সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে চলতি মাসেই বাগডোগরা, দুর্গাপুরকে জুড়ে কোচবিহার-কলকাতা বিমান পরিষেবা চালু হতে চলেছে। প্রশাসনিক সূত্রের খবর, কোচবিহারের বিমান বন্দরে ‘এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল’ বা এটিসিকে ঢেলে সাজানো হয়েছে। দমকল, অ্যাম্বুল্যান্স-সহ অন্যান্য পরিকাঠামোর বন্দোবস্ত করার কাজ চলছে। কোচবিহার বিমান বন্দর থেকে উড়ানের জ্বালানি কিনলে, রাজ্য সরকার আগামী পাঁচ বছর বিক্রয় কর নেবে না বলেও ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
১৯ আসনের বিমানটি আজ, মঙ্গলবার ১২ মে ওই পরিষেবা চালু হবে বলে ঠিক হয়েছিল। পরে তা এক সপ্তাহ পিছিয়ে গিয়েছে। আগামী সপ্তাহে ১৮ মে ওই পরিষেবা চালুর পরিবর্তিত লক্ষ্যমাত্রা মাথায় রেখে প্রস্তুতি হচ্ছে। নতুন করে কোনও সমস্যা দেখা না দিলে ওই দিন থেকে প্রায় চার বছর ধরে বন্ধ থাকা কোচবিহারে ফের উড়ান চালু হতে পারে বলে আশা করছেন জেলা প্রশাসনের কর্তারা। কোচবিহারের জেলাশাসক পি উল্গানাথন বলেন, “উড়ান চালুর জন্য কোচবিহার বিমান বন্দরের সমস্ত পরিকাঠামো পুরোপুরি তৈরি রয়েছে।” এয়ারপোর্ট অথারিটি অব ইন্ডিয়ার (এএআই) বাগডোগরা বিমানবন্দরের অধিকর্তা রাকেশ সহায় বলেন, ‘‘নতুন বিমানটি চালু হলে উত্তরবঙ্গের সঙ্গে দক্ষিণবঙ্গের আরও যোগাযোগ বাড়বে। আপাতত ১৮ মে দিনক্ষণ ঠিক করা রয়েছে।’’
এএআই সূত্রের খবর, পিনাকল এয়ার নামে একটি বিমান সংস্থা কলকাতা, দুর্গাপুর, বাগডোগরা হয়ে কোচবিহার রুটে ছোট বিমান চালাবে। মাথাপিছু ভাড়া পড়বে প্রায় ৬ হাজার টাকা। গত কয়েক মাসে একাধিক বেসরকারি ছোট বিমান সফল ভাবে কোচবিহার বিমানবন্দরে ওঠানামা করেছে। কোচবিহারের বাসিন্দা তথা রাজ্যের পূর্ত দফতরের পরিষদীয় সচিব রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীর আন্তরিক উদ্যোগের জন্যই কোচবিহার বিমানবন্দর আবার চালু হতে চলেছে। আশা করছি এ মাসেই বিমান পরিষেবা চালু হবে।’’
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজ্যে সরকার বদলের পর ২০১১ সালে নর্থ ইস্ট শাটল এক দশকেরও বেশি বন্ধ থাকা কোচবিহার-কলকাতা ১৮ আসনের উড়ান চালু করে। মাথাপিছু ভাড়া ধার্য করা হয় ৫ হাজার টাকা। মূলত অনিয়মিত পরিষেবার কারণে এক মাসের মধ্যে তা বন্ধ হয়ে যায়। তার পরেই বেশি আসনের উড়ান চালালে ভাড়া কম পড়বে বলে বিভিন্ন মহলে দাবি ওঠায় ওই বিমান বন্দরের ১০৬৯ মিটার রানওয়ে আরও ৪৬০ মিটার বাড়ানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়। রাজ্য সরকার এ জন্য ৪৫ কোটি টাকা অনুমোদন করে। সম্প্রতি এ জন্য বিমান বন্দরের চার দিকে গাছ, উঁচু বাড়ির তালিকা তৈরিতে সমীক্ষা হয়েছে। কিন্তু ওই কাজ সম্পূর্ণ হতে আরও অন্তত সাড়ে তিন বছর সময় লাগবে বলে এয়ারপোর্ট অথরিটি কর্তারা জানিয়ে দেন। তার জেরেই ফের ছোট বিমান চালুর দাবি ওঠে। শেষ পর্যন্ত অন্ডাল, বাগডোগরার সঙ্গে কোচবিহারকে এক সূত্রে গাঁথতে ছোট বিমান চালানোর পরিকল্পনা চূড়ান্ত হয়।
ফের উড়ান চালু ঘিরে ওই আশার আলো দেখা দিলেও কোচবিহারের বাসিন্দাদের অনেকেই এখনই নিশ্চিত হতে পারছেন না। দিনহাটা মহকুমা ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক রানা গোস্বামী বলেন, “আগেও বিভিন্ন তারিখে উড়ান চালুর কথা শুনেছিলাম। তাই আনুষ্ঠানিক ঘোষণা করে পরিষেবা চালু না হওয়া পর্যন্ত নিশ্চিত হতে পারছি না।’’ কোচবিহার জেলা ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক সুব্রত সাহা বলেন, “একটি তারিখ আগে শুনেছিলাম। তবে উড়ান চালু নিয়ে এবার আমরা আশাবাদী।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy