তাদের হাতে আগের মতো এ বারও হাউস ও স্থায়ী কমিটি মিলিয়ে ৬টির চেয়ারম্যানের পদ গিয়েছে। কংগ্রেসের বিধায়ক কার্যক্ষেত্রে ২৫ জন। তাদের হাতেও রয়েছে ৬টি কমিটির চেয়ারম্যান পদ। তবে এখানে এক প্রস্ত কৌশলের খেলাও হয়েছে! বিরোধী দলের মুখ্য সচেতক মনোজ চক্রবর্তীর যুক্তি, আগে তাঁদের হাতে ৭টি কমিটি ছিল। এ বারও তাঁরা ৭ জন প্রস্তাবিত চেয়ারম্যানের নাম জমা দিয়েছিলেন। কিন্তু ‘ভদ্রলোকের চুক্তি’ খেলাপ করে ফিরোজা বেগমকে বাদ দিয়ে ৬ জনকে চেয়ারম্যান করা হয়েছে! সরকারি মুখ্য সচেতক নির্মল ঘোষ, উপ-মুখ্য সচতেক তাপস রায়দের পাল্টা যুক্তি, কংগ্রেসকে আসলে ৮টি কমিটির চেয়ারম্যান পদ দেওয়া হয়েছে। ওই বাড়তি দু’জন— ‘দলত্যাগী’ আবু তাহের খান ও সাবিনা ইয়াসমিনকে নিজেদের লোক মানতে নারাজ মনোজবাবুরা। আর খাতায়-কলমের পরিচয়ে তাহেরদের ‘কংগ্রেস’ বলেই দেখাচ্ছে তৃণমূল!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE